খেলাধুলা

লুসাইল স্টেডিয়াম, মেসিদের ড্রেসিংরুম ঘুরে স্বপ্নপূরণ আফঈদা-রিপার

লুসাইল স্টেডিয়াম, মেসিদের ড্রেসিংরুম ঘুরে স্বপ্নপূরণ আফঈদা-রিপার

ক্রীড়াবিদ হিসেবে দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে গেলে বিদেশে কেমন সম্মান পাওয়া যায় সেই অভিজ্ঞতা আছে চার নারী ক্রীড়াবিদ- ফুটবলার আফঈদা খন্দকার প্রান্তি, শাহেদা আক্তার রিপা এবং ক্রিকেটার শারমীন সুলতানা ও সুমাইয়া আক্তারের। তবে দেশের সরকার প্রধানের সঙ্গে বিদেশে যাওয়ার অভিজ্ঞতা প্রথমবারই হলো তাদের।

Advertisement

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস তার সফরসঙ্গী হিসেবে এই চার নারী ক্রীড়াবিদকে কাতারে নিয়েছিলেন। এটা দেশের ক্রীড়াবিদদের জন্য অন্যরকম এক ঘটনা।

কাতার থেকে দেশে ফেরার পর আজ শুক্রবার অভিজ্ঞতা বর্ণনার জন্য চার ক্রীড়াবিদকে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে গণমাধ্যমের সামনে এনেছেন প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার। এ সময় চার ক্রীড়াবিদ নিজেদের অভিজ্ঞতা জানান এবং সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নেরও উত্তর দেন।

বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক আফঈদা খন্দকার প্রান্তি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা (ড. ইউনূস) স্যারের সঙ্গে আমরা এই সফরে যেতে পেরে অনেক খুশি হয়েছি। এটা আমাদের জীবনের বড় একটা অর্জন। আমি কখনো ভুলবো না এই কয়দিনের কথা। পুরো দেশের ক্রীড়াঙ্গন থেকে আমরা চারজনের যাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে। আমাদের দেশে ফুটবল ও ক্রিকেট বাদে অন্য খেলাগুলো সেভাবে সুযোগ-সুবিধা পায় না। আমরা এই সব বিষয় নিয়েও কথা বলেছি। তারা আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন। কাতারে যারা যায় তাদের নাকি সেভাবে সম্মান করা হয় না। এটা আমরা শুনেছি। তবে আমরা যেখানেই গেছি অনেক সম্মান পেয়েছি। এটা আমাদের জন্য অনেক বড় পাওয়া।’

Advertisement

লুসাইল স্টেডিয়ামে যাওয়ার অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে আফঈদা খন্দকার প্রান্তি বলেন, ‘অনেক ব্যস্তসূচির মধ্যেও তারা আমাদের লুসাইল স্টেডিয়ামে নেওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন। যখন শুনলাম যেতে পারবো, তখন থেকেই আমার মধ্যে ভালো লাগা কাজ করছিল। সেখানে যখন গেলাম, তখন চোখের সামনে যেন ভাসছিল এই মাঠে আর্জেন্টিনা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর মেসিরা ট্রফি নিয়ে উল্লাস করেছেন। এটা আমাদের কাছে স্বপ্নের মতোই লেগেছিল। আমরা প্রথমেই ড্রেসিংরুমে যাই। তখন মনে পড়েছিল এই জায়গায়ই মেসি ট্রফি নিয়ে আনন্দ করেছিলেন। আমরা স্টেডিয়াম অনেক ঘুরে দেখেছি। নিচ থেকে ওপরে। যেখানে রাজ পরিবারের লোকজন বসেন সেখানে সাধারণত কাউকে যেতে দেন না। তবে আমাদের ওই জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ড্রেসিংরুমের ভেতরে যে আলাদা ওয়ার্মআপের জায়গা আছে সেটা তো জানতাম না। ওখানে গিয়ে সেটা দেখলাম। সবগুলোই আমাদের দারুণ ভালো লেগেছে।’

ক্রিকেটার শারমীন সুলতানা বলেন, ‘এই প্রথম সরকার প্রধানের সাথে গেলাম। আমরা সেখানে গিয়ে প্রথম দিন সাক্ষাৎ করেছি কাতার ফাউন্ডেশনের প্রধান শেখ হিন্দ বিনতের সাথে। এই ফাউন্ডেশন মূলত কাজ করে নারীদের নিয়ে। ওখানে গিয়ে আমরা আরো দুটি স্টেডিয়াম পরিদর্শন করেছি। এ ছাড়া স্পায়ার একাডেমিতে গিয়ে একটা ইনডোর ভিজিট করেছি। যেখানে অনেক খেলাধুলার সুযোগ-সুবিধা আছে। বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনালের লুসাইল স্টেডিয়ামেও আমাদের নেওয়া হয়েছিল। শেখ হিন্দের সাথে যখন দেখা হয়েছে তখন তার কাছে স্পোর্টস ডেভেলপমেন্ট কীভাবে করা হয় সেটা জানার চেষ্টা করছি।’

ফুটবলার শাহেদা আক্তার রিপা লুসাইল স্টেডিয়ামের ড্রেসিংরুমে গিয়ে আবেক আপ্লুত হওয়ার কথা বলেছেন।

রিপা বলেন, ‘কাতার ফাউন্ডেশনের সিইও এর সাথে দেখা করে তার কাছে আমাদের সব কথা খুলে বলেছি। আমাদের কী কী সুযোগ-সুবিধা লাগবে তাও জানিয়েছি তাকে। খেলোয়াড়রা যখন ইনজুরিতে আক্রান্ত হয় তখন আমাদের দেশে সেটা সারিয়ে তুলতে তেমন সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায় না। তারা বলেছেন, ওখানে রোনালদো-নেইমারদের ইনজুরি নিয়ে কাজ করেন। এ বিষয়ে তারা কাজ করবেন বলে আমাদের আশ্বস্ত করেছেন।’

Advertisement

‘ফরাসি ক্লাব পিএসজির (প্যারিস সেইন্ট জার্মেই) ট্রেনিং ক্লাব আছে। সেখানেও আমরা গিয়েছিলাম। কাতারের নারী জাতীয় দল নেই। সেখানে আমার বয়সভিত্তিক মেয়েদের নিয়ে ১০ মিনিটের মতো খেলেছি। আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্সের মধ্যে হওয়া বিশ্বকাপের ফাইনালের স্টেডিয়াম লুসাইলে গিয়ে ড্রেসিংরুমেও কিছ সময় কাটিয়েছি’- যোগ করেন রিপা।

আরআই/এমএইচ/এএসএম