জাতীয়

প্রাথমিকের নিয়োগ বাতিলের রায়ের প্রতিবাদে আদালতে বিক্ষোভ-কান্না

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে চূড়ান্ত ফলাফলে উত্তীর্ণ ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগের কার্যক্রম বাতিল করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। এই সংক্রান্ত রায় ঘোষণার পরপরই আদালতে উপস্থিত চাকরিপ্রার্থীরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। এসময় তারা হাইকোর্টের এজলাস কক্ষের সামনের বারান্দায় হইচই ও হট্টগোল করেন। এরপর চাকরিপ্রার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করেন সুপ্রিম কোর্ট চত্বরে।

Advertisement

এর আগে জারি করা এ সংক্রান্ত রুল যথাযথ ঘোষণা (অ্যাবসোলুট) করে বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রায় ঘোষণা করেন।

হাইকোর্ট তার রায়ে আপিল বিভাগের কোট সংক্রান্ত সর্বশেষ রায় অনুসরণ করে নতুন করে ফলাফল প্রকাশ করতে নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আখতার হোসেন মো. আবদুল ওয়াহাব।

এদিকে, বৃহস্পতিবার আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত ছিলেন তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে চূড়ান্ত ফলাফলে উত্তীর্ণরা। রায়ের পর সংশ্লিষ্ট হাইকোর্ট বেঞ্চের সামনে বিক্ষোভ শুরু করে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন তারা। এসময় হাইকোর্টের দরজার সামনে থাকা পুলিশকে সরিয়ে আদালতের এজলাস কক্ষে ঢোকার চেষ্টা করেন তারা। এক পর্যায়ে, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল বিক্ষোভকারীদের শান্ত থাকতে এবং আদালতের সামনে বিক্ষোভ না করার অনুরোধ করে তাদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। এর মধ্যে সুপ্রিম কোর্টে নিয়োজিত অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যরা এসে ২৪ নম্বর এনেক্স ভবনের সামনে থেকে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেন। পরবর্তীতে তারা সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ ছাড়েন।

Advertisement

আরও পড়ুন

তৃতীয় ধাপে প্রাথমিকের ৬৫৩১ শিক্ষকের নিয়োগ হাইকোর্টে বাতিল প্রাথমিকে পোষ্য কোটা বাদ, মেধার ভিত্তিতে ৯৩ শতাংশ শিক্ষক নিয়োগ

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে চূড়ান্ত ফলাফলে উত্তীর্ণদের নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা অনুসরণের অভিযোগে উত্তীর্ণদের ফলাফল প্রকাশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে নিয়োগ বঞ্চিত ৩০ প্রার্থী হাইকোর্টে রিট করেন। সে রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ১৯ নভেম্বর হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ আদেশ দেন। আদালত তার আদেশে এই নিয়োগ কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন। আর রুলে ৩১ অক্টোবর ফলাফল প্রকাশের বিজ্ঞপ্তি ও নিয়োগ বিষয়ে ১১ নভেম্বরের নির্দেশনা সংবলিত স্মারক কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। ওই রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে রায় দেন হাইকোর্ট।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় গত ২৩ জুলাই কোটাপদ্ধতি সংশোধনের পর প্রজ্ঞাপন জারি করে। এতে বলা হয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবরের জারি করা পরিপত্রসহ আগের এ-সংক্রান্ত সব পরিপত্র বা প্রজ্ঞাপন বা আদেশ রহিত করা হলো। ফলে আগের কোনো আদেশ বহাল থাকছে না। তবে রিটকারী পক্ষের আইনজীবী বলেন এই ৬ হাজার ৫৩১ জন প্রার্থীকে নির্বাচন করে নিয়োগের ক্ষেত্রে আগের সেই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা-২০১৯ অনুসরণ করা হয়। যেখানে নারী কোটা ৬০ শতাংশ, পোষ্য কোটা ২০ শতাংশ, ৪ শতাংশ অন্যান্য কোটা ছিল। তাই এই ফলাফল ও নিয়োগের বিষয় চ্যালেঞ্জ করে রিট করা হয়।

এফএইচ/এএমএ/এমএস

Advertisement