সোশ্যাল মিডিয়া

‘ট্রেনের টিকিট কালোবাজারিতে জড়িত ছাত্র আন্দোলনের তিনজন’

‘ট্রেনের টিকিট কালোবাজারিতে জড়িত ছাত্র আন্দোলনের তিনজন’

রেলে দায়িত্ব পাওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন শিক্ষার্থীকে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সাবেক অতিরিক্ত সচিব মো. মাহবুব কবীর মিলন। তিনি দাবি করছেন, এই তিনজন ট্রেনের টিকিট কালোবাজারির সঙ্গে জড়িত।

Advertisement

এ নিয়ে মো. মাহবুব কবীর মিলন মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) রাতে তার ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে একটি স্ট্যাটাস দেন। স্ট্যাটাসের সঙ্গে তিনি ওই তিন শিক্ষার্থীর নাম সম্বলিত একটি স্ক্রিনশটও শেয়ার করেন। তার সেই লেখাটি জাগো নিউজের পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো—

মো. মাহবুব কবীর মিলন লেখেন, ‘নিচের স্ক্রিনশট খেয়াল করুন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন সক্রিয় কর্মীকে, রেলকে একটি লাভজনক এবং জনকল্যাণকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে (আগেই হেসে উঠবেন না প্লিজ)। তাদেরকে এই দায়িত্ব দিয়েছে রেল উপদেষ্টা মহোদয়। এই তিনজনের সাথে আর একজন আছে। সে হচ্ছে রাজউক কলেজের ছাত্র নাজিব আহমেদ।’

‘এদেরকে আবার রেলের লোকোমোটিভ বা ইঞ্জিনের সক্ষমতা, ডিজাইন, ত্রুটি এবং উন্নয়নেরও দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল (হাসবেন না প্লিজ)। এদের বিশেষ করে তিনজনের কুকীর্তি পরে বলছি। একটি ধৈর্য ধরে পড়তে থাকুন।’

Advertisement

‘রেল ভবনে এদের অবাধ বিচরণ। অবাধ বাণিজ্য। সারাদেশের কর্মচারী কর্মকর্তাদের কাছে ত্রাস এরা তিনজন। মন্ত্রণালয়ের অনেক কর্মকর্তা এদের দেখলে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে সমীহ করে। ডিজিএফআইসহ সকল গোয়েন্দা সংস্থাকে অনুরোধ করছি তদন্ত করে প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টা বরাবর দেয়ার জন্য।’

এবার আসি আসল কথায়।

‘এদেরকে দুই মাসের জন্য ফ্রি পাসের ব্যবস্থা করে দিয়েছিল মন্ত্রণালয়, উপদেষ্টার নির্দেশে। রেলের সেই তথাকথিত লাভজনক এবং কল্যাণকর উদ্দেশ্য নিয়ে এরা সারাদেশে যখন খুশি, যতবার ইচ্ছা এসি বার্থ এবং স্নিগ্ধায় ভ্রমণ যাতে করতে পারে (হাসবেন না প্লিজ)।’

‘এরা দুই মাসের ফ্রি পাসের অনুমতি দেয়া হলেও গতবছর নভেম্বর ডিসেম্বর থেকে এই এপ্রিল মাস পর্যন্ত প্রায় দুই লাখ টাকা অর্থ মূল্যের ভ্রমণ করেছে এসি বার্থ ও স্নিগ্ধায়।এতে সমস্যা কী?’

Advertisement

‘সমস্যা হচ্ছে, দেখা গেছে এরা সবাই একই দিনে, একই নামে একাধিক ডেসটিনেশন বা গন্তব্যে ভ্রমণ করেছে। যেমন, একই তারিখে একই নামে, ঢাকা কক্সবাজার, আবার ঐ তারিখেই রাজশাহী ঢাকা। এদের প্রেতাত্মা ছাড়া একই দিনে, একই সময়ে দুইদিকে ভ্রমণ করা তো সম্ভব নয়।’

‘শুধু একই তারিখ নয়। পরপর দুই বা তিনদিনে দেখা যাচ্ছে একই নামে বিভিন্ন গন্তব্যে টিকিট কেটেছে এরা। যেটা কোনোভাবেই সম্ভব নয়।’

তাহলে ঘটনা কী?

‘ঘটনা হচ্ছে, টিকিট কালোবাজারি করেছে এরা। অবশ্যই রেলের লাভ এবং কল্যাণের জন্য! নাজিব তুলনামূলক কম করেছে। এরা টিকিট কালোবাজারি।’

‘এতদিন লেগেছিলাম এদের এই তথ্যগুলো পাওয়ার জন্য। এরা জুলাই ফাউন্ডেশন এর নামে বড়বড় স্টেশনে দোকান বরাদ্দ চেয়েছে। জুলাই ফাউন্ডেশন এর নামে প্রাইভেট ট্রেন পরিচালনার জন্য রেলের কাছে আবেদন করেছে। সম্প্রতি রেলের বদলী বাণিজ্যর একটি অডিও রেকর্ড ফাঁস হয়েছে।’

‘তা জুলাই ফাউন্ডেশনের নেতাদের কাছে প্রশ্ন। এমন দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে নাকি এদের!!’

মো. মাহবুব কবীর মিলন আরও লেখেন, এবার রেল উপদেষ্টা, রেল, এনসিপি এবং জুলাই ফাউন্ডেশনের কাছে প্রশ্ন।

* এরা রেল ভবনে এবং সারা দেশের রেলের লোকজনের কাছে কী করছে, কী করে বেড়াচ্ছে, সেই খবর আছে কি আপনাদের কাছে। গোয়েন্দা রিপোর্ট সংগ্রহ করা হয়েছে কী।

* দুই লাখ টাকা অর্থ মূল্যের ফ্রি পাস বা টিকিট দিয়ে এরা রেলের কী উপকার, কী কল্যাণ করেছে, তা জনগণের সামনে প্রকাশ করুন। ফেসবুক থেকে নকল করা তথ্য দিয়ে তাদের প্রস্তাবনা ছাড়া।

* দুই মাসের জন্য হলেও ৪/৫ মাস যাবত একই দিনে, একই নামে, বিভিন্ন গন্তব্যের টিকিট দেয়া এবং নেয়ার জন্য রেল এবং এদের বিরুদ্ধে তদন্ত এবং আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে কিনা। এদের টিকিট কালোবাজারির কী হবে।

* রেলের ইতিহাসে রেলের লোকজন ছাড়া বাইরের কারো নামে ফ্রি পাস ইস্যুর কোনো রেকর্ড বা নিয়ম না থাকা স্বত্বেও এদের নামে কেন তা ইস্যু করা হল। এই ক্ষমতা কি উপদেষ্টা বা মন্ত্রণালয়ের আছে।

* এই দুই লাখ টাকার ক্ষতিপূরণ সরকারকে কে দেবে। উপদেষ্টা, সচিব নাকি ডিজি। অডিট আপত্তি কোন দুই নম্বরি পদ্ধতিতে মেটানো হবে।

* বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি হিসেবে ফ্রি পাস দিয়ে টিকিট কালোবাজারি করে, এদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেবে এনসিপি।

* জুলাই ফাউন্ডেশন এর নামে বড়বড় স্টেশনে দোকানের স্পেস বরাদ্দ এবং প্রাইভেট ট্রেন পরিচালনার জন্য এদেরকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে কিনা। নাহলে থাকলে জুলাই ফাউন্ডেশন কী ব্যবস্থা নেবে (তাদের চিঠি আছে আমার কাছে)।

 জেডএইচ/