সরকারি চাকরির নিয়োগে প্রার্থীর রাজনৈতিক পরিচয় জানতে চাওয়ার প্রথা বাতিলের প্রস্তাব দিয়েছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন।
Advertisement
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে প্রতিবেদন জমা দেন জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী। এরপর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং প্রতিবেদনটির নির্বাহী সারসংক্ষেপ প্রকাশ করে।
পুলিশ ভেরিফিকেশনের বিষয়ে সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে, পদোন্নতির ক্ষেত্রে পুলিশ বা কোনো গোয়েন্দা বিভাগের কাছে রাজনৈতিক পরিচয় জানতে চাওয়ার প্রথা বাতিল করার জন্য সুপারিশ করা হলো। কারণ জনপ্রশাসনে রাজনীতিকীকরণ এ স্তর থেকেই শুরু হয়। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের আগে কোনো প্রার্থীর পুলিশ ভেরিফিকেশন করা যাবে না।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় চূড়ান্ত নিয়োগের আগে পুলিশ বিভাগের কাছে শুধু সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর বিরুদ্ধে কোনো ফৌজদারি মামলা আছে কি না সে সম্পর্কে প্রতিবেদন চাইবে। প্রয়োজনে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় দুর্নীতি দমন কমিশনের কাছে প্রতিবেদন চাইতে পারে।
Advertisement
এতে বলা হয়, পুলিশ ভেরিফিকেশন কার্যক্রম পাবলিক সার্ভিস কমিশনের পরিবর্তে প্রার্থীর যোগদানকৃত মন্ত্রণালয় সম্পাদন করবে।
এছাড়া পাসপোর্ট, দ্বৈত নাগরিকত্ব, সমাজসেবা সংস্থা বা এনজিওর বোর্ড গঠনের মতো নাগরিক সেবার ক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশন কার্যক্রম বাতিল করার জন্যও সুপারিশ করা হলো। একজন নাগরিকের জাতীয় পরিচয়পত্র ও সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র থাকলে তার বিষয় নিষ্পত্তি করা যেতে পারে।
রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণের বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোনো সরকারি কর্মকর্তা কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে বা বিপক্ষে আয়োজিত কোনো কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না মর্মে নির্দেশনা জারি করা যেতে পারে।
বিশেষ করে বিভিন্ন সার্ভিসের নামে যেসব সমিতি রয়েছে তারা কোনো রাজনৈতিক দল বা নেতার পরিচয় দিয়ে সরকারের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বা দাবি আদায়ের জন্য কোনো বিক্ষোভ বা প্রতিবাদ সমাবেশ করতে পারবেন না। ব্যক্তি হিসেবে কেউ সংক্ষুদ্ধ বা বৈষম্যের শিকার হলে তার প্রতিকারের জন্য তিনি বিধি মোতাবেক আবেদন করতে পারবেন বলে প্রতিবেদনে সুপারিশ করেছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন।
Advertisement
পাসপোর্ট দেওয়ার জন্য পুলিশ ভেরিফিকেশন কার্যক্রম বাতিল করার জন্য সুপারিশ করেছে কমিশন।
এতে বলা হয়, নাগরিকদের পাসপোর্ট পাওয়া মৌলিক অধিকার। দেশের নাগরিকদের সহজে পাসপোর্ট দেওয়া একটি রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব। পাসপোর্ট দেওয়ার জন্য পুলিশ ভেরিফিকেশন কার্যক্রম বাতিল করার জন্য সুপারিশ করা হলো। কোনো নাগরিকের ক্ষেত্রে আপত্তি থাকলে তাকে বিমানবন্দরেই যাচাই করা যেতে পারে। তাছাড়া পুলিশের হাতে ফৌজদারি মামলার আসামিদের তালিকা অনলাইনে সহজলভ্য থাকতে পারে।
আরএমএম/এমএইচআর/জেআইএম