গণমাধ্যম

১৬ বছর সংবাদপত্র সুবিধা পায়নি, বরং আক্রমণের শিকার হয়েছে

আওয়ামী লীগ সরকারের বিগত ১৬ বছরে দেশের সংবাদপত্র শিল্প কোনো সুবিধা পায়নি। বরং অনেক ক্ষেত্রে আক্রমণের শিকার হতে হয়েছে। বিজ্ঞাপন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বর্তমান অরাজনৈতিক সরকার তার সময়ে সংবাদপত্রের প্রতি সুবিচার করবে, এমনটিই আশা।

Advertisement

রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (নোয়াব) সাবেক সভাপতি ও দৈনিক প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান এসব কথা বলেন।

আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সম্মেলন কক্ষে এ আলোচনায় সংগঠনটির অন্য নেতারাও বক্তব্য রাখেন। এতে এনবিআর চেয়ারম্যান ছাড়াও প্রতিষ্ঠানটির শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন ৫৩ বছরেও গণমাধ্যমে এত স্বাধীনতা কেউ এনজয় করেননি সরকারি অর্থায়নে পরিচালিত গণমাধ্যম বন্ধের প্রস্তাব ইলন মাস্কের

ডিজিটাল মাধ্যমের বহিঃপ্রকাশ ও অন্য মাধ্যমগুলোর অপ্রতিরোধ্য অগ্রগতি সংবাদপত্র শিল্পকে বিরূপ পরিস্থিতির মুখোমুখি করেছে। এ বাস্তবতায় সংবাদপত্র শিল্প রক্ষায় শুল্ক ও করনীতিতে সংস্কারের দাবি জানিয়েছে নোয়াব।

Advertisement

নোয়াব সভাপতি এ কে আজাদ বলেন, ডলারের ক্রমবর্ধমান বিনিময় হার সংবাদপত্র শিল্পকে নতজানু করে ফেলেছে। বিগত কয়েক বছরে সংবাদপত্র শিল্পের বিকাশে সরকার আমাদের কোনো প্রস্তাবনা আমলে নেয়নি। এ বছরের বাজেটে আমাদের প্রস্তাবগুলো বিবেচনায় নেওয়া হোক।

তিনি বলেন, সংবাদপত্র সেবা শিল্প হিসেবে সরকার কর্তৃক ঘোষিত। সাংবাদিক ছাড়াও মুদ্রণ, বিপণন, বিতরণ ও বিজ্ঞাপন ইত্যাদিসহ অগণিত মানুষ এ শিল্পের ওপর নির্ভরশীল। এর অব্যাহত অগ্রগতি ও পরিচালনার জন্য শুল্ক ও করনীতি প্রয়োগের বিপুল সংস্কার তথা সহায়ক ভূমিকা প্রয়োজন।

‘যতক্ষণ এনবিআরের সক্ষমতা না বাড়াবেন, দুর্নীতি না কমবে এবং অটোমেশন না হবে ততক্ষণ কর-জিডিপি অনুপাত বাড়বে না’- যোগ করেন এ কে আজাদ।

এসময় আগামী বাজেটে নিউজপ্রিন্টের আমদানি শুল্ক ২ শতাংশ করা (বর্তমানে প্রযোজ্য ৫ শতাংশ), ভ্যাট ১৫ শতাংশের জায়গায় ৫ শতাংশ, অগ্রিম আয়কর (এআইটি) ৫ শতাংশ ও অগ্রিম কর (এটি) ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ন্যূনতম ১ শতাংশ করা এবং সংবাদপত্র শিল্পকে সেবামূলক শিল্প হিসেবে বিবেচনা করে করপোরেট ট্যাক্স সর্বনিম্ন নির্ধারণ অথবা অবলোপন করার দাবি জানানো হয়।

Advertisement

আরও পড়ুন ছাপার সংবাদপত্র পড়েন না ৭৩ শতাংশ মানুষ, ৯৪ শতাংশ শোনেন না রেডিও

নোয়াবের প্রস্তাবে বলা হয়, একদিকে বিভিন্ন ধরনের ডিজিটাল মাধ্যমের বহিঃপ্রকাশ, অন্য মাধ্যমগুলোর অপ্রতিরোধ্য অগ্রগতি সংবাদপত্র শিল্পকে বিরূপ পরিস্থিতির মুখোমুখি করেছে, অন্যদিকে বিভিন্ন শুল্ক, ভ্যাট, করপোরেট ট্যাক্স এই শিল্পের বিকাশে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমান অবস্থায় বিশেষত ডলারের ক্রমবর্ধমান বিনিময় হার, এ শিল্পকে নতজানু করে ফেলেছে।

সব শুনে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান নোয়াবের প্রস্তাব বিবেচনার আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, ট্যাক্স জিডিপি ও ট্যাক্স রেট বাড়াতে সচেতনতামূলক প্রচার করছে গণমাধ্যমগুলো। গণমাধ্যম আরও ভূমিকা রাখবে। প্রস্তাবগুলোর মধ্যে অগ্রিম আয়কর (এআইটি) ও অগ্রিম কর (এটি) কমানোর আশ্বাস দেন।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, আমি বরাবরই সিঙ্গেল রেটের ভ্যাটের পক্ষে। রাষ্ট্র উপকৃত হবে এমন সিদ্ধান্ত নিতে পিছপা হবো না।

এসএম/এমকেআর/জিকেএস