অর্থনীতি

কমিশনারের অবৈধ শেয়ার ব্যবসার অভিযোগের যে ব্যাখ্যা দিলো বিএসইসি

কমিশনারের অবৈধ শেয়ার ব্যবসার অভিযোগের যে ব্যাখ্যা দিলো বিএসইসি

কমিশনার মু. মোহসিন চৌধুরীর শেয়ার ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগ করে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে তাকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন হিসেবে উল্লেখ করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

Advertisement

বুধবার (১৪ মে) গণমাধ্যমে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে এমন তথ্য জানিয়েছে বিএসইসি। মু. মোহসিন চৌধুরীর শেয়ার ব্যবসার বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি বিস্তারিত ব্যাখ্যাও দেওয়া হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, গত ১১ মে দৈনিক যুগান্তরসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে বিএসইসির কমিশনার মু. মোহসিন চৌধুরীর শেয়ার ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগ করে সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে যা বাস্তবভিত্তিক নয়।

বিএসইসির চাকরিতে যোগদানের পর তিনি কোনো শেয়ার বা সিকিউরিটিজ ক্রয় করেননি বরং বিএসইসিতে যোগদানের আগের বিদ্যমান বিও অ্যাকাউন্টটি বন্ধে সম্ভাব্য সবধরনের উদ্যোগ নিয়েছেন এবং প্রচেষ্টা চালিয়েছেন।

Advertisement

এসময় বিও অ্যাকাউন্টে থাকা সব শেয়ার বিক্রয় করার নির্দেশনা তিনি সংশ্লিষ্ট ব্রোকারকে দিয়েছিলেন এবং বিক্রয় করা সম্ভব এমন সব শেয়ার যতদ্রুত সম্ভব বিক্রয় করে দেওয়া হয়েছিল, যা ছিল অ্যাকাউন্টটি বন্ধের উদ্যোগের অংশ।

কিন্তু ফ্লোরপ্রাইসের কারণে একটি নির্দিষ্ট কোম্পানির শেয়ার বিক্রয় সম্ভব হয়নি বিধায় বিও অ্যাকাউন্টটি শেয়ার শূন্য করা যায়নি এবং এ কারণেই সকল প্রচেষ্টা সত্ত্বেও বিও অ্যাকাউন্টটি বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। এর মাধ্যমে বিষয়টি স্পষ্ট যে, বিএসইসি’র চাকরিতে যোগদানের পর বিএসইসির কমিশনার মু. মোহসিন চৌধুরী শেয়ার ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হননি এবং এখনো যুক্ত নন।

এ বিষয়ে বিএসইসির বিস্তারিত ব্যাখ্যা ও বক্তব্যসংবাদ প্রতিবেদনগুলো বিএসইসির কমিশনার মু. মোহসিন চৌধুরী আইন লঙ্ঘন করে নিজ নামে শেয়ার ব্যবসা করছেন বলে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। বিএসইসির কমিশনার মু. মোহসিন চৌধুরী বিএসইসিতে যোগদানের আগেই ২০২১ সালে ব্যক্তিগত বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে ওই বিও অ্যাকাউন্টটি খুলেছিলেন।

বিএসইসির চাকরিতে যোগদানের পর তিনি ওই বিও অ্যাকাউন্টে কোনো শেয়ার বা সিকিউরিটিজ ক্রয় করেননি। গত ২০২৪ সালের জুন মাসে বিএসইসির চাকরিতে যোগদানের পরপরই তিনি ওই বিও অ্যাকাউন্টে থাকা সব শেয়ার বিক্রয় করার এবং ওই অ্যাকাউন্ট বন্ধ করার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্রোকারকে নির্দেশনা দিয়ে ছিলেন।

Advertisement

নির্দেশনা অনুযায়ী অপরাপর সব শেয়ার বিক্রয় করা হয়েছে। কিন্তু ফ্লোরপ্রাইস কার্যকর থাকার কারণে শুধু ‘বেক্সিমকো লিমিটেড’ -এর শেয়ারগুলো বিক্রি করা সম্ভব হয়নি এবং এ কারণে সিডিবিএল বাই-ল অনুযায়ী ওই বিও অ্যাকাউন্টটি বন্ধ করা সম্ভব হয়নি মর্মে সংশ্লিষ্ট ব্রোকার তাকে অবহিত করেছে। বর্তমানে ওই বিও অ্যাকাউন্টে ‘বেক্সিমকো লিমিটেডের মোট ২২৩১টি শেয়ার রয়েছে যার বর্তমান বাজারমূল্য ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ টাকা।

চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে উল্লিখিত ‘জিরো ওয়ান লিমিটেড’ ব্রোকারেজ হাউজটির সব কার্যক্রমও বন্ধ হয়ে গেছে।

অতএব, বিএসইসির কমিশনার মু. মোহসিন চৌধুরী শেয়ার ব্যবসার সঙ্গে জড়িত উল্লিখিত দাবিটি সত্য নয় এবং প্রকাশিত সংবাদ বাস্তবভিত্তিক নয় বরং বিভ্রান্তিকর। সর্বোপরি প্রতিবেদনগুলোর যেসব অভিযোগ ও সন্দেহপূর্ণ বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে তা সম্পূর্ণভাবে মনগড়া।

এ ধরনের বিভ্রান্তিকর-অসত্য তথ্য ও আপত্তিকর বক্তব্য সম্বলিত সংবাদের মাধ্যমে বিএসইসির কমিশনার মু. মোহসিন চৌধুরী সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন হয়েছেন। শেয়ার বাজারের স্থিতিশীলতার স্বার্থে সংবাদমাধ্যমগুলোকে শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ত্রুটিপূর্ণ, বিভ্রান্তিকর ও একপেশে তথ্য সম্বলিত সংবাদ প্রকাশ করে না বিএসইসি আশা।

এমএএস/এমএএইচ/জিকেএস