এক কার্যদিবস দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখানোর পর ফের দেশের শেয়ারবাজারে বেশিরভাগ মিউচুয়াল ফান্ডের দাম কমেছে। যেখানে বেশিরভাগ ভালো কোম্পানির শেয়ার দাম কমেছে। বিপরীতে শেয়ারবাজারে আবারও দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখিয়েছে ‘জেড’ গ্রুপ বা পচা কোম্পানির শেয়ার।
Advertisement
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) অধিকাংশ মিউচুয়াল ফান্ড ও ভালো কোম্পানির শেয়ার দাম কমলেও দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান। ফলে বাজারটিতে বেড়েছে মূল্যসূচক। একই সঙ্গে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের মতো অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান। ফলে এ বাজারটিতেও মূল্যসূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলেছে। একই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ।
এর আগে সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার দেশের শেয়ারবাজারে বেশিরভাগ মিউচুয়াল ফান্ড এবং ভালো কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ে। বিপরীতে কিছুদিন আগে দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখানো বেশিরভাগ ‘জেড’ গ্রুপ বা পচা কোম্পানির শেয়ার দাম কমে। মিউচুয়াল ফান্ড ও ভালো কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার ফলে মূল্যসূচক ও লেনদেনও বাড়ে।
Advertisement
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোকে চারটি গ্রুপে ভাগ করা হয়। নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পানি থাকে ‘এন’ গ্রুপে। তালিকাভুক্তির পর একটি আর্থিক বছর পার হলে কোম্পানিগুলো ‘এ’, ‘বি’ এবং ‘জেড’ গ্রুপে বিভক্ত হয়।
এর মধ্যে ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া কোম্পানির স্থান হয় ‘এ’ গ্রুপে। ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া কোম্পানি থাকে ‘বি’ গ্রুপে। আর লভ্যাংশ না দিতে পারা কোম্পানির স্থান হয় ‘জেড’ গ্রুপে। জেড গ্রুপের কোম্পানিকে শেয়ারবাজারের পচা কোম্পানি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
সোমবার ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ‘এ’ গ্রুপের ২১৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৭৫টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে কমেছে ৯৫টির এবং ৪৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ‘বি’ গ্রুপের ৪৪টি কোম্পানির শেয়ার দাম বেড়েছে। আর কমেছে ৩১টি এবং ৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
৩৭টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে মাত্র ৫টির দাম বেড়েছে। অন্যদিকে ১৩টির কমেছে এবং ১৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ‘জেড’ গ্রুপের ১০০টি কোম্পানির মধ্যে ৫৪টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে কমেছে ২৮টির এবং ১৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বর্তমানে শেয়ারবাজারে ‘এন’ গ্রুপে কোনো প্রতিষ্ঠান নেই।
Advertisement
বেশিরভাগ মিউচুয়াল ফান্ড ও ভালো কোম্পানির শেয়ার দাম কমলেও দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলিয়ে ১৭৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৫৪টির। এছাড়া ৭১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১০ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ২৩৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৩ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১৬৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৫ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৯২৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
সবকটি মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৫৪৪ কোটি ২৮ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৪৮৭ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। সে হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ৫৬ কোটি ৭১ লাখ টাকা।
এ লেনদেনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ার। টাকার অঙ্কে কোম্পানিটির ১৬ কোটি ৭৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বিচ হ্যাচারির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৫ কোটি ১৮ টাকার। ১২ কোটি ৩৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ফু-ওয়াং ফুড, ড্রাগন সোয়েটার, শাইনপুকুর সিরামিক, লাভেলো আইসক্রিম, কাট্টালী টেক্সটাইল, অগ্নি সিস্টেম এবং ফারইস্ট নিটিং।
অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৫৬ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২০৮ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১০৯টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৭১টির এবং ২৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৩১ কোটি ৫০ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১০ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।
এমএএস/এমকেআর