তাবলিগ জামাতের বিভক্তি দূর করে ঐক্যবদ্ধ বিশ্ব ইজতেমার আয়োজন এবারো হয়নি। বরং এবারই প্রথম শুরায়ি নেজাম তাবলিগ জামাত টানা ছয় দিন ধরে দুই ধাপে ইজতেমা করছে। এতে ৬৪ জেলার মুসল্লিরা দুই ভাগে ভাগ হয়ে ইজতেমায় আসছেন। ইজতেমায় মুসল্লিদের সুবিধার্থেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে ইজতেমা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
Advertisement
এর আগে করোনা পরিস্থিতির কারণে ২০২১ ও ২০২২ সালে দুই বছর ইজতেমা বন্ধ ছিল। ২০২৩ সাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় তাবলিগ জামাতের বিশ্ব ইজতেমা।
সর্বশেষ ২০২০ সালে ইজতেমা অনুষ্ঠানের পর করোনা পরিস্থিতি ও তাবলিগের দ্বিধাবিভক্তির কারণে ২০২১ ও ২০২২ সালে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হতে পারেনি। ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত ইজতেমায় মুরব্বিদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০২১ সালের ৮, ৯ ও ১০ জানুয়ারি প্রথম পর্ব এবং ১৫, ১৬ ও ১৭ জানুয়ারি দ্বিতীয় পর্বে ইজতেমা হওয়ার কথা ছিল। ওই ইজতেমার প্রাক প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে জোড় ইজতেমাও অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে সরকারি বিধি নিষেধের কারণে ২০২০ সালের ১৯ ডিসেম্বর পাঁচ দিনের জোড় ইজতেমা সমাপ্ত হওয়ার পর তাবলিগের সাথীরা ২০২১ সালের ইজতেমা অনুষ্ঠানের অনিশ্চয়তা নিয়ে ময়দান ত্যাগ করেন।
গাজীপুরের কালিয়াকৈর থেকে আগত মুসল্লি ইসলাম উদ্দিন বলেন, মুসলমানদের মধ্যে বিভক্তি কোনো মতেই কাম্য নয়। তাই যে কোনো উপায়ে ইজতেমার দুই ধারাকে একত্র করা খুবই প্রয়োজন। সাধারণ মানুষ ইসলামের মধ্যে বিভক্তি পছন্দ করে না।
Advertisement
তাবলিগের মুরুব্বিরা বলেন, যদিও তাবলিগ জামাত দ্বিধাবিভক্ত হওয়ার পর ২০১৯ সাল থেকেই তাদের জোড় ইজতেমা ও বিশ্ব ইজতেমাসহ অন্যান্য নিয়মিত আয়োজনে ছন্দপতন ঘটছে। তবে এসব অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতেও তাবলিগ জামাতের প্রতি ধর্মপ্রাণ মানুষের আবেগ-আগ্রহের বিন্দু পরিমাণ কমতি হয়নি। তাবলিগের দ্বিন প্রচার কাজেও তেমন কোনো ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়নি।
তবে তাবলিগ জামাতের সাধারণ অনুসারীরা এ বিভক্তি চান না, তারা মনে করেন বাইরের তৃতীয় কোনো অদৃশ্য শক্তি এ বিরোধ জিইয়ে রেখেছে। তারা অবিলম্বে এই বিভক্তির অবসান ঘটিয়ে বিশ্ব ইজতেমা তথা তাবলিগ জামাতের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার দাবি জানান। শুক্রবার ইজতেমা ময়দানে তাবলিগ জামাতের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শীর্ষ স্থানীয় কয়েকজন মুরুব্বির সঙ্গে আলাপকালে তারা এসব কথা বলেন। এছাড়া সাধারণ মুসল্লিরাও সকল প্রকার বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ ইজতেমা চান।
আমিনুল ইসলাম/এফএ/এএসএম
Advertisement