গণমাধ্যম

সাংবাদিকতা শিক্ষায় সংস্কারের প্রয়োজন আছে: ফারুক ওয়াসিফ

সাংবাদিকতা শিক্ষায় সংস্কারের প্রয়োজন আছে: ফারুক ওয়াসিফ

প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের (পিআইবি) মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ বলেছেন, সাংবাদিকতা শিক্ষায় সংস্কারের প্রয়োজন আছে। গণমাধ্যমের উপস্থাপনায় ও ভাষার ব্যবহার সম্পর্কে গণমাধ্যমকর্মীদের জানা জরুরি।

Advertisement

তিনি বলেন, আমরা লক্ষ্যে করি নারীবিষয়ক সংবাদ গণমাধ্যমে বিনোদন সংবাদে রূপ নিচ্ছে, এটি ভয়ংকর ব্যাপার। একটি সংবাদ যদি আদালতে প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়, সেটি অবশ্যই বস্তুনিষ্ঠ হতে হবে।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) পিআইবির সেমিনার কক্ষে ‘জেন্ডার-সংবেদনশীল সাংবাদিকতা: জেন্ডার সম্পর্কিত প্রশ্নাবলির উন্নয়ন’ শীর্ষক এক কর্মশালায় সভা প্রধানের বক্তব্যকালে তিনি এসব কথা বলেন।

কর্মশালায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. গীতিআরা নাসরিন; বাংলাদেশি সাংবাদিক এবং প্রশিক্ষক কুররাতুল-আইন-তাহমিনা; প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের পরিচালক (ইনফ্লুয়েন্সিং, প্রচারণা এবং যোগাযোগ) নিশাত সুলতানা বক্তব্য রাখেন। এছাড়া কর্মশালায় বিভিন্ন গণমাধ্যমের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক, শিক্ষক ও পিআইবির পরিচালক (অধ্যয়ন ও প্রশিক্ষণ) পারভিন সুলতানা রাব্বি, সহযোগী অধ্যাপক (অস্থায়ী) মনিরা শরমিন, প্রশিক্ষক মো. শাহ আলম ও সহকারী প্রশিক্ষক জিলহাজ উদ্দিনসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

Advertisement

কর্মশালায় বক্তব্যকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. গীতিআরা নাসরিন বলেন, মিডিয়া হাউজগুলোর উচিত তাদের সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া এবং গণমাধ্যমকর্মীদেরও সেই দাবি উত্থাপন করা উচিত। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো নিজ উদ্যোগেই সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে থাকে। বাংলাদেশে দেখা যায় এটি করছে হয়তো কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বা সরকারি প্রতিষ্ঠান।

এছাড়া গণমাধ্যম শিল্পের একটি আচরণবিধি থাকা আবশ্যক বলে তিনি জানান এবং বলেন, গণমাধ্যমে এসময়ের সবচেয়ে বড় ক্ষতি হলো, এটি বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে। জনসাধারণের চাহিদা জানার জন্য গণমাধ্যগুলো নিজেরাই গবেষণা করতে পারে।

সাংবাদিক কুররাতুল-আইন-তাহমিনা বলেন, একজন সাংবাদিক মানুষের সঙ্গে কাজ করেন এবং প্রতিটি ব্যক্তির নিজস্ব পরিচয় ও মর্যাদা আছে। একজন সাংবাদিকের উচিত কোনো ব্যক্তি সম্পর্কে অতিরঞ্জিত করে কোনো পরিচয় উপস্থাপন না করা বরং সে ব্যক্তি তার নিজের সম্পর্কে ঠিক যতটুকু প্রকাশ করতে চান, ঠিক ততটুকুই প্রচার করা।

তিনি আরও বলেন, গণমাধ্যমগুলোতে বৈচিত্র্যপূর্ণ সংবাদকর্মীর উপস্থিতি জেন্ডার-সংবেদনশীল সাংবাদিকতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখতে পারে।

Advertisement

প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের পরিচালক নিশাত সুলতানা বলেন, আমাদের সমাজে বেশিরভাগ মানুষ নারীদের সম্মান করে, কিন্তু খুব কম সংখ্যক মানুষ যারা নারীদের সম্মান করেন না এবং এটিকে চ্যালেঞ্জ করেন। এটিকে রুখে দিতে হবে।

সমাজে জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধ, নেতিবাচক জেন্ডারভিত্তিক ধারণা ভাঙা এবং জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে যুব ও যুব-নেতৃত্বাধীন সংগঠনগুলোকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে সমতায় তারুণ্য প্রকল্প কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

নেদারল্যান্ডস সরকার চার বছরব্যাপী এই প্রকল্পের অর্থায়ন করছে, যা ২০২৭ সালের নভেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশের আটটি বিভাগে যৌথভাবে বাস্তবায়ন করবে প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ ও জাগো ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট।

২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে প্রকল্প উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে, প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ এবং প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ বাংলাদেশে জেন্ডার-সংবেদনশীল সাংবাদিকতাকে আরও অনুশীলনের লক্ষ্যে একটি নির্দেশিকা তৈরি এবং সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণ দিতে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করে।

এই প্রকল্পে ১৩ হাজার ৫১৫ ব্যক্তিকে সরাসরি অংশগ্রহণের জন্য সম্পৃক্ত করা হবে, যার মধ্যে রয়েছে তরুণ, জাতীয় যুব কাউন্সিলের সদস্য, স্থানীয় কন্টেন্ট নির্মাতা, সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার এবং বাংলাদেশি গণমাধ্যমকর্মী।

এমইউ/বিএ/এমএস