আইন-আদালত

আ’ লীগ নেতা মায়া-জিয়াউল আহসানসহ আসামি ১৮ জন

২০১০ সালে বিএনপি নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা (সনদ নম্বর ম-১১০০০৫) চৌধুরী আলম গুমের ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতা মোফাজ্জাল হোসেন চৌধুরী মায়া, সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসানসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।

Advertisement

সোমবার (১০ মার্চ) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর বরাবর চৌধুরী আলমের ছেলে আবু সাঈদ চৌধুরী এ অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০১০ সালের ২৫ জুন সন্ধ্যা আনুমানিক ৭টা থেকে ৮টা পর্যন্ত ফার্মগেট সংলগ্ন ইন্দিরা রোড কালিন্দি অ্যাপার্টমেন্টের সামনে অপহরণ করে গুমের ঘটনা ঘটে।

অভিযোগ দায়ের পর তার ছেলে সাংবাদিকদের জানান, ২০১০ সালের ২৫ জুন রাজধানীর ইন্দিরা রোডের কাছে চৌধুরী আলমকে তার গাড়ি থেকে বের করে মাইক্রোবাসে তুলে নেওয়া হয়। ২০১০ সালের জুলাই মাসে হাইকোর্টের একটি রিট আবেদন করা হলে আদালত পুলিশ ও সরকারকে দ্রুত চৌধুরী আলমকে খুঁজে বের করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তবে আদালতের সেই নির্দেশ আর কার্যকর হয়নি। ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর চৌধুরী আলম গুম হওয়ার পর জিডি করলেও তা আর কার্যকর হয়নি সেসময়।

চৌধুরী আলম বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির প্রথম যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন। ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সাল পর্যন্ত প্রায় দুই বছর জেলে ছিলেন তিনি। এরপর তার বিরুদ্ধে ১১টি মামলা করা হয়।

Advertisement

ছেলের অভিযোগ, ২০১০ সালের ২০ জুন গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতাল থেকে ফেরার পথে র্যাব পরিচয়ে কয়েকজন চৌধুরী আলমের ওপর হামলা করে। পরে স্থানীয়রা র্যাব-১-এর বিল্লাল নামে এক সদস্যকে ধরে গুলশান থানায় সোপর্দ করে। সেদিন রাতেই র্যাব সদর দফতর বিল্লালকে তাদের জিম্মায় নিয়ে যায়। এরপর ২৫ জুন রাতে ফার্মগেটের ইন্দিরা রোডে একটি সাদা মাইক্রোবাসে করে এসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে আলমকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় তখন তার গাড়িচালককে মারধর করে গাড়িও নিয়ে যায় তারা।

তিনি জানান, ঘটনার পরদিন কারওয়ান বাজারের ওয়াসা ভবনের সামনে থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় আমার বাবার গাড়িটা পাওয়া যায়। অনেক খোঁজাখুঁজির করি বাবাকে। ঘটনার পাঁচ দিন পর ৩১ জুন নিখোঁজ উল্লেখ করে শেরেবাংলা নগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করি। পরদিন ১ জুলাই শেরেবাংলা নগর থানায় একটি এফআইআর (মামলা) করেন আবু সাঈদ চৌধুরীর ছেলে।

আওয়ামী লীগ নেতা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া ও কর্নেল জিয়াউল আহসান (মেজর জেনারেল হিসেবে বরখাস্ত) ছাড়া আসামিরা হলেন, কমান্ডার সোহায়েল (রিয়ার অ্যাডমিরাল হিসেবে বরখাস্ত), কর্নেল মো. মুজিবর, তৎকালীন র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক পরে লে. জেনারেল (বরখাস্ত) রিয়াজুল ইসলাম, তৎকালীন ওসি শেরে বাংলা নগর থানা, মেজর এরশাদ, তৎকালীন র্যাব-২ এর উপ-অধিনায়ক, খান মো. আকতারুজ্জামান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের তৎকালীন সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ২১ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ফরিদ উদ্দিন রতন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ২১নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর নিসার উদ্দিন আহমেদ কাজল, কিশোরগঞ্জের সাবেক এমপি বঙ্গবাজার কমপ্লেক্সের প্রধান নিয়ন্ত্রক আফজাল হোসেন, মহানগর বিজনেস অ্যাসোসিয়েটসের চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান হুজুর, মহানগর বিজনেস অ্যাসোসিয়েটসের সেক্রেটারি আব্দুল বাসেত মাস্টার, ফুলবাড়ীয়া সুপার মার্কেটের সভাপতি শাহজাহান খান, বঙ্গ কমপ্লেক্স, ফুলবাড়ীয়ার সভাপতি মো. শাহজাহান, মীর আল মামুন, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাসিম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফুলবাড়ীয়া টার্মিনাল সংলগ্ন মার্কেটের উপ-পরিচালক ইসমাইল হোসেন বাচ্চুসহ অজ্ঞাত আরও অনেকে।

এফএইচ/এসএনআর/জেআইএম

Advertisement