জাতীয়

বিডিআরের পুরোনো পোশাকে আন্দোলনে সাবেক সদস্য

২০০৯ সালে ঢাকার পিলখানায় বিদ্রোহের অভিযোগে চাকরিচ্যুত ও মামলার আসামি হয়ে কারাবন্দি বিডিআর সদস্যদের মুক্তি এবং চাকরি ফেরতের দাবিতে বেশ কিছুদিন ধরে আন্দোলন করে আসছনে ভুক্তভোগী বিডিআর সদস্য ও তাদের পরিবারের সদস্যরা।

Advertisement

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সর্বশেষ কর্মসূচির অংশ হিসেবে সচিবালয়ের সামনের সড়কে খাদ্য অধিদপ্তরের সামনে অবস্থান নিয়েছেন তারা। এসময় এই বাহিনীর সাবেক এক সদস্যকে বিডিআরের পুরোনো পোশাকে জাতীয় পতাকা হাতে দেখা গেছে৷ ওই সদস্যের পোশাকের নেইমপ্লেটে ইকবাল নাম দেখা গেছে।

তাদের সচিবালয় ঘেরাওয়ের ঘোষণার পর থেকেই রাজধানীর শিক্ষা ভবন মোড়ে অতিরিক্ত পুলিশ ও জলকামান মোতায়েন থাকতে দেখা গেছে।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটের দিকে রাজধানীর শিক্ষা ভবন মোড়ে চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যদের বাধা দেয় পুলিশ। এ সময় জলকামান থেকে তাদের লক্ষ্য করে পানি ছোড়া হয়। তবে বাধা উপেক্ষা করে সচিবালয় অভিমুখে খাদ্য অধিদপ্তরের সামনে অবস্থান নেন তারা।

Advertisement

এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কর্মসূচি ঘোষণা করেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মাহিন সরকার। আন্দোলনরত বিডিআর সদস্যদের শপথ পাঠ করান তিনি। আলটিমেটাম শেষ হওয়ার পরে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

এদিকে এবার ছয় দফার সঙ্গে আরও ২ দফা যুক্ত করেছেন চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যরা।

তাদের ৮ দফা দাবিগুলো হলো-

১. পিলখানার ভেতরে ও বাইরে ১৮টি বিশেষ আদালত ও অধিনায়কের সামরিক আদালত গঠন করে যেসব বিডিআর সদস্যদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে তাদের সবাইকে চাকরিতে পুনর্বহাল করতে হবে এবং ক্ষতিপূরণ ও রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।

Advertisement

২. এরইমধ্যে হত্যা মামলায় খালাসপ্রাপ্ত এবং সাজা শেষ হওয়া জেলবন্দি বিডিআর সদস্যদের অনতিবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রহসনের বিস্ফোরক মামলা বাতিল করতে হবে।

৩. গঠিত কমিশন স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে কাজ করার জন্য প্রজ্ঞাপনে উল্লেখিত ব্যতীত শব্দ এবং কার্যপরিধি ২-এর (ঙ)নং ধারা বাদ দিতে হবে। একইসঙ্গে স্বাধীন তদন্ত প্রতিবেদন সাপেক্ষে অন্যায়ভাবে দণ্ডিত সব ধরনের নিরপরাধ বিডিআর সদস্যদের মুক্তি দিতে হবে এবং পিলখানা হত্যাকাণ্ডের সঠিক কারণ উদঘাটন, মূল ষড়যন্ত্রকারী, হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

৪. পিলখানা হত্যাকাণ্ডে শহীদ হওয়া ৫৭ সেনা কর্মকর্তা, ১০ বিডিআর সদস্যসহ সর্বমোট ৭৪ জনের হত্যাকারীর বিচার নিশ্চিত করতে হবে। একইসঙ্গে জেলের ভেতর মারা যাওয়া প্রত্যেক বিডিআর সদস্যের মৃত্যুর সঠিক কারণ উন্মোচন করতে হবে। অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়ে থাকলে দায়ী সবাইকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।

৫. পিলখানা হত্যাকাণ্ডে অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত সেনা কর্মকর্তাদের ফিরিয়ে আনতে হবে।

৬. সব শহীদ সেনা কর্মকর্তার লাশ পুনরায় তদন্তের মাধ্যমে সঠিকভাবে শনাক্ত করার ব্যবস্থা করতে হবে।

৭. স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস ধারণকারী বিডিআর নাম ফিরিয়ে আনতে হবে।

৮. পিলখানার হত্যাকাণ্ডে সব শহীদের স্মরণে জাতীয় দিবস ঘোষণা করতে হবে এবং শহীদ পরিবারের সব ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

এনএস/এএমএ/এমএস