অনিয়মিত অভিবাসীদের বহিষ্কার দ্রুততর করার জন্য নতুন পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। তারা বলছে, অনিয়মিত অভিবাসীদের জন্য একটি ‘প্রত্যাবর্তন কেন্দ্র’ বা ‘রিটার্ন হাব’ গড়ে তোলা হবে। জোটের কিছু সদস্য দেশ এই উদ্যোগের পক্ষে থাকলেও মানবাধিকার সংস্থাগুলো এর কঠোর সমালোচনা করছে।
Advertisement
বর্তমানে ইইউ দেশগুলোতে অনিয়মিত অভিবাসীদের বহিষ্কারের হার ২০ শতাংশেরও কম। এই হার বাড়ানোর লক্ষ্যে ব্রাসেলস সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলছে।
পরিকল্পিত পদক্ষেপ:> সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে ইইউর বাইরের অঞ্চলে অভিবাসী কেন্দ্র স্থাপনের অনুমতি দেওয়া হবে।> যাদের আশ্রয় আবেদন প্রত্যাখ্যান হয়েছে এবং যারা দেশ ছাড়ার আইনি নির্দেশের আওতায় রয়েছেন, তাদের নতুন ‘রিটার্ন হাব’-এ পাঠানো হবে।
আরও পড়ুন>>
Advertisement
> ইইউ নিজস্ব কোন কেন্দ্র পরিচালনা করবে না, বরং সদস্য দেশগুলোর ওপর এই দায়িত্ব ছেড়ে দেবে।> কেন্দ্রগুলোর আইনি কাঠামো আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে পরিচালিত হবে।> যারা ইউরোপ ত্যাগ করতে অস্বীকৃতি জানাবে, তাদের জন্য নিষেধাজ্ঞা, পরিচয়পত্র বাজেয়াপ্ত করা এবং আটক রাখার মতো ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।> এক দেশ কর্তৃক নেওয়া সিদ্ধান্ত অন্য দেশেও কার্যকর হবে, যেমন অস্ট্রিয়ায় নেওয়া সিদ্ধান্ত স্পেনেও প্রয়োগ করা যেতে পারে।
রাজনৈতিক ও আইনগত চ্যালেঞ্জ
এই প্রস্তাব কার্যকর করতে হলে ইউরোপীয় সংসদ এবং ইইউর সদস্য রাষ্ট্রগুলোর অনুমোদন প্রয়োজন। ম্যাগনাস ব্রুনার আশাবাদী যে, বিলটি দ্রুত অনুমোদিত হবে।
তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এটি অত্যন্ত সংবেদনশীল একটি ইস্যু যা ২৭টি সদস্য দেশের মধ্যে মতবিরোধ তৈরি করতে পারে।
Advertisement
স্পেন এই প্রকল্পের বিরোধিতা করছে। মাদ্রিদ আশঙ্কা করছে, এটি মানবাধিকারের পরিপন্থি হতে পারে।
অন্যদিকে, স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশগুলো এবং নেদারল্যান্ডস কেন্দ্র স্থাপনের পক্ষে এবং দ্রুত প্রকল্প চালু করার পক্ষে মত দিয়েছে।
সুইডিশ অভিবাসন মন্ত্রী জোহান ফরসেল বলেছেন, আমরা বছরের পর বছর ধরে বিকল্প ব্যবস্থা আনার চেষ্টা করে আসছি।
ফ্রান্স এই আলোচনায় এখনো সরাসরি যুক্ত হয়নি, কারণ বিষয়টি তাদের জন্য অত্যন্ত জটিল।
এই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে মানবাধিকার সংস্থাগুলো সরব হয়েছে। আন্তর্জাতিক রেসকিউ কমিটির মতে, এটি মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঝুঁকি তৈরি করবে।
গ্রিন পার্টির ইউরোপীয় সাংসদ মেলিসা কামারা বলেন, এই প্রত্যাবর্তন কেন্দ্রগুলো তৃতীয় দেশের নাগরিকদের জন্য আইনি শূন্যতা তৈরি করবে এবং আটক রাখার আরও কঠোর নীতির দিকে নিয়ে যাবে।
ইইউ সীমান্তে অবৈধ প্রবেশের সংখ্যা সাম্প্রতিক সময়ে উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। ইউরোপীয় সীমান্ত সংস্থা ফ্রন্টেক্সের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের পর অনিয়মিত অভিবাসনের হার সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে।
তবে অভিবাসন নীতি কঠোর করার চাপ অব্যাহত রয়েছে, এবং এই নতুন পরিকল্পনার মাধ্যমে ইইউ অভিবাসন ব্যবস্থাকে আরও সংগঠিত ও নিয়ন্ত্রিত করতে চায়।
সূত্র: ইনফোমাইগ্রেন্টসকেএএ/