দেশজুড়ে

বাড়তি টাকায় বিক্রি হচ্ছে চকলেট-সিগারেট

ভ্যাট বা মূসক বৃদ্ধির তেমন প্রভাব পড়েনি ময়মনসিংহে। আগে যে দামে বিক্রি হতো সে দামেই সব ধরনের পণ্য বিক্রি করছে ব্যবসায়ীরা। তবে বাড়ানো হয়েছে সিগারেটসহ বিভিন্ন চকলেটের দাম।

Advertisement

রোববার (২৫ জানুয়ারি) বিকেলে সরেজমিনে শহরের গাঙ্গিনারপাড় এলাকায় বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা যায়, সব পণ্য আগের দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে প্রভাব পড়েছে সিগারেট ও বিভিন্ন চকলেটে। কোম্পানি ডিলারদের কাছে বেশি দামে বিক্রি করছে। ফলে ডিলাররা পাইকারসহ খুচরা দোকানিদের কাছে বেশি দামে বিক্রি করায় ক্রেতারা নির্ধারিত দামে কিনছেন।

গাঙ্গিনারপাড় এলাকার মেছুয়া বাজারে প্রদীপ স্টোরের মালিক প্রদীপ সাহা সিগারেটের ডিলার। তিনি বলেন, আগে এক কার্টন (১০ প্যাকেটে ২০০পিস) বেনসন সিগারেট পাইকারি ও খুচরা দোকানিদের কাছে তিন হাজার ২৪০ টাকা বিক্রি করেছি। গত ৯ জানুয়ারি সরকার ভ্যাট বৃদ্ধির পরদিন কোম্পানি দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এরপর থেকে আমরা পাইকারিভাবে তিন হাজার ৬৮০ টাকায় বিক্রি করছি। দোকানিরা ক্রেতাদের কাছে আরও লাভ করে পিস হিসেবে বিক্রি করছে।

একই বাজারের পুরাতন ব্যবসায়ী মোস্তাকিম বিল্লাহ। তিনি আকন্দ স্টোরের মালিক। মোস্তাকিম বিল্লাহ জাগো নিউজকে বলেন, আমার দোকানে সাবান, টিস্যু, জুসসহ সব ধরনের নিত্যপণ্য বিক্রি হয়। ১০০ গ্রামের একটি লাক্স সাবান আগে ৫৫ টাকায় বিক্রি হতো। এখনো একই দামে বিক্রি হচ্ছে।

Advertisement

তবে ঢাকা লিটন নামের কনফেশনারি দোকানের কর্মচারী মো. আরাফাত জানিয়েছেন, অন্যান্য পণ্য আগের দামে বিক্রি হলেও দাম বেড়েছে চকলেটের। আগে বড় এক পিস কিটক্যাট চকলেট ৭০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন প্যাকেটের গায়ে ৭৫ টাকা মূল্য লেখা হয়েছে। ফলে তারাও এ দামে বিক্রি করছেন। এছাড়া ১৬০ টাকার ডেইরি মিল্ক চকলেট এখন ১৯০ টাকা, স্নিকার্স চকলেট ২৫ টাকা থেকে এখন ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এক প্রশ্নে তিনি বলেন প্রাণের চকলেটসহ অন্যান্য খাদ্যপণ্যের দাম এখনো বাড়েনি। ফলে আমরা আগের দামে বিক্রি করতে পারছি। বিভিন্ন কোম্পানির বিস্কুট পুরাতন দামে বিক্রি হচ্ছে। আমরাও চাচ্ছি, দাম না বাড়ুক। কারণ দাম বাড়লে আমরা বেশি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হই। ফলে পণ্য কিনতে কষ্ট হয় ভোক্তাদের।

শিশুর জন্য চকলেট কিনেছিলেন বেসরকারি চাকরিজীবী আসাদুজ্জামান সুমন। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, দুই পিস কিটক্যাট চকলেট কিনেছি ১৫০ টাকায়। অথচ কিছুদিন আগেও প্রতি পিসে পাঁচ টাকা দাম কম ছিল। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আমাদের মতো ক্রেতারা।

আবুল কালাম আজাদ নামের আরেকজন ক্রেতা বলেন, এমনিতে জিনিসপত্রের দামের কারণে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের লোকজনের সংসার চালাতে কষ্ট হচ্ছে। এরমধ্যে আরও দাম বাড়ানো হলে কষ্টের সীমা থাকবে না। দাম বাড়ানোর পরিবর্তে, সব ধরনের পণ্যের দাম পুরাতন দামের চেয়েও কমানো প্রয়োজন।

Advertisement

মেছুয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুবাস সাহা বলেন, প্রায় সব পণ্যের গায়ে আগের দামই লেখা রয়েছে। তাই বাজারে ভ্যাট বা মূসক বৃদ্ধির প্রভাব পড়েনি। তবে কোম্পানি নতুন পণ্যের গায়ে দাম বেশি লিখে দিলে দোকানিসহ ডিলাররাও দাম বাড়িয়ে দিতে বাধ্য হবে। ফলে ক্রেতাদের বেশি দামে কিনতে হবে।

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সিনিয়র সহ-সভাপতি শংকর সাহা বলেন, ব্যবসায়ীদের বলেছি, কোম্পানি দাম না বাড়ালে আপনারা এক টাকাও বাড়িয়ে বিক্রি করবেন না। ব্যবসায়ীরাও সে অনুযায়ী বিক্রি করছেন।

এর আগে গত ৯ জানুয়ারি এনবিআরের ভ্যাট বিভাগ শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বাড়ায়। পরে সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীদের সমালোচনা এবং চাপের মুখে ৯টি পণ্য ও সেবার ওপর আরোপ করা বর্ধিত ভ্যাট প্রত্যাহার করে সরকার।

কামরুজ্জামান মিন্টু/আরএইচ/জিকেএস