জাতীয়

ঈদ বোনাসের দাবিতে ১ জুন কর্মবিরতির ডাক দোকান কর্মচারীদের

ঈদ বোনাসের দাবিতে ১ জুন কর্মবিরতির ডাক দোকান কর্মচারীদের

সারাদেশে ৬০ লক্ষাধিক দোকান কর্মচারীর ঈদের আগে বোনাস দেওয়া না হলে ১ জুন দোকানপাট এবং শপিংমলে কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছে জাতীয় দোকান কর্মচারী ফেডারেশন (এনএসইএফ)। একই দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ঘেরাওয়ের কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

বৃহস্পতিবার (১৫ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। এতে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় দোকান কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি রফিকুল ইসলাম বাবুল। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক আমিরুল হক আমিন।

সংগঠনটির নেতারা বলেন, দেশব্যাপী দোকান, শপিংমল, চেইনশপ, ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, রিটেইলশপ, হোলসেল, ইলেকট্রিক দোকান, সেলুন, বিউটি পার্লার, ওষুধের দোকানসহ এই ১০ খাতে ৬০ লক্ষাধিক কর্মচারী কাজ করেন। এসব কর্মী প্রতিনিয়ত দেশের মানুষকে সেবাদান করে আসছেন এবং মানুষের জীবন সহজ এমনকি আনন্দময় করে যাচ্ছেন। কিন্তু সেই মানুষগুলোই জীবনের মৌলিক অধিকার তো দূরের কথা, আইনসঙ্গত অধিকার থেকেও বঞ্চিত।

জাতীয় দোকান কর্মচারী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আমিরুল হক আমিন বলেন, আগামী ঈদুল আজহা উপলক্ষে শ্রমিক কর্মচারীদের ঈদ বোনাস এখন আর মালিকদের ইচ্ছার বিষয় নয়, বরং ঈদ বোনাস এখন শ্রমিক কর্মচারীদের অধিকার। বছরে দুটি ঈদে সব খাতের শ্রমিক-কর্মচারীরা বোনাস পান। কিন্তু ব্যত্যয় ঘটে দেশের ৬০ লাখ দোকান কর্মচারীর ক্ষেত্রে।

Advertisement

তিনি আরও বলেন, দোকান কর্মচারীরা চাঁদরাত পর্যন্ত মানুষকে সেবা দেন, দোকান মালিকদের সেবা দিলেও তারা বোনাস পান না। সরকারি ছুটিসহ বিভিন্ন দিবসে কাজ করলেও কোনো ভাতা পান না, ছুটিও কাটাতে পারেন না। আগামী ৩১ মে’র মধ্যে ঈদ বোনাসের বিষয়ে সুস্পষ্ট পদক্ষেপ না নিলে দোকান কর্মচারীরা কর্মবিরতিতে যাবেন। এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে স্মারকলিপি পেশ করা হবে।

আরও পড়ুন নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দলের নাশকতার ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্ক পুলিশ  দুই উপদেষ্টার সাবেক এপিএস-পিওকে ডেকেছে দুদক 

লিখিত বক্তব্য তুলে ধরে আমিরুল হক আমিন বলেন, আইনে থাকলেও দেশের অধিকাংশ দোকান কর্মচারীকে নিয়োগপত্র দেওয়া হয় না। দোকান কর্মচারীদের কর্তৃপক্ষের সইযুক্ত কোনো পরিচয়পত্র নেই। আইনগতভাবে সপ্তাহে দেড় দিন ছুটি থাকলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে সপ্তাহে একদিনও ছুটি দেওয়া হয় না। দোকান কর্মচারীদের প্রায় সব ক্ষেত্রে ৮ ঘণ্টারর অধিক ১০, ১২ কখনো ১৪ ঘণ্টা কাজ করতে হয়। কিন্তু ৮ ঘণ্টার অতিরিক্ত কাজের জন্য ওভারটাইম দেওয়া হয় না। দেশের ৬০ লাখ দোকান কর্মচারীর জন্য এখন পর্যন্ত মজুরি বোর্ড নেই। পরবর্তী মাসের সাত কর্মদিবসের মধ্যে বেতন দেওয়ার আইনগত বিধান থাকলেও দোকান কর্মচারীদের ক্ষেত্রে এটা মানা হয় না।

জাতীয় দোকান কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি রফিকুল ইসলাম বাবুল বলেন, এখন আমাদের পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গেছে। বছরে দুটি ঈদ হয়, হিন্দুদের পূজা হয়। অথচ আমাদের বোনাস দেওয়া হয় না। আমরা আমাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে সবাই একত্রিত হয়েছি। ঢাকা নিউমার্কেট, নবাবপুর, বায়তুল মোকাররম, ইসলামপুরসহ বিভিন্ন এলাকার কর্মচারীরা এসেছেন। সরকারের কাছে আমাদের দাবিগুলো তুলে ধরছি। যদি বাস্তবায়ন না হয় তাহলে আমরা কর্মবিরতিসহ প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ঘেরাও করবো।

ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় নেতা দিদার হোসেন বলেন, দোকান কর্মচারীদের এই সংগ্রাম দীর্ঘদিনের। বিগত সরকারের আমলে বিভিন্ন সময় দাবি বাস্তবায়নের কথা বললেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। সংবাদ সম্মেলনে পরবর্তী কর্মসূচি জানানো হয়। তা হলো, ১৭ মে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির কাছে দাবিনামা পেশ, ১৮ থেকে ২০ মে ঢাকার সব মার্কেট এলাকায় দোকান কর্মচারীদের সভা-সমাবেশ, ২১ থেকে ২৫ মে সারাদেশে দোকান কর্মচারীদের সভা-সমাবেশ এবং মালিক সমিতির কাছে স্মারকলিপি পেশ, ২৩ মে ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন, ৩১ মে’র মধ্যে ঈদ বোনাসের বিষয়ে সুস্পষ্ট পদক্ষেপ না নিলে ১ জুন দোকান কর্মচারীরা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে স্মারকলিপি পেশ করবেন।

Advertisement

কেএসআর/জিকেএস