শিশু ও নারীর প্রতি যৌন নিপীড়নের হার ভয়াবহ রকম হারে কেন বাড়ছে? এই বৃদ্ধির পেছনে ঠিক কী কী কারণ কাজ করছে? এর প্রথম উত্তর, এক শ্রেণির অপরাধীর মূল লক্ষ্য এরাই। এদের টার্গেট করেই তারা ব্যবসা করতে চায়। আর দ্বিতীয়ত হচ্ছে শিশু-নারী খুব সহজেই এই ফাঁদে পা রাখেন। ছোট শিশুদের জন্য এই ফাঁদ মিষ্টি কথা, আদর, চকলেট-চিপস, চানাচুর বা খেলনা দেয়ার টোপ। আর কিশোরী-তরুণীদের জন্য এই ফাঁদ হচ্ছে প্রেম-ভালবাসা, যৌনতা, অর্থ, চটকদার জিনিসপত্র, বিত্তময় জীবনের আশ্বাস, বিখ্যাত হওয়ার উপায় ইত্যাদি। আর এই টোপ ফেলার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা হয় ভার্চুয়াল মিডিয়া বা অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোকে। কারণ সব বয়সের নারী-পুরুষ সর্বক্ষণ এখানে অ্যাকটিভ থাকেন। শুধু অ্যাকটিভ থাকা নয়, মোহিত থাকেন। এছাড়া মিথ্যা কথার উপর ভিত্তি করে পারস্পরিক অফলাইন সম্পর্কতো আছেই।
Advertisement
রাজধানীর দক্ষিণখানের একটি স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়–য়া মেয়েটি মা-বাবার কাছে কেনাকাটার কথা বলে বাইরে বেরিয়েছিল। পরে আর বাসায় ফেরেনি। প্রায় ১৫ দিন পরে হাতিরঝিল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ছোট মেয়েটিকে হাত-পা বেঁধে পাঁচজন মিলে ধর্ষণের পর হত্যা করেছে। এধরনের অসংখ্য ঘটনা প্রতিদিন গণমাধ্যমে আসছে, এর চাইতে বেশি সংখ্যক ঘটনার খবর অপ্রকাশিতই থেকে যাচ্ছে।
ঠিক ধর্ষণ কত হচ্ছে, কত শিশু-নারী এই কারণে মারা যাচ্ছেন এসব নিয়ে আলোচনা করার বাইরে কথা বলতে চাইছি, কেন নারী-শিশু বেশি বেশি যৌন হয়রানি ও ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন? যেমন এই কিশোরীটির সাথে ফেইসবুকে পরিচয় হয় একজনের। তার সাথে দেখা করতে গিয়ে মেয়েটিকে শেষপর্যন্ত গ্যাং রেপের শিকার হয়ে খুন হতে হয়। আর সে কারণেই দেখা যাচ্ছে, যেকোনো পরিস্থিতিতে নারীকে হেনস্তা করার, ঘায়েল করার বা ফাঁদে ফেলার ‘সহজ অস্ত্র’ হিসেবে বেছে নেওয়া হচ্ছে সাইবার জগৎকে। সাইবার জগতে নারীর প্রতি সহিংসতায় পরিচিত-অপরিচিত, সাবেক স্বামী, সাবেক প্রেমিক, অনলাইন বন্ধু, সহপাঠী-বন্ধু, প্রতিবেশী কেউ পিছিয়ে নাই। প্রেম বা ভালোবাসার টোপ দিয়ে এমনভাবে মেয়েদের এই জালে জড়িয়ে ফেলা হয়, যেখান থেকে তাদের পক্ষে বেরিয়ে আসা খুব কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়।
বাংলাদেশে ৩২ শতাংশ শিশু-কিশোর অনলাইনে ঝুঁকির মুখে রয়েছে। ইউনিসেফ বলছে, বাংলাদেশে ইন্টারনেটের ব্যবহার ব্যাপক বেড়েছে। অন্যদিকে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের গড় বয়স কমছে। তাহলে স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে অনলাইনটা সবচেয়ে বড় ফাঁদ শিশু, কিশোরী ও তরুণীদের জন্য। এদের সাথে প্রথমে বন্ধত্বের সম্পর্ক স্থাপন করা হয়। এরপর প্রেম, ভালবাসা, টিকটক স্টার বানানোর প্রতিশ্রুতি। সাইবার জগৎটা অনেক বড়। এর ডালপালাও মাকড়শার জালের মতো নানাধরণের চেহারা নিয়ে চারিদিকে বিস্তৃত। কাজেই এই মাকড়শার জালে কখন, কে, কীভাবে ধরা পড়ে যাবে, তা বোঝাটা রীতিমতো চ্যালেঞ্জিং।
Advertisement
খুব স্বল্প সংখ্যক শিক্ষিত ও প্রযুক্তি বিষয়ে অভিজ্ঞ মানুষ ছাড়া, সাধারণদের পক্ষে এই বিষয়টি বোঝা সম্ভব নয়। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য এই জগতের দুয়ার যতোটা খোলা বা যতোটা নাগালের মধ্যে, শিশুদের জন্য ঠিক ততটাই খোলা বা নাগালের মধ্যে। ঠিক এই জায়গাটায় নারী-মেয়েশিশু, অভিভাবক, পরিবার, শিক্ষক, সমাজ ও রাষ্ট্র অনেকটাই পিছিয়ে আছেন অপরাধ জগতের অপরাধীদের চাইতে। এরা ছলেবলে, কৌশলে মেয়েদের কবজা করে।
যারা এ ধরনের অপরাধে জড়িত তারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অনলাইন প্ল্যাটফর্মের বাইরে ফোন কলের মাধ্যমেও গুটি বিস্তার করে। দেখা যায় এরা মিথ্যা বা ভুয়া ফেইসবুক আইডি খোলে এবং এর মাধ্যমেই প্রাথমিক পর্যায়ে রিকোয়েস্ট পাঠায়। সেখান থেকে ধীরে ধীরে ভাবের আদান-প্রদান করতে করতে নারীর দুর্বলতাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করে। আর এই দুর্বল পয়েন্টটাই হয়ে ওঠে অসাধু ব্যক্তির প্রধান হাতিয়ার। কোন মেয়ে যদি একা থাকেন, ডিভোর্সি হন, প্রেমে ব্যর্থ হন, পারিবারিকভাবে কষ্টের মধ্যে থাকেন, হতাশা-বিষন্নতায় ভোগেন, তাহলে তাদের পাশে বন্ধুর মতো দাঁড়ানোর চেষ্টা করে সেই মন্দ মানুষগুলো।
এমনকি চক্রান্তকারী ব্যক্তি একটু একটু করে নারীর চাহিদাও মিটাতে শুরু করে। কারণ বিশ্বাস বা আস্থা অর্জন না করলে নারীকে পুরোপুরি বশে আনা যায় না। যখন মেয়েটি বিশ্বাস করে পুরোপুরি ফাঁদে পড়ে যান, তখন তার সাথে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তোলে এবং ব্ল্যাকমেইল করা শুরু হয়। অন্তরঙ্গ সময়ের ছবি, নগ্ন ছবি, স্পর্শকাতর ছবি বা ভালো পোট্রেট ছবিও ব্যবহার করে মেয়েদের মন্দ কাজে ব্যবহৃত হতে বাধ্য করে।
এইজন্যই সম্পর্ক তৈরির সময় অনলাইনে যেমন সচেতন থাকতে হবে, তেমনি সচেতন থাকতে হবে অফলাইনেও। প্রেম মানেই চরম সমর্পণ নয়, বেশি অন্তরঙ্গতা নয়, একা একা হোটেলে বা কারো বাসায় যাওয়া নয়, নগ্ন ছবি বিনিময় নয় বা ওরাল সেক্সও নয়। কারণ কে যে কোথায়, কীভাবে ওৎ পেতে আছে, এটা জানা খুব কঠিন। কে, কীভাবে আপনাকে ব্যবহার করবে, তাও জানা সম্ভব নয়। এরপর নারীকে এমন কঠিন পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়, যখন সুইসাইড করতে হয়, খুন হতে হয়, ধর্ষণের শিকার হতে হয় বা অভিশপ্ত জীবন কাটাতে হয়।
Advertisement
কিশোরী ও তরুণী, এমনকি বয়স্ক নারীও বিচার-বিবেচনা না করেই প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ছেন। প্রেম করলেও যেমন সাবধান থাকতে হবে, অনলাইন অফলাইনে বন্ধু নির্বাচনেও তেমন সাবধান থাকতে হবে। পারতপক্ষে বাবা-মা, অভিভাবক বা পরিবারের থেকে লুকিয়ে গভীর সম্পর্কে জড়িয়ে পড়লে পথ হারানোর ভয় থাকে খুব বেশি। সর্বোচ্চ সতর্কতাই পারে এ ধরনের প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা করতে। তাই প্রত্যেক নারীকে নিজের সম্পর্কে সচেতন হতে হবে, যেন এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় জড়িয়ে না পড়ে। নারী কম সচেতন হলে বিপদে পড়ার আশঙ্কা বেশি থাকে।
আবার কেউ বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে দৈহিক সম্পর্ক করে। ভোগ করা হয়ে গেলে পালিয়ে যায় বা অস্বীকার করে। মেয়েটির পক্ষ থেকে এটা খুব ভুল পদক্ষেপ। কেন বিয়ের প্রতিশ্রুতি পেলেই একটি ছেলের শয্যাসঙ্গী হতে হবে? পরে প্রেমিকের বাড়িতে গিয়ে বিয়ের দাবি নিয়ে পড়ে থাকা কতটা সম্মানের হয়?
অনলাইনে হরহামেশা মেয়েরা কীভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন এর প্রমাণ দিচ্ছি -“গত বছরের নভেম্বরে ঝিনাইদহের কলেজ পড়ুয়া একটি মেয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে বন্ধু হওয়ার অনুরোধ পেয়ে তা গ্রহণ করেন। অ্যাকাউন্টটি মেয়ের নামে হলেও কিছুক্ষণ আলাপচারিতায় (চ্যাট) মেয়েটি বুঝতে পারেন, এটা কোনো ছেলের অ্যাকাউন্ট। একপর্যায়ে মেয়েটির ছবির মুখাবয়ব নিয়ে নগ্ন ভিডিও বানিয়ে তাঁকে পাঠিয়ে হয়রানি করা হতে থাকে। গত ৮ জানুয়ারি থেকে সপ্তাহজুড়ে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলায় ৮ স্কুলছাত্রীসহ ১৩ জনের ছবি দিয়ে পর্নো ভিডিও তৈরি করে ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর কাছে টাকা দাবি করা হয়। (প্রথম আলো)
অপ্রিয় হলেও সত্যি যে ইন্টারনেট, মোবাইল ফোনসহ বিভিন্ন অ্যাপ ও প্রযুক্তির ব্যাপক ও অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার আমাদের মেয়েদের বিপদের মুখে ফেলে দিচ্ছে। দেশে ইতোমধ্যে এমনও ঘটনা ঘটছে যে, গোপন ক্যামেরা দিয়ে তোলা নোংরা ভিডিও চিত্রে নিজেদের আপত্তিকর ছবি দেখে অনেক কিশোরী-তরুণী আত্মহননের পথও বেছে নিয়েছেন। এইসব ছবি নেটে দিয়েছে তাদেরই বন্ধু, প্রেমিক, সাবেক প্রেমিক ও সাবেক স্বামী। এই লোকগুলো পরবর্তীতে এই ছবিগুলো ব্যবহার করে মেয়েদের ব্ল্যাকমেইল করে।
স্কুলকলেজের ছাত্রছাত্রীদের কাছে পর্নোগ্রাফি এখন যেমন বিনোদনের একটি মাধ্যম, তেমন অনেকেই এগুলোকে ব্যবহার করে আয়ের উপায় হিসেবে। এরাই যেকোনোভাবে মেয়েদের ফাঁদে ফেলে। অভিভাবকদের অনেকেই প্রযুক্তির বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে অবগত নন বা সচেতন নন। তাই তারা বুঝতেই পারেন না বা ধারণা করতে পারেন না সন্তান প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঠিক কী দেখছে ও কী শিখছে? যেহেতু অনলাইনে মেয়েদের নিরাপদ রাখার যথেষ্ট ব্যবস্থা বাংলাদেশে নাই, তাই প্রাথমিক দায়িত্ব পরিবারকেই নিতে হবে।
‘সাইবার সহিংসতার শিকার নারীদের মনো-সামাজিক পরিবর্তন এবং বাংলাদেশে ফৌজদারি বিচারব্যবস্থার মূল্যায়ন’ শিরোনামের ২০২০-২১ সালে করা এক পিএইচডি গবেষণায় বলা হয়েছে, সাবেক প্রেমিকের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি সাইবার সহিংসতার শিকার হয়েছেন মেয়েরা। এ হার প্রায় ৩৩ শতাংশ। অনলাইন বন্ধুর মাধ্যমে ২০ শতাংশ, অপরিচিত ব্যক্তির মাধ্যমে ১৬ শতাংশ, সাবেক স্বামীর মাধ্যমে ১২ শতাংশ, বন্ধুর মাধ্যমে ৮ শতাংশ, সহকর্মী ও সহপাঠীর মাধ্যমে ৬ শতাংশ এবং স্বজনদের মাধ্যমে ৪ শতাংশ সহিংসতার শিকার হয়েছেন। ভুক্তভোগীদের প্রায় ৯০ শতাংশই শহরের বাসিন্দা। ভুক্তভোগীদের মধ্যে প্রায় ৩৭ শতাংশ শিক্ষার্থী, প্রায় ২৯ শতাংশ সরকারি ও ২০ শতাংশ বেসরকারি চাকরিজীবী এবং ১২ শতাংশ গৃহিণী। (প্রথম আলো)
অনলাইনে হয়রানির শিকার হয়েও আইনি পদক্ষেপ নেন না শতকরা ৮৮ ভুক্তভোগী। অথচ পুলিশ মনে করে যারা ভুক্তভোগী, তাদের উচিত পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানো। কেন ভুক্তভোগীরা তা করেন না? এ প্রসঙ্গে টাঙ্গাইলের এক স্কুলছাত্রীর মা বলেছিলেন, মানসম্মানের ভয়ে তিনি মামলা করতে চাননি। তাঁর ভাষায়, ‘আপনি আমি বুঝতে পারছি, এটা ভুয়া ভিডিও। কিন্তু সবাই এভাবে বুঝতে চায় না। এই ভিডিও যদি মেয়ের বিয়ের সময় ছড়িয়ে দেয়! আমার মেয়ের তো জীবন শেষ হয়ে যাবে!’
পুলিশ সাইবার সাপোর্ট ফর ওম্যান এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২০ সালের ১৬ নভেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ৪২ হাজার ৬৪২টি অভিযোগ এসেছে। এর মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ অভিযোগকারীই পরবর্তী সময়ে পূর্ণাঙ্গ তথ্য দেওয়া ও আইনগত ব্যবস্থা নিতে অনাগ্রহ প্রকাশ করেছেন। ওই গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, ৯০ শতাংশ অনলাইন সহিংসতার ক্ষেত্রে কোনো অভিযোগ করা হয় না। আইনি সহায়তার অভাবে ২৫ শতাংশ, হয়রানির ভয়ে ২৩ শতাংশ এবং সামাজিক মর্যাদা ক্ষুণ্ন হওয়ার ভয়ে ১৭ শতাংশ ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন না।
কারো সাথে সম্পর্ক স্থাপন বা বন্ধুত্ব করার ক্ষেত্রে অবশ্যই নিজের নিরাপত্তাকে সবচেয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। এমন কোনো পরিবেশে পা রাখা যাবে না, যেখানে বিপদ আছে। কারো মিষ্টি কথা ও ব্যবহারে ভোলার আগে অবশ্যই যাচাই-বাছাই করে বা ক্রস চেক করে নিতে হবে। দেশে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা বর্তমানে সাড়ে ১৬ কোটি ছাড়িয়েছে (বিটিআরসি, ২০১৯)।এই ব্যবহারকারীদের মধ্যে বিভিন্ন বয়স, পেশার, শিক্ষিত, নিরক্ষর,অশিক্ষিত ও স্বল্পশিক্ষিত মানুষ আছেন। মন্দ ও ভাল মানুষ আছেন। কাজেই ইন্টারনেট যে কে কীভাবে ব্যবহার করছেন, তা বোঝা খুব কঠিন।
বাংলাদেশে শিশুদের অনলাইন নিরাপত্তা নিয়ে ২০১৯ সালে ইউনিসেফের এক জরিপে অংশ নেওয়া ১৯ শতাংশ শিশু জানিয়েছে, ইন্টারনেটের অপর প্রান্তের ব্যক্তির কাছ থেকে তারা যৌনতাবিষয়ক অযাচিত বার্তা পেয়েছে। ১২ শতাংশ যৌনতাবিষয়ক ছবি বা ভিডিও পেয়েছে। ৫ শতাংশ জানিয়েছে, তাদের নগ্ন বা অর্ধনগ্ন ছবি-ভিডিও পাঠানোর জন্য জোর করা হয়েছে। ওই জরিপে ২৩৯টি স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার ১০ থেকে ১৭ বছর বয়সী ১২৮১ শিক্ষার্থী অংশ নেয়।
কাজেই বাবা-মা, পরিবারকে সচেতন হতেই হবে এবং সন্তানকে বোঝাতে হবে কীভাবে অনলাইন ব্যবহার করবে? পরিচিত-অপরিচিত মানুষের সাথে কীভাবে, কতটুকু মিশতে হবে। কিন্তু মুশকিল হচ্ছে সন্তানের ইন্টারনেট ব্যবহারের সক্ষমতা অনেক বেশি এবং অন্যদিকে অভিভাবকের রয়েছে প্রযুক্তিগত দুর্বলতা ও অসচেতনতা। অধিকাংশ ক্ষেত্রে অভিভাবকরা সন্তানকে অনলাইন ব্যবহারে বাধা দেন না, এমনকি নজরও রাখেন না। সন্তান যখন ঘণ্টার পর ঘণ্টা কোনোরকম নিয়মকানুন ও নিয়ন্ত্রণ ছাড়া অনলাইনে আসক্ত হয়ে পড়ে, তখন অপরাধী চক্র তাদের চিহ্নিত করে।
তাছাড়া স্কুল ও কলেজে সহপাঠীদের কাছ থেকেও তারা এইসব লিংকের খবর পান এবং নিজেরা সেই তথ্য আদান-প্রদান করেন। এক্ষেত্রে “পিয়ার প্রেশার” খুব বড় প্রভাব রাখে। ২৫ শতাংশের মতো শিশু-কিশোর ১১ বছর বয়সের আগেই ইন্টারনেট জগতে প্রবেশ করেছে, যে বয়সে একজনের ভালো-মন্দ বিচার করার বোধ তৈরি হয় না। ফলে না বুঝেই তারা ভুল পথে পা রাখছে। এদের পথ চিনিয়ে দেয়ার দায়িত্ব পরিবার, শিক্ষক ও মিডিয়াসহ এই সমাজের।
৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫লেখক : যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও কলাম লেখক।
এইচআর/এমএস