রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এখন তার নিজের দেশেই একজন ‘বিরক্তিকর’ মানুষ হয়ে উঠেছেন। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পুতিন বলেন, ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনী এবং সমাজের দৃষ্টিকোণ থেকে কিয়েভের বর্তমান প্রধান একজন বিরক্তিকর মানুষ হয়ে উঠেছেন।
Advertisement
এর আগে জেলেনস্কিকে স্বৈরশাসক হিসেবে উল্লেখ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মাত্র একদিন আগেই তিনি রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধের জন্যও ইউক্রেনকেই দায়ী করেন। তার এসব মন্তব্যের কারণে এই দুই নেতার মধ্যে ব্যক্তিগত বিভেদ আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
গত বছরের মে মাসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে জেলেনস্কির পাঁচ বছর মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। তবে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া পূর্ণমাত্রায় আক্রমণ শুরু করার পর থেকে ইউক্রেন সামরিক আইনের অধীনে রয়েছে এবং নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় থাকার জন্য জেলেনস্কির সমালোচনা করেছেন ট্রাম্প। যদিও ইউরোপীয় দেশগুলোর নেতারা ইউক্রেনের প্রতি তাদের সমর্থন ব্যক্ত করেছেন।
ফ্লোরিডা থেকে বক্তব্য দেওয়ার সময় ট্রাম্প জেলেনস্কিকে স্বৈরশাসক হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, জেলেনস্কি নির্বাচনের বিষয়ে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তিনি ইউক্রেনের জরিপে পিছিয়ে আছেন। প্রতিটি শহর গুঁড়িয়ে দিয়ে আপনি কিভাবে উচ্চতার আসনে থাকতে পারেন?
Advertisement
এর আগে ট্রাম্প বলেন, ইউক্রেনের উচিত ছিল যুদ্ধ বন্ধ করতে আগেই চুক্তি করে ফেলা। এদিকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ইউক্রেনে শান্তি আলোচনার ক্ষেত্রে ইউরোপকে প্রয়োজন হবে। তবে তার আগে মস্কো ওয়াশিংটনের সঙ্গে বিশ্বাস স্থাপন করতে চায়। তাছাড়া যুদ্ধ বন্ধের চুক্তি এখনো অনেক দূরে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ইউক্রেন যুদ্ধের তিন বছর পূর্ণ হয়েছে। এই সংঘাতে হাজার হাজার সেনা নিহত হয়েছেন। বাস্তুচ্যুত হয়েছে লাখ লাখ মানুষ। এর আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, এই যুদ্ধ কয়েক সপ্তাহের মধ্যে বন্ধ হতে পারে। তবে তিনি এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানাননি।
পুতিন বলেছেন, ট্রাম্প রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতকে আবেগে নয় বরং যুক্তিসঙ্গতভাবে মোকাবিলা করছেন। তবে ট্রাম্প যত তাড়াতাড়ি চান তত তাড়াতাড়ি এটি শেষ নাও হতে পারে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সাম্প্রতিক আলোচনা প্রসঙ্গে পুতিন বলেন, এখনো বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়নি। আমরা কেবল এই বিষয়ে একমত হয়েছি যে এ বিষয়ে এগিয়ে যাবো। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই আমরা ইউরোপীয় দেশগুলোর অংশগ্রহণ অস্বীকার করছি না।
Advertisement
যুদ্ধ বন্ধে গত সপ্তাহে সৌদি আরবে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে এতে আমন্ত্রণ পায়নি ইউক্রেনসহ ইউরোপের দেশগুলো। পুতিন বলেন, রিয়াদে আলোচনায় ইউরোপের কোনো সম্পর্ক নেই। কারণ সেখানে শুধু মস্কো এবং ওয়াশিংটনের মধ্যে আস্থা স্থাপনের ওপর নজর দেওয়া হয়েছে।
টিটিএন