উপকারী বৃষ্টি; যে বৃষ্টিতে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি পায় ও ফসল ফলে, তীব্র গরমে মানুষ ও প্রাণীকুল স্বস্তি লাভ করে, তা আল্লাহর রহমত ও নেয়ামত। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেছেন, আল্লাহর রহমতের নিদর্শন। আল্লাহ তাআলা বলেন, মানুষ নিরাশ হয়ে যাওয়ার পর তিনিই বৃষ্টি বর্ষণ করেন এবং তার রহমত ছড়িয়ে দেন, তিনি-ই সকল গুণে প্রশংসিত প্রকৃত অভিভাবক। (সুরা শূরা: ২৮)
Advertisement
নবিজি (সা.) বৃষ্টিকে আল্লাহর রহমত বলে অভিহিত করতেন। উম্মুল মুমিনীন আয়েশা (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন বৃষ্টি দেখতেন, তখন বলতেন, এ তো আল্লাহর রহমত। (সহিহ মুসলিম: ১৯৫৭)
বৃষ্টি দেখে দোয়া পড়া সুন্নত। হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বৃষ্টি হতে দেখলে বলতেন,
اللَّهُمَّ صَيِّبًا نَافِعًاউচ্চারণ: আল্লাহুম্মা সাইয়্যেবান নাফিআন
Advertisement
অর্থ : হে আল্লাহ, আপনি এ বৃষ্টিকে প্রবহমান এবং উপকারী বানিয়ে দিন। (সহিহ বুখারি: ১০৩২)
বৃষ্টির সময় দোয়া কবুল হয়। তাই এ সময় অন্যান্য দোয়াও করা উচিত। হজরত সাহল বিন সাদ (রা.) বলেন, দুই সময়ের দোয়া ফেরত দেওয়া হয় না কিংবা (তিনি বলেছেন), খুব কমই ফেরত দেওয়া হয়: আজানের সময় এবং রণাঙ্গণে শত্রুর মুখোমুখি হওয়ার সময়ের দোয়া। অন্য বর্ণনা অনুযায়ী বৃষ্টির সময়ের দোয়া। (সুনানে আবু দাউদ: ২৫৪০)
বৃষ্টির পানি গায়ে লাগানো কি সুন্নত?অনেক সময় আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বৃষ্টিতে ভিজতেন। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা আল্লাহর রাসুলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সঙ্গে ছিলাম, এ সময় বৃষ্টি শুরু হলো। আল্লাহর রাসুল (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তার শরীরের ওপরের অংশ থেকে কাপড় সরিয়ে দিলেন। ফলে তাঁর শরীর ভিজে গেল। আমরা জিজ্ঞাসা করলাম, হে আল্লাহর রাসুল! আপনি কেন এ রকম করলেন? তিনি উত্তরে বললেন, যেহেতু মহান রবের কাছ থেকে সদ্য আগত (তাই আমি শরীরে লাগিয়ে নিলাম বরকতের জন্য)। (সহিহ মুসলিম: ১৯৫৬)
তাই কেউ বৃষ্টির সময় ভেজার মতো অবস্থায় থাকলে বরকতময় মনে করে বৃষ্টিতে ভিজতে পারে। তবে কারো স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি থাকলে বা অন্য অসুবিধা থাকলে বৃষ্টিতে ভেজা থেকে বিরত থাকবে। যে কোনো সময় যে কোনো অবস্থায় বৃষ্টি হলেই সুন্নত আমল মনে করে বৃষ্টিতে ভিজতে হবে এ রকম নয়।
Advertisement
ওএফএফ/এমএস