খেলাধুলার জগতে কখন কী হয়, বলা বেশ কঠিন। নানা কারণে ক্রিকেটারদের ক্যারিয়ার মোড় নেয় বিভিন্ন দিকে। বিষয়টি ভক্তদের কাছেও বেশ আকর্ষণীয় হয়ে দাঁড়ায়।
Advertisement
২০০৮ সালে আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জেতার দিন থেকেই বিশ্বের অন্যতম সেরা ব্যাটার হওয়ার মিশন শুরু করেছিলেন বিরাট কোহলি। তবে সেই বিশ্বকাপজয়ী সেই অনূর্ধ্ব-১৯ দলের বেশিরভাগ ক্রিকেটারের ক্যারিয়ারই কোহলির মতো এতটা ফলপ্রসূ হয়নি।
অনেকে ক্রিকেট ছেড়ে অন্য পেশায় চলে গেছেন। কিন্তু কোহলি আঠার মতো লেগে আছেন ক্রিকেটেই। কালের পরিক্রমায় কোহলি এখন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর (আরসিবি) আইপিএল ২০২৫ আসরে নতুন যাত্রা শুরুর অপেক্ষায় আছেন, একই সময়ে বিশ্বকাপজয়ী অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সতীর্থ তন্ময় শ্রীবাস্তব ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগটিতে আম্পায়ারিংয়ের মাধ্যমে শুরু করতে যাচ্ছেন নতুন ইনিংস।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৩৫ বছর বয়সী তন্ময় আইপিএলে আম্পায়ারিংয়ের চাকরি পেয়েছেন। মজার বিষয় হল, তন্ময় ২০০৮ সালের আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারতের পক্ষে সর্বোচ্চ রান (৭৪ বলে ৪৬) সংগ্রাহক ছিলেন। অথচ সেরা তারকার ক্যারিয়ারই কিনা কোহলির মতো ভালো হয়ে ওঠেনি।
Advertisement
২০০৮ সালের অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে বিশ্বকাপ জেতার পর আইপিএলে পাঞ্জাব কিংসের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন তন্ময়। তবে নিজের প্রতিভার যথাযথ প্রদর্শন করাতে পারেননি তিনি। ধীরে ধীরে তার ক্যারিয়ার অবনতির দিকেই যেতে থাকে।
৩০ বছর বয়সে ক্রিকেট ক্যারিয়ারের ইতি টানেন তন্ময়। সর্বশেষ তিনি খেলেছিলেন উত্তরপ্রদেশের হয়ে। ছিলেন উত্তরাখণ্ডের অধিনায়ক। এরপর ক্রিকেটের সঙ্গে যুক্ত থেকে অন্য কিছু করার সিদ্ধান্ত নেন।
টাইমস অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তন্ময় বলেন, ‘আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে এটাই আমার সেরা পারফরম্যান্স। আমি আইপিএল খেলার কাছাকাছি ছিলাম না। আমাকে সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল, আমি কি একজন খেলোয়াড় হিসেবে জীবন দীর্ঘায়িত করতে চাই নাকি সফল একটি দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করতে চাই।’
এখনো কোহলির সঙ্গে যোগাযোগ হয় তন্ময়ের। আইপিএল ২০২৫ আসরেও হয়তো দেখা হবে। তবে কোহলি ক্রিকেটার আর তন্ময় থাকবেন আম্পয়ার হিসেবে।
Advertisement
তন্ময় বলেন, ‘আমি এখনও বিরাটের সঙ্গে যোগাযোগ রাখি, তবে নিজের জন্যই আমাকে বাস্তবমুখী সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি রাজীব শুক্লা (ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সহ-সভাপতি) স্যারকে বলেছিলাম যে আমি খেলোয়াড় হিসেবে নয়, ক্রিকেটের সাথে অন্য কিছু করতে চাই। তিনি কিছুটা বিস্মিত হয়েছিলেন কারণ তখনো আমার বয়স মাত্র ৩০। এরপর আমরা বিকল্পগুলো নিয়ে আলোচনা করি। আমি এনসিএ-তে কোচিংয়ের লেভেল-২ কোর্স করি, কিন্তু আমি জানতাম যে সর্বোচ্চ আমি ফিল্ডিং কোচ হতে পারবো। এরপর আমি আম্পায়ারিংয়ের দিকে মনোযোগ দিই।’
আম্পায়ারিংয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর এর পরীক্ষা নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন তন্ময়। একই সাথে বেঙ্গালুরুর ট্যালেন্ট স্কাউট ও জাতীয় ক্রিকেট একাডেমির কোচ হিসেবেও কাজ করেন।
তন্ময় বলেন, ‘আম্পায়ারিংয়ের জন্য পড়াশোনা কঠিন। আমি রাত জেগে পড়তাম। আইন এবং তার প্রয়োগ বোঝার জন্য প্রচুর পড়াশোনা করতে হয়।’
এমএইচ/এমএস