অর্থনীতি

অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের দরপতনেও বাজার মূলধন বাড়লো ৪ হাজার কোটি টাকা

গত সপ্তাহে দেশের শেয়ারবাজারে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে চার কার্যদিবসেই মূল্যসূচকের পতন হয়েছে। এক কার্যদিবসে মূল্যসূচক বাড়লেও দাম কমার তালিকায় ছিল বেশি প্রতিষ্ঠান। ফলে সপ্তাহজুড়ে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে।

Advertisement

ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় যে কয়টি প্রতিষ্ঠান স্থান পেয়েছে, তার প্রায় তিনগুণ প্রতিষ্ঠান রয়েছে দাম কমার তালিকায়। স্বাভাবিকভাবেই পতন হয়েছে সবকটি মূল্যসূচকের। সেই সঙ্গে কমেছে দৈনিক গড় লেনদেনের পরিমাণও। এই পতনের বাজারেও ডিএসইর বাজার মূলধন ৪ হাজার কোটি টাকার ওপরে বেড়েছে। 

গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৯৮টির স্থান হয়েছে দাম বাড়ার তালিকায়। বিপরীতে দাম কমেছে ২৭২টির। আর ২৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। অর্থাৎ দাম বাড়ার তালিকায় যে কয়টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে, তার ২ দশমিক ৭৮ গুণ বেশি প্রতিষ্ঠান রয়েছে দাম কমার তালিকায়।  

এমন দরপতনের বাজারে গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৬৪ হাজার ৮২৫ কোটি টাকা। যা আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৬ লাখ ৬০ হাজার ৫৮৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন বেড়েছে ৪ হাজার ২৩৮ কোটি টাকা বা দশমিক ৬৪ শতাংশ। আগের সপ্তাহে বাজার মূলধন বাড়ে ৩ হাজার ৬৪৭ কোটি টাকা বা দশমিক ৫৬ শতাংশ।

Advertisement

বাজার মূলধন বাড়লেও গত সপ্তাহে সবকটি মূল্যসূচকের পতন হয়েছে। ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স গত সপ্তাহে কমেছে ৫৩ দশমিক ৬৩ পয়েন্ট বা ১ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। আগের সপ্তাহে এই সূচক বাড়ে ৩২ দশমিক ৬১ পয়েন্ট বা দশমিক ৬৪ শতাংশ। তার আগের দুই সপ্তাহে কমে ৬০ দশমিক ৫১ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ১৬ শতাংশ এবং ৫ দশমিক ১৯ পয়েন্ট বা দশমিক ১০ শতাংশ। প্রধান মূল্যসূচকের পাশাপাশি গত সপ্তাহে কমেছে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক। গত সপ্তাহে সূচকটি কমেছে ৯ দশমিক ১৯ পয়েন্ট বা দশমিক ৪৮ শতাংশ। আগের সপ্তাহের সূচকটি বাড়ে ১৮ দশমিক ৭৭ পয়েন্ট বা দশমিক ৯৯ শতাংশ।

প্রধান ও ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত সূচক কমার পাশাপাশি কমেছে ইসলামি শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ সূচক। গত সপ্তাহজুড়ে এই সূচক কমেছে ২৭ দশমিক ৮৭ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৪০ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ১১ দশমিক ২১ পয়েন্ট বা দশমিক ৯৭ শতাংশ। 

সবকটি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের গতিও কমেছে। গত সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৩৩৮ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৪১২ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ৭৩ কোটি ৬৯ লাখ টাকা বা ১৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ।

সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে এডিএন টেলিকমের শেয়ার। কোম্পানিটির শেয়ার প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ১০ কোটি ৫৫ লাখ টাকার, যা মোট লেনদেনের ৩ দশমিক ১১ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা অগ্নি সিস্টেমের শেয়ার প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ৮ কোটি ১২ লাখ টাকা। প্রতিদিন গড়ে ৮ কোটি ১০ লাখ টাকা লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে খান ব্রদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ।

Advertisement

এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ব্র্যাক ব্যাংক, ড্রাগন সোয়েটার, ওরিয়ন ইনফিউশন, মালেক স্পিনিং, মিডল্যান্ড ব্যাংক, ফারইস্ট নিটিং এবং এসিআই।

এমএএস/এএমএ