নির্বাচন আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। জাতিসংঘের মহাসচিবকে নির্বাচনের টাইমফ্রেমের (সময়সীমা) কথা বলার প্রয়োজন নেই বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
Advertisement
তিনি বলেন, ‘এখানে টাইমফ্রেমের কথা বলার কোনো প্রয়োজন নেই। নির্বাচন তো আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। টাইমফ্রেমের কথা কেন তাদেরকে (জাতিসংঘ) বলবো?’
শনিবার (১৫ মার্চ) রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে গোলটেবিল বৈঠক করেন জাতিসংঘের মহাসচিব। বৈঠক শেষে সাংবাদিকরা জানতে চান, জাতিসংঘের মহাসচিবকে নির্বাচন বিষয়ে কোনো টাইমফ্রেম দিয়েছে কি না। এ প্রশ্নের উত্তরে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
বৈঠক শেষে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সংস্কার সম্পর্কে জাতিসংঘ মহাসচিবকে অবহিত করা হয়েছে। আমরা জাতিসংঘের মহাসচিবকে বলে এসেছি সংস্কারের বিষয়ে। আর সংস্কার তো অবশ্যই করতে হবে। সংস্কারের কথা তো আমরাই আগে বলেছি।’
Advertisement
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বলেছি, নির্বাচনকেন্দ্রিক যে সংস্কারগুলো আছে তা দ্রুত শেষ করতে হবে। নির্বাচিত পার্লামেন্টের মাধ্যমে বাকি বিষয়গুলো (সংস্কার) শেষ হবে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সংস্কার ও নির্বাচন কীভাবে হবে, সেটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ইস্যু বলে জাতিসংঘ মনে করে। এ দেশের জনগণকেই তা নির্ধারণ করতে হবে। তবে জাতিসংঘ মহাসচিব আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন, বাংলাদেশে আগামীতে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক সরকার আসবে। পৃথিবীর মধ্যে একটা নজির সৃষ্টি করবে আগামীর নির্বাচন।’
আরও পড়ুনআগামী নির্বাচন পৃথিবীতে নজির সৃষ্টি করবে: জাতিসংঘ মহাসচিবনারীদের সুরক্ষায় ঢাকার গণপরিবহনে ‘হেল্প’ অ্যাপ চালুবৈঠক শেষে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, ‘আমরা সংস্কারের ব্যাপারে কথা বলেছি। একটা ফেয়ার নির্বাচনের বিষয়ে বলেছি, টেকসই গণতন্ত্র ও জাতীয় ঐক্যের ব্যাপারে কথা বলেছি। জাতিসংঘের মহাসচিব আমাদের অধিকাংশ বক্তব্য সমর্থন করেছেন। বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব আশাবাদী।’
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে জুলাই গণহত্যার বিচার নিশ্চিতে জাতিসংঘের সহায়তা চাওয়া হয়েছে। এছাড়া সংস্কার ও নির্বাচনের বিষয়ে ঐকমত্য নিয়ে আমাদের অবস্থান তুলে ধরা হয়েছে।’
Advertisement
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘বৈঠকে সংস্কার নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির অবস্থান তুলে ধরা হয়েছে। সংস্কার ও গণহত্যার বিচারে জনগণের কাছে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সংস্কারের মৌলিক ভিত্তি এই সরকারের আমলেই তৈরি করতে হবে। সংস্কার ছাড়া নির্বাচন কাজে দেবে না। এছাড়া, সংবিধান ও গণপরিষদ নিয়েও আমাদের অবস্থান তুলে ধরেছি।’
এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, ‘গণহত্যা নিয়ে জাতিসংঘের প্রতিবেদনে দেওয়া সুপারিশ বাস্তবায়নে সংস্থাটির সাহায্য প্রয়োজন। এখনো জাতিসংঘের তিনটি প্রতিষ্ঠানে শেখ হাসিনার আত্মীয়রা কাজ করছেন।’
বৈঠকে অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ, সদস্য ড. ইফতেখারুজ্জামান, বদিউল আলম মজুমদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
কেএইচ/কেএসআর/জেআইএম