চাঁপাইনবাবগঞ্জে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সুধী সমাবেশের আয়োজন করে জেলা পুলিশ। শনিবার (২৬ মার্চ) বিকেলে জেলার শহীদ সার্টু হলে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহীর উপ-মহাপুলিশ পরিদর্শক (ডিআইজি) মোহাম্মদ শাহজাহান। এসময় মঞ্চের একেবারে প্রথম সারিতে বসা ছিলেন জেলা কৃষক লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুস সামাদ বকুল।
Advertisement
পুলিশের ডিআইজির সভায় সামনের সারিতে স্বৈরাচারী সরকারের দোসর ও জেলা কৃষকলীগ সভাপতির বসা নিয়ে সামাজিক, রাজনৈতিক ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতাকর্মীদের মধ্যে সমালোচনা চলছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও বইছে সমালোচনার ঝড়।
সভায় যোগ দেওয়া কয়েকজন প্রবীণ বিএনপি নেতা বলেন, পুলিশের কিছু কর্মকর্তা আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করছেন। তার নমুনা আইনশৃঙ্খলা সভায় আওয়ামী লীগের উপস্থিতি। ৫ আগস্ট হয়েছিল যে উদ্দেশ্যে, সেটা সফল হয়নি। এখনো আমাদের সামনে স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের দোসররা অপকর্ম করে বেড়াচ্ছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্যসচিব রফিকুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী নেতারা এখনো প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করছে না। শনিবারের সুধী সমাবেশে বিএনপির তেমন নেতাকর্মীদের দাওয়াত দেননি, অথচ আওয়ামী লীগের দোসরদের দাওয়াত দিয়েছেন। যে কর্মকর্তা দাওয়াত দিয়েছেন, তাদের খুঁজে বের করা দরকার। তাদের শাস্তির দাবি করছি।
Advertisement
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম বলেন, আমরা জেলা কৃষক লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুস সামাদ বকুলকে চিনি না এবং তাকে দাওয়াত দিইনি। এটি একটি সাধারণ সুধী সমাবেশ। তাই তিনি হয়ত এখানে চলে এসেছেন। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, তিনি জেলা কৃষক লীগের সভাপতি। এছাড়া তিনি ট্রাক মালিক সমিতির সভাপতি। তাই ট্রাক মালিক সমিতির সভাপতি হিসেবে হইতো তিনি এসেছিলেন।
সমাবেশে রাজশাহীর উপ-মহাপুলিশ পরিদর্শক (ডিআইজি) মোহাম্মদ শাহজাহান রাজনৈতিক নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘কেউ কেউ বলছেন চট করে ঢুকে পড়বে। এই যে চট করে ঢুকে পড়বে, উনার লোকজনকে কি আপনি বাদ দিতে পারবেন? আমাদের সমাজেই তারা আছে না? আপনার কাছেই তো ঘোরে। আপনিতো ধরেন না। সব সময় পুলিশকে গালি দিবেন, আপনি কিছুই করবেন না। আপনারা আসেন, আমরা একটা কম্বাইন্ড অপারেশন করবো।’
সমাবেশের উপস্থিত সুধীজনদের করা ২৮টি অভিযোগের উত্তর দেন ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য লতিফুর রহমান, বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা আহ্বায়ক আব্দুর রাহিম, সদস্য সচিব সাব্বির আহমেদ, মুখ্য সংগঠক মোত্তাসিন বিশ্বাসসহ বিভিন্ন পেশাজীবী ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
Advertisement
সোহান মাহমুদ/এফএ/এমএস