রাজধানীর পদ্মা জেনারেল হাসপাতালে খতনা করানোর সময় এক শিশুর পুরুষাঙ্গ ছিদ্র করার ঘটনায় কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ কেন দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে শিশুর চিকিৎসায় পদক্ষেপ নিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
Advertisement
আদেশে ওই শিশুর মায়ের করা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দুই সপ্তাহের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে। এছাড়া এ সংক্রান্ত বিষয়ে পরবর্তী শুনানি ও আদেশের জন্য আগামী ২ মার্চ দিন ঠিক করেছেন আদালত।
ভিকটিম শিশুর মায়ের করা রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রুলসহ আদেশ দেন।
আদালতে রিট আবেদন করেন তেজগাঁওয়ের তেজকুনিপাড়া খেলার মাঠ এলাকার বাসিন্দা শিশুর মা কুলসুম বেগম। আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী তানভীর আহমেদ ও বিপ্লব পোদ্দার।
Advertisement
রিটে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক), পদ্মা জেনারেল হসপিটাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক মো. মিজানুর রহমানকে (ঢাকা শিশু হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার) বিবাদী করা হয়।
এর আগে গত বছরের (২০২৪ সালের) ২৩ জানুয়ারি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর দেওয়া এক অভিযোগে ওই শিশুর মা বলেন, আমার ছেলে ইসমাইলের বয়স দুই বছর। ছেলের প্রস্রাবের সমস্যা হওয়ায় ডা. মো. মিজানুর রহমানের চেম্বারে নিয়ে যাই। তখন ডাক্তার জানান দ্রুত মুসলমানি (খতনা) করালে তার প্রস্রাবের সমস্যা ঠিক হয়ে যাবে। তাই জরুরি ভিত্তিতে পদ্মা হাসপাতালে যোগাযোগ করতে বলেন।
এর আগে ২০২৩ সালের ১৫ মার্চ পদ্মা হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে ডা. মিজানুর রহমান আমার ছেলের খতনা করেন। পরে আমার ছেলেকে বাসায় নিয়ে গেলে আমি দেখিতে পাই তার প্রস্রাবের রাস্তার পিছনে নিচের দিকে ছিদ্র। আমি তাৎক্ষণিক বিষয়টি ডাক্তারকে অবহিত করি। তখন আমার ছেলের প্রস্রাবের রাস্তায় পাইপ দিয়ে রাখে। প্রথমবার ২৬ দিন, পরে আরও ১৭ দিন পাইপ দিয়ে রাখার পর আমার ছেলেকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শিশু হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যাই। শুধু ঢাকা মেডিকেল কিছু দিন ছাড়া অন্যরা অপারগতা (চিকিৎসায়) প্রকাশ করে।
কুলসুম বেগমের অভিযোগ, ওই চিকিৎসকের অবহেলার জন্য আমার ছেলের পুরুষত্ব নষ্ট হয়ে তার লিঙ্গের গোড়ায় ছিদ্র হয়ে জীবন বিপন্নের পথে চলে যাচ্ছে। এ সংক্রান্তে বিবাদীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করবেন বলে আর যোগাযোগ করেননি।
Advertisement
আইনজীবী তানভীর আহমেদ জানান, এ অভিযোগের পর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। গত বছরের ১৬ মার্চ ওই কমিটি রিপোর্টও দেয়, কিন্তু সেটা প্রকাশ করা হয়নি। এ অবস্থায় শিশুর মা হাইকোর্টে রিট করেন।
এফএইচ/ইএ/জিকেএস