তথ্যপ্রযুক্তি

এসময় ডিস্কাউন্টে এসি কিনলে যেসব বিষয় মাথায় রাখবেন

শীত প্রায় শেষ, বলা যায় গরমও চলে এসেছে। সূর্যের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া জানান দিচ্ছে তারই। অনেকেই এরই মধ্যে এসি চালাতে শুরু করেছেন। আবার কেউ কেউ খুব শিগগির এসি ব্যবহার শুরু করবেন। অনেকে এখনই নতুন এসি কিনতে চাচ্ছেন।

Advertisement

এসময় অনেক কোম্পানি তাদের এসিতে বিভিন্ন পরিমাণে ডিস্কাউন্ট দিয়ে থাকে। তবে এসি কেনার সময় অবশ্যই বেশ কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে।

চলুন জেনে নেওয়া যাক এসি কেনার সময় কী কী বিষয় খেয়াল রাখবেন-

স্প্লিট নাকি উইন্ডো এসিরুমে ব্যবহারের জন্য বাজারে সাধারণত উইন্ডো, স্প্লিট আর পোর্টেবল এসি বাজারে পাওয়া যায়। উইন্ডো এসি যেসব ঘরে কমপক্ষে দু’টি জানালা আছে সেখানে লাগানো হয়। ফলে বন্ধ হয়ে যাবে ঘরের একটি জানালা। আর এসি বন্ধ থাকলে ঘরে আলো-বাতাস ঢোকার সম্ভাবনা কমে যাবে। কিন্তু এ ধরনের এসি সহজেই ইনস্টল করা যায়। যারা ঘন ঘন বাসা পাল্টান, তাদের জন্য এই এসিই ভালো।

অন্যদিকে স্প্লিট এসি খানিকটা স্লিম হয় উইন্ডো এসির থেকে। স্প্লিট এসির ইভোপরটি ঘরের ভেতর থাকে আর কনডেনসার, কম্প্রেসার অংশ থাকে ঘরের বাইরে। ফলে শব্দ শোনা যায় না রুমের ভেতর থেকে। ঘরের দেয়ালে যে কোনো জায়গায় ঝুলিয়ে দেওয়া যাবে এ এসি। দামের দিক থেকে উইন্ডো এসির দাম স্প্লিট এসির থেকে বেশ খানিকটা কম। স্প্লিট এসির দক্ষতা বেশি উইন্ডো এসির চেয়ে। পোর্টেবল এসি সহজেই এক জায়গা থেকে অন্যত্র নেওয়া যায়। তবে দক্ষতা ও দাম কম অন্য সব এসির তুলনায়।

Advertisement

এসির আকার বা টন নির্বাচন করুনএসি কিনতে গিয়ে প্রথমেই দোকানিরা জিজ্ঞেস করে, কত টনের এসি নিবেন? আসলে এই টন এসির সাইজ বা ওজনকে বোঝায় না। ১ টন এসি মানে হলো ১২০০০ বিটিইউ/আওয়ার, ১.৫ টন মানে হলো ১৮০০০ বিটিইউ/আওয়ার, এভাবে বাড়তে থাকে। বেশি দাম দিয়ে বড় বা বেশি টনের এসি কেনাটা বোকামি। আপনার ঘরের মাপ অনুযায়ী এসি কিনুন। যেমন- আপনার ঘর যদি ১০০-১২০ স্কয়ার ফুট হয়, সেক্ষেত্রে ১ টন এসি যথেষ্ট। ১২০-১৫০ স্কয়ার ফুট ঘরের জন্য প্রয়োজন ১.৫ টন এসি, ১৫০-২০০ স্কয়ার ফুট বা তার বেশি আয়তনের ঘরের জন্য প্রয়োজন ২ টন ক্ষমতার এসি।

বিদ্যুৎ খরচের রেটিং দেখে কিনুনএসির গায়ে স্টিকারে বেশ কিছু স্টার রেটিং করা থাকে। ১ থেকে ৫ পর্যন্ত রেটিংই থাকে সাধারণত। ১ স্টার রেটিং মানে এসিটি এক বছরে ব্যবহার করে ৮৪৩ ইউনিট, অন্যদিকে ৫ স্টার মানে হলো এসিটি ব্যবহার করে ৫৫৪ ইউনিট। সোজা হিসাব হলো, যত বেশি স্টার; তত বিদ্যুৎ খরচ কম। এছাড়াও বিদ্যুৎ বিল সাশ্রয় করার জন্য ইনভার্টার এসি ব্যবহার করতে পারেন। এসির টেম্পারেচার সম্ভব হলে ২২ থেকে ২৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের মধ্যে রাখুন। তাহলেও খানিকটা বিল কম আসবে।

কনডেন্সার ও কম্প্রেসার দেখুনপিওর কপারের তৈরি, কম ব্যাসের (৪-৭ মিলিমিটার), টিউবের ভেতর ফিন আছে এমন কনডেন্সার দেখে এসি কিনুন। সাধারণত অ্যালুমিনিয়ামের চেয়ে কপারের তৈরি কনডেন্সার ভালো। মোটা ব্যাসের সাধারণ টিউবের থেকে কম ব্যাসের ফিনযুক্ত কনডেন্সারের দক্ষতা বেশি। বলা হয়ে থাকে, কনডেন্সারের টিউবের সংখ্যা যত বেশি তত ভালো। কম্প্রেসারের গ্যরান্টি দেখে কিনুন, কারণ এটিই বেশি নষ্ট হয়।

এসির রেফ্রিজারেন্ট দেখে নিনএসিতে কুলিং এজেন্ট হিসাবে বিভিন্ন ধরনের রেফ্রিজারেন্ট ব্যবহার করা হয়। যেমন- R22, R410a, R134a, R32, R1234ze(E) ইত্যাদি। কিছু রেফ্রিজারেন্ট যেমন- R22, R410a , R134a এগুলোর গ্লোবাল ওয়ার্মিং পটেনশিয়াল অনেক বেশি। তাই এগুলো পরিবেশ ও মানব শরীরের জন্য ক্ষতিকর। অন্যদিকে R32, R1234ze(E) এর গ্লোবাল ওয়ার্মিং পটেনশিয়াল তুলনামূলক কম। তাই যেসব এসিতে পরিবেশ বান্ধব রেফ্রিজারেন্ট ব্যবহার করা হয়, সেটা দেখে কিনুন।

Advertisement

এসির ফ্যান ও চালানোর সময় শব্দ দেখে নিনএসির ফ্যান বাতাসকে রুমের চারিদিকে ছড়িয়ে দেয়। কাজেই একাধিক ফ্যান আছে এমন এসি নির্বাচন করুন। এসি কেনার সময় ভালোভাবে খেয়াল করে নিন, এসিতে কোনো শব্দ হচ্ছে কি না।

আরও পড়ুনএসির বাতাস ঠান্ডা হয় না যেসব কারণেএসিই রুম হিটারের কাজ করবে, জানুন পদ্ধতি

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

কেএসকে/জেআইএম