বৃহস্পতিবার রাজধানী ঢাকা ও তার আশপাশে হওয়া ভারী বৃষ্টি হয়তো শেরে বাংলায় মোহামেডান শিবিরে আশার সঞ্চার ঘটিয়েছিল। কারণ বৃষ্টি আসার আগেই মোহামেডান চলে গিয়েছিল ব্যাকফুটে। বৃষ্টিতে খেলা বন্ধের সময় মোহামেডানের রান ছিল ৭ উইকেটে ১১৭ (২৯.৪ ওভারে)। ম্যাচটা যদি পরিত্যক্ত হয়, তাহলে মোহামেডান পরাজয় এড়িয়ে হয়তো ১ পয়েন্ট পেতে পারতো।
Advertisement
একইভাবে ওই সময়ের বৃষ্টি নিশ্চয়ই বিকেএসপি মাঠে আবাহনীর ড্রেসিং রুমেও ভয় ধরিয়ে দিয়েছিল। কারণ বৃষ্টিতে খেলা পরিত্যক্ত হলে আবাহনীর সম্ভাব্য জয় হতো হাতছাড়া।
কিন্তু না। বৃষ্টি বাঁধা হয়ে দাড়ালেও মিরপুর কিংবা বিকেএসপি- কোথাও ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়নি। বৃষ্টির কারণে খেলা প্রায় তিন ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর আবার মাঠে গড়িয়েছে এবং বিকেএসপি-৩ নম্বর মাঠে বৃষ্টি ভেজা ডিএল মেথডে নিষ্পত্তি হওয়া ম্যাচে আবাহনী ৪ উইকেটে হারিয়েছে অগ্রণী ব্যাংককে।
ওদিকে শেরে বাংলায় মোহামেডানও ডিএল মেথডে ৯ উইকেটে হেরেছে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের কাছে। তাতে করে মোহামেডানের পয়েন্ট ১২ খেলায় ১৮তেই বহাল থাকলো। আর সমান খেলায় ১০ জয়ে আবাহনীর পয়েন্ট দাঁড়ালো ২০। কাজেই মোহামেডানকে টপকে আবাহনী এখন এককভাবে চলে গেল পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে।
Advertisement
অগ্রণী ব্যাংক ইনিংসের ২৪.৪ ওভারের সময় যখন বৃষ্টি এসে খেলা বন্ধ হয়, তখন দলটির স্কোর ছিল ৩ উইকেটে ১০৯। অধিনায়ক ইমরুল কায়েস ৪৮ রানে ব্যাট করছিলেন ৫২ বলে। এছাড়া ওপেনার ইমরানউজ্জামান ৪৯ বলে ২৯ রানে আউট হন।
এরপর বৃষ্টি বন্ধ হলেও মাঠ খেলা উপযোগী করতে লেগে যায় প্রায় তিনঘণ্টা। তাই ডিএল মেথডে আবাহনীর সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ২২ ওভারে ১৫৭। দুই ব্যাটিং স্তম্ভ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত আর অভিজ্ঞ মুমিনুল হক জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট খেলতে সিলেটে।
তাদের ছাড়া আবাহনীর জন্য ওভার পিছু ৭ রানের বেশি রান তাড়া করে জেতাটা কঠিনই ছিল। ওপরের দিকে দু’একজন হাত খুলে না খেলে এ ম্যাচ জেতা সহজ ছিল না আকাশী হলুদদের। মনে হচ্ছিল, মারকুটে ওপেনার পারভেজ ইমন শুরুতে ১২৫ স্ট্রাইকরেটে একটি ঝোড়ো ইনিংস খেলে দিলে সমীকরণ সহজ হয়ে যাবে আবাহনীর।
কিন্তু তা হয়নি। পারভেজ ইমন ফিরে গেছেন কোন রান না করেই। পারভেজ ইমন একা নন। তার সাথে ওপেন করা শাহরিয়ার কমলও আউট হয়েছেন শূন্য রানে। ২ রানে ২ উইকেট হারিয়ে আবাহনী যখন ধুঁকছিল, ঠিক তখন হাল ধরেন জিসান আলম।
Advertisement
রাউন্ড রবিন লিগে একদম নিজেকে খুঁজে না পাওয়া জিসান আলম আজ দলের প্রয়োজনে দারুণ ব্যাটিং করে আবাহনীকে জেতাতে রাখেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। নারায়নগঞ্জের এ তরুণের ব্যাট থেকে ২৭ বলে ৪৬ রানের ঝোড়ো ইনিংস বেরিয়ে আসলে আবাহনী পায় জয়ের রসদ।
৪ ছক্কা ও ৩ বাউন্ডারিতে সাজানো এ ইনিংসটির মত না হলেও অপর তরুণ অলরাউন্ডার এসএম মেহরুব ২৫ বলে ৩০ রানের আরও একটি ইনিংস খেললে আবাহনী এগিয়ে যায়।
তারপরও দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত (১২) ও মোহাম্মদ মিঠুন (২২ বলে ১৮) মাঝখানে হাল ধরতে না পারায় আবার চাপে পরে আবাহনী। সেই চাপ কাটিয়ে দল জিতিয়ে দেন দুই তরুণ মাহফিজুর রাব্বি (১২ বলে ২ ছক্কায় ২০ অপরাজিত) আর শামসুল ইসলাম (১৮ বলে ২৫ নট আউট)।
মাহফিজুর রাব্বি আর শামসুল সপ্তম উইকেটে ৪৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়লে আবাহনী নির্ধারিত ২২ ওভারের ১৬ বল আগেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায়।
এআরবি/আইএইচএস