এক বছর বন্ধ থাকার পর ফের খুলছে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের শ্রমবাজার। প্রথম দফায় শিগগির ৭৯২৬ জন শ্রমিক মালয়েশিয়ায় যাচ্ছেন। দেশটিতে সফররত প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সেখানকার শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর বৃহস্পতিবার (১৫ মে) এক ফেসবুক বার্তায় এ তথ্য জানান।
Advertisement
উপদেষ্টা তার ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ভিডিও বার্তায় বলেন, আমি গত দুদিন আগে মালয়েশিয়ায় এসেছি। এর মধ্যে মালয়েশিয়ার তিনজন মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও মানবসম্পদমন্ত্রীর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক হয়েছে। এখানে কিছু অগ্রবর্তী সাধিত হয়েছে, সেটা আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করতে চাচ্ছি।
উপদেষ্টা বলেন, গত বছর মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম বাংলাদেশ গিয়েছিলেন, তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ব্যক্তিগত বন্ধু। তিনি তখন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন গত বছর শেষ মুহূর্তে যে শ্রমিকরা মালয়েশিয়ায় আসতে পারেননি, তিনি তাদের মালয়েশিয়ায় আসার সুযোগ করে দেবেন। তাদের সংখ্যা ছিল ১৭ হাজারের মতো।
এটার ভিত্তিতে আমরা অনেক আলোচনা করেছি। তারা (মালয়েশিয়া) বলেছেন, তারা ব্যাচ ওয়াইজ নেবেন। প্রথম ব্যাচ হিসেবে ৭ হাজার ৯২৬ জনের একটি তালিকা তারা চূড়ান্ত করেছেন। খুব অল্প সময়ের মধ্যে তাদের মালয়েশিয়ায় কাজ করার সুযোগ দেওয়া যাবে, সেই প্রক্রিয়া তারা শুরু করেছেন।
Advertisement
আসিফ নজরুল বলেন, দ্বিতীয় যে সংবাদ, সেটি ভবিষ্যৎ কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে। আমরা বিভিন্ন সূত্রে জেনেছি- আগামী কয়েক মাসে মালয়েশিয়া এক থেকে দেড় লাখ বিদেশি শ্রমিক নিতে পারে। মালয়েশিয়ায় যিনি অন্তর্বর্তী মানবসম্পদমন্ত্রী রয়েছেন, তিনি আশ্বস্ত করেছেন লোক নেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। বাংলাদেশ থেকে সবচেয়ে বেশি লোক নেবেন তাদের সেই আশ্বাস আমরা পেয়েছি।
প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টা আরও বলেন, অনুরোধ করেছিলাম বাংলাদেশে যারা রিক্রুটিং এজেন্সি রয়েছেন, তাদের জন্য যাতে উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়, তারা সবাই যাতে লোক পাঠানোর সুযোগ নিতে পারে। আমরা তাদের বুঝিয়ে বলেছি, তারা বলেছেন এটি তারা বিবেচনা করবেন। তারা আমাদের অচিরেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবেন।
তিনি বলেন, আমাদের আরেকটি বড় অগ্রগতি যেটা হয়েছে, আমি মালয়েশিয়ার মন্ত্রীকে অনুরোধ করেছিলাম- আমাদের শ্রমিকরা মাল্টিপল ভিসা পায় না সিঙ্গেল এন্ট্রি পায়। অন্য দেশের শ্রমিকরা পায় মাল্টিপল এন্ট্রি। এটা নিয়ে বেশ কিছুক্ষণ কথা হয়েছে। তিনি আমাদের শুধু প্রতিশ্রুতি দেননি, যারা তার সঙ্গে ছিলেন তাদের এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
আমি বলেছি, আমাদের যে শ্রমিকরা মালয়েশিয়ায় অনিয়মিত হয়ে গেছেন। তাদের রেগুলারাইজ বা বৈধ করা যায় কি না। তারা বলেছেন মাঝে মাঝেই তারা এটা করেন। গত বছর এটা করেছেন। তবে যাদের ভিসার মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে, তাদের ক্ষেত্রে এটা করা সম্ভব হবে না বলেছেন। তখন আমি বলেছি, অনেক সময় মালিকের গাফিলতি বা ত্রুটির কারণে এটা হয়। এটা আলাদাভাবে বিবেচনা করা যায় কি না? তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এটা তারা বিবেচনা করবেন।
Advertisement
উপদেষ্টা বলেন, আমি বলেছি এখানে সিকিউরিটি গার্ড, কেয়ার গিভার, নার্স এসব পদসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষ জনবল নেওয়া যায় কি না। তারা আগ্রহ দেখিয়েছেন। এ ব্যাপারে আলোচনা অব্যাহত থাকবে। আমরা মোটামুটি আশাবাদী।
আসিফ নজরুল বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ব্যক্তিগতভাবে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার নিয়ে আমাদের নির্দেশনা দিচ্ছেন। বৈঠকে বসছেন। তার কথা মতোই আমরা কাজ করছি।
উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল গত মঙ্গলবার মালয়েশিয়া গেছে।
আরএমএম/আরএএস/এমআইএইচএস/জিকেএস