খেলাধুলা

সত্যিই কি সাকিব প্রিমিয়ার লিগ খেলতে পারবেন?

তিনি চেয়েছিলেন, দেশের মাটিতে শেষ টেস্ট খেলতে। কিন্তু নিরাপত্তার কারণে তা পারেননি। দক্ষিণ আফ্রিকার সাথে শেরে বাংলায় নিজের শেষ টেস্ট খেলা বহুদূরে, সাকিব দেশেই ফিরতে পারেননি।

Advertisement

ফিরবেন কী করে? তার বিরুদ্ধে মামলা আছে। তার দেশে ফেরাই দায়। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লিগ সরকারের সঙ্গে নিবিঢ়ভাবে যুক্ত, শেখ হাসিনার প্রিয়ভাজন, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সাংসদ সাকিব দেশে ফিরলে ছাত্রজনতার রোষানলে পড়তে পারেন, এমন শঙ্কা ছিল।

ধারণা করা হচ্ছিল, বিক্ষুব্ধ ছাত্রজনতা সাকিবকে আওয়ামী লীগার হিসেবেই দেখবেন, ক্রিকেটার হিসেবে নয়। এমনকি সাকিব বিরোধী আন্দোলনও দাবানলের মত ছড়িয়ে পড়তে পারে। সব মিলে একটা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা। সে কারণেই ক্রিকেটার সাকিবকে সরকার দেশে ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগী ছিল না।

সাকিব খেলেননি সবশেষ বিপিএলেও। সেই সাকিব কি এবার দেশে ফিরে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে খেলতে পারবেন? সেটাই অনেক বড় প্রশ্ন।

Advertisement

সাকিবের ফেরা নিয়ে সংশয় আছে। তারপরও আজ শনিবার প্রিমিয়ার লিগের ২ দিনব্যাপী দলবদলের প্রথম দিন বিকেলে শেরে বাংলায় লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের স্বত্ত্বাধিকারি লুৎফর রহমান বাদল জানিয়ে দিলেন, সাকিব আল হাসানকে তার দলে নিয়েছে। ২২ ফেব্রুয়ারি অনলাইনে দলবদলের সমস্ত আনুষ্ঠানিকতা সম্পাদন করেছে দেশসেরা অলরাউন্ডার।

বলে রাখা ভালো, মাঝে দুই মৌসুম মোহামেডানের হয়ে খেললেও গত লিগে সাকিব ছিলেন শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের পক্ষে।

সাকিবকে তো দলে নিলেন। তার পক্ষে কি দেশে ফিরে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের হয়ে প্রিমিয়ার লিগ খেলা সম্ভব? রূপগঞ্জ চেয়ারম্যান বাদলের জবাব, ‘অবশ্যই (আমরা শতভাগ আশাবাদী)। সেজন্যই তো ওকে দলে নেওয়া। না হলে আমরা নেব কেন, যদি সে না-ই খেলতে পারে!’

বাদল যোগ করেন, ‘আমরা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য দল করছি। দলের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ সাকিব আল হাসান। আমার সঙ্গে ওর কথা হয়েছে, আমেরিকাতে ছিল। ঘরের ছেলে ঘরে আসছে, এটাই সবচেয়ে বড় খবর।’

Advertisement

বাদল আরও বলেন, ‘আমরা রাজনীতিবিদ সাকিবকে দলে নেইনি, খেলোয়াড় সাকিবকে নিয়েছি। সাকিব দেশের সম্পদ। আমরা চাই না সে অচিরেই ঝরে যাক।’

এদিকে জানা গেছে, প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে সাকিবের দলবদল অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে অনলাইনে রূপগঞ্জে যোগ দেয়ার ঘটনা সরকারের ওপরের মহলের দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে। একটি সূত্র জানিয়েছে, ক্রীড়া মন্ত্রণালয় থেকে সাকিব ইস্যুতে রূপগঞ্জ কর্তাদের কাছে ফোনও এসেছে। সাকিবের সাথে দলটির কর্তাদের কী কথা হয়েছে, তাও নাকি জানতে চাওয়া হয়। স্বত্ত্বাধিকারী বাদল সেটা উল্লেখ না করলেও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাকিবের সাথে রূপগঞ্জের যা কথা হয়েছে; সেটাতে একটু যদি-কিন্তু আছে। সাকিব দেশে খেলার অনুমতি পেলেই কেবল তাকে খেলানোর প্রশ্ন। আর সাকিবকে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে কিনা, সেটা একান্তই সরকারের এখতিয়ার। সব অবস্থা বিচার বিশ্লেষণ করে সরকার সাকিবকে দেশে ফিরিয়ে আনতে চাইলেই কেবল তাকে রূপগঞ্জের হয়ে ঢাকার প্রিমিয়ার লিগ খেলতে দেখা যাবে। সেটা শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, তা সময়ই বলে দেবে।

এআরবি/এমএমআর/এমএস