রাজনীতি

৫২ এবং একাত্তরে যারা দেশের জন্য জীবন দিয়েছেন তাদের ইতিহাস গৌরবের

যারা দেশের জন্য জীবন দেন তাদের ইতিহাস গৌরবের বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।

Advertisement

তিনি বলেন, ‘কিছু ইতিহাস মানুষের জন্য হয় আনন্দের, কিছু হয় বিষাদের, আর কিছু হয় গৌরবের। বিশেষত যারা দেশের জন্য জীবন দেন, অতীতেও দিয়েছেন, ৪৭ সালে, বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন ও একাত্তরে এবং সর্বশেষ চব্বিশের জুলাইয়ে। তাদের ইতিহাস গৌরবের।’

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। চব্বিশের রক্তস্নাত গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের তথ্য সম্বলিত ‘২য় স্বাধীনতার শহীদ যারা’ শীর্ষক স্মারক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জামায়াতে ইসলামী।

অনুষ্ঠানে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সময়ে যারা বিদেশে বসে বাক এবং কলমযুদ্ধ চালিয়েছিলেন, দেশের মাটিতে তাদের পরিবারকে হেনস্তা করেছে, জেলে পুরে দেওয়া হয়েছে। এমনকি নারীদেরও ছাড় দেওয়া হয়নি। তাদের (আওয়ামী লীগের) রুচি যে কত নিম্নস্তরের ছিল, এসব কর্মকাণ্ড থেকেই তা বোঝা যায়।’

Advertisement

তিনি বলেন, ‘যারা নিজেদের জীবন বিলিয়ে দিয়ে আমাদের আজকের এই পরিবেশ উপহার দিলেন তাদের প্রতি আমি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। একটা দায়িত্বশীল দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর কিছু করণীয় আছে বলে আমরা মনে করি। চব্বিশের আন্দোলনে আমরাও শহীদ ছিলাম। আন্দোলনের মাধ্যমে পুরো জাতি যেমন মুক্তি পেয়েছে, সবচেয়ে নির্যাতিত রাজনৈতিক দলটিও একইভাবে মুক্তি পেয়েছে। সুতরাং এই প্রজন্মের প্রতি কৃতজ্ঞতা আদায় করা প্রয়োজন। আমরা শহীদ পরিবারগুলোর কাছে গিয়েছি, তাদের প্রতি সম্মান দিতে ও তাদের থেকে দোয়া নিতে। কারণ, তারা সৌভাগ্যবান, তাদের পরিবার দেশের জন্য জীবন দিয়েছে।’

আরও পড়ুন জামায়াতে ইসলামী জাতিকে বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ উপহার দেবে  আওয়ামী লীগ নামে বাংলাদেশে রাজনীতি করতে পারবে না 

জামায়াত আমির বলেন, ‘দেশ আমাদের সবার। কিন্তু দিনশেষে দেশের পাহারাদারিত্ব করা কিন্তু সব নাগরিকের কর্ম নয়। এই কাজ কিছু লোক করে। আবার কিছুলোক নাগরিকদের শান্তি কেড়ে নেওয়ার মতো অপকর্মে লিপ্ত হয়। আর অপকর্মটি যারা করে, তারা এটিকে তাদের পেশা মনে করেই করে। একটা সময় তা নিজের অধিকার বলেই মনে করে, আর জনগণকে নিজের প্রজা মনে করে, নিজেরা রাজা হয়ে বসে। কিন্তু গাছের ডালে যখন ঝাঁকুনি দেওয়া হয়, ডালের রাজারা তখন উড়ে গিয়ে পড়ে যায়।’

তিনি বলেন, ‘অতীতে যারা ফ্যাসিস্ট শাসক ছিল, তাদের নাম ধর্মগ্রন্থেও উঠে এসেছে। একই পরিণতি সবাইকে ভোগ করতে হয়। দুঃখের বিষয় হচ্ছে, ফ্যাসিস্টরা ইতিহাস পড়ে, কিন্তু তার থেকে শিক্ষা নেয় না। আমাদের দেশের ইতিহাস বিস্তৃতির ইতিহাস, বিকৃতির ইতিহাস। দেশের ইতিহাস অনেকে যার যার মতো রচনা করেছেন।’

জামায়াত আমির আরও বলেন, ‘আমরা এখনো পরিপূর্ণভাবে ইতিহাস রচনা করতে পারিনি। জুলাই আন্দোলনে আহতরা এখন হতাশায় পড়ে যাচ্ছেন। এসময় জাতির পক্ষ থেকে একটি দায়িত্বশীল ভূমিকা নিয়ে এগিয়ে যাওয়া দরকার।’

Advertisement

তিনি বলেন, ‘আবু সাঈদের শাহাদত ছিল জুলাই আন্দোলনের একটি টার্নিং পয়েন্ট। একটা নিভৃত পরিবারের ছেলে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। তিনি জেনেশুনেই শহীদ হওয়ার জন্য বুক পেতে দিয়েছিলেন। তার পথ ধরে বাকি শহীদরা বলেছেন আবু সাইদ আমার ভাই, আমরাও শাহাদতের সিঁড়িতে পা রাখতে চাই। শহীদ ভাইয়েরা তাদের পরিবারকে বলেছেন, আমরা যদি শহীদ হয়ে যাই তোমরা তাতে কেঁদো না। এতেই বোঝা যায় দেশের মানুষ কতটা নির্যাতিত ছিল।’

এএএম/কেএসআর/জিকেএস