মালয়েশিয়ার জোহরের সেগামাতে একটি বড় ই-ওয়েস্ট (ইলেকট্রনিক বর্জ্য) প্রক্রিয়াকরণ কারখানায় অভিযান পরিচালনা করে বাংলাদেশিসহ ৪২০ জন বিদেশিকে আটক করেছে দেশটির অভিবাসন বিভাগ। সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকালের দিকের এ অভিযানে ১০টি কারখানায় তল্লাশি চালানো হয়।
Advertisement
মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগ এবং দুর্নীতি দমন কমিশন তিন মাসের গোয়েন্দা তৎপরতার পর যৌথভাবে এই অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযান চালানো স্থানগুলোর মধ্যে সেগামাতের পাশাপাশি সেলাঙ্গরের টেলোক পাঙ্গলিমা গারাং এলাকায়ও দুটি ই-ওয়েস্ট কারখানায় অভিযান চালানো হয়।
স্থানীয় গণমাধ্যম সিনার হারিয়ানার প্রতিবেদন অনুযায়ী, সেগামাতে অভিযান চালানোর সময় কয়েকটি কারখানার ভেতরে অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা আবাসন ব্লক পাওয়া যায়, যেখানে অভিবাসী শ্রমিকেরা বসবাস করছিলেন। এসব আবাসনে ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধা ছিল না, পাশাপাশি ছিল বিপজ্জনক বৈদ্যুতিক সংযোগ।
অভিযানের সময় কয়েকজন অভিবাসী শ্রমিক ই-ওয়েস্টের ভাঙা টুকরোর ওপর দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন, ফলে তাদের অনেকে আহত হন।
Advertisement
মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগের উপ-মহাপরিচালক (অপারেশন) জাফরি এমবোক তাহা বলেন, সোমবার সকাল ৯টা থেকে অভিযান শুরু হয় এবং এতে দেশজুড়ে ৩১৪ জন অভিবাসন কর্মকর্তা অংশ নেন। এ সময় ৭৫৩ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এবং ২০-৩০ বছর বয়সী ৪২০ জনকে অবৈধ অভিবাসী হিসেবে চিহ্নিত করে আটক করা হয়।
আরও পড়ুন সাজা শেষে ২৮ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠালো মালয়েশিয়া মালয়েশিয়ায় অগ্নিকাণ্ডে ২ বাংলাদেশির মৃত্যু মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশিসহ ৬০০ অভিবাসী আটকতিনি আরও জানান, আটকদের বেশিরভাগ বাংলাদেশ, মিয়ানমার এবং নেপালের নাগরিক। তাদের মধ্যে অনেকের বৈধ কাগজপত্র ছিল না, কেউ কেউ ভিসার শর্ত ভঙ্গ করেছিলেন এবং অনেকে অনুমোদিত সময়ের বেশি সময় ধরে মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছিলেন। আটকদের মাচাপ উম্বো (মেলাকা) এবং পেকান নেনাস (জোহর) অভিবাসন ডিটেনশন সেন্টারে পাঠানো হয়েছে। এ অভিযানে কতজন বাংলাদেশিকে আটক করা হয়েছে নির্দিষ্ট করে তা জানানো হয়নি।
এছাড়া, অভিযানের সময় ৩০ বছরের বেশি বয়সী পাঁচজন স্থানীয় মালয়েশিয়ান নাগরিককে আটক করা হয়, যাদের মধ্যে দুজন নারীও রয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, তারা অবৈধ অভিবাসীদের পরিচালনা ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
জাফরি এমবোক তাহা জানান, অভিযানের সময় বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়েছে। অনেক অভিবাসী শ্রমিক ধরা পড়ার ভয়ে ই-ওয়েস্টের স্তূপের নিচে লুকিয়ে পড়েন এবং কেউ কেউ পাশের ড্রেনে ঝাঁপিয়ে পড়েন।
Advertisement
তিনি বলেন, এই কারখানাটি সবচেয়ে বড়, যার আয়তন প্রায় ১৬টি ফুটবল মাঠের সমান এবং এতে দুটি পৃথক কারখানা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
অভিযানের পর সংশ্লিষ্ট কারখানার বিরুদ্ধে অভিবাসন আইন ১৯৫৯/৬৩ এবং অভিবাসন বিধি ১৯৬৩-এর ৩৯(বি) ধারা অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তদন্তের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কারখানাগুলোর বিরুদ্ধে পূর্বের কোনো অপরাধের রেকর্ড রয়েছে কি না, তাও যাচাই করা হচ্ছে।
এমআরএম/জিকেএস