চলতি মৌসুমে ঝিনাইদহে ভুট্টার বাম্পার ফলন হয়েছে। কাঙ্ক্ষিত ফলন পেয়ে হাসি ফিরেছে কৃষকের মুখে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবারের ভুট্টার আবাদ ভালো হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষকেরা। তবে অতিরিক্ত খরার কারণে ভুট্টার মোচা কিছুটা হালকা হয়েছে। গাছেই শুকিয়ে যাচ্ছে ভুট্টা। ফলন ভালো হলেও কাঁচা ভুট্টার দাম নিয়ে কৃষকের মাঝে অসন্তোষ রয়েছে।
Advertisement
সরেজমিনে জানা গেছে, জেলার সব উপজেলায় ভুট্টার ব্যাপক আবাদ হয়েছে। চাষিরা ভুট্টা সংগ্রহে মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন। মাঠেই চলছে ভুট্টা মাড়াইয়ের কাজ। পরিবারের বড়দের সাথে ছেলেমেয়েরাও কাজ করছে হাসিমুখে।
কৃষকেরা বলছেন, এ বছর ভুট্টার ফলন বেশ ভালো হয়েছে। প্রথমদিকে মানহীন বীজ রোপণের কারণে অনেক কৃষক ক্ষতির মুখে পড়েন। পরে ভালো ফলন পেয়ে সেই ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার আশা করছেন তারা। তবে কাঁচা ভুট্টার দাম নিয়ে কিছুটা শঙ্কা রয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, কাঁচা ভুট্টার দাম বেশি পাওয়া যাচ্ছে না। দুই-তিন দিন রোদে শুকানোর পরে ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে।
সদর উপজেলার ভুট্টা চাষি আহমদ আলী জাগো নিউজকে বলেন, ‘কাঁচা ভুট্টার দাম কম। প্রতি মণ কাঁচা ভুট্টা ৮০০ থেকে ৮২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দাম আরেকটু বেশি হলে ভালো হতো।’
Advertisement
তাহের মন্ডল নামে অপর কৃষক বলেন, ‘শুকনো ভুট্টার দাম মণপ্রতি ১১০০ থেকে ১৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এই দামে ভুট্টা বিক্রি করলে খুব বেশি লাভ হবে না। যে কারণে অনেকেই ভুট্টা শুকিয়ে বাড়িতে সংরক্ষণ করছেন। দেশে ভুট্টার বহুবিধ ব্যবহারের সুযোগ থাকলেও কৃষক পর্যায়ে বেশি দাম দিচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা।’
কৃষক ইশারত আলী জাগো নিউজকে বলেন, ‘এ বছর প্রতি বিঘা ভুট্টার আবাদে প্রায় ১৬ থেকে ১৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। প্রতি বিঘায় গড়ে প্রায় ৬০-৬৫ মণ হারে কাঁচা ভুট্টার ফলন হয়েছে। মাড়াই, জমির লিজ ও শ্রমিক খরচ বাদ দিয়ে বিঘাপ্রতি ১২-১৫ হাজার টাকা লাভ থাকতে পারে।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, জেলায় এবার মোট ১৮ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ করেছেন কৃষক। বীজের মানভেদে ফলন সম্ভাবনা বিঘাপ্রতি ৬৫ থেকে ৭০ মণ।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ষষ্টি চন্দ্র রায় জাগো নিউজকে বলেন, ‘ভুট্টার আবাদ উপযোগী আবহাওয়া থাকায় এবার ফলন ভালো হয়েছে। আশা করছি, কৃষক ভালো দামও পাবেন। তবে ফলনের প্রকৃত তথ্য পেতে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে। ভুট্টাসহ খাদ্যশস্যের চাষাবাদ বৃদ্ধির জন্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও কৃষি বিভাগ নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।’
Advertisement
শাহজাহান নবীন/এসইউ/জেআইএম