কৃষি ও প্রকৃতি

বিনা চাষে সরিষার নতুন সম্ভাবনা, বাড়বে উৎপাদন

গাজীপুরের কালীগঞ্জ পৌরসভার বাঙ্গালহাওলা গ্রামে বিনা চাষে রিলে পদ্ধতিতে ৩ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষে নতুন সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। কৃষকদের আগ্রহের কারণে আগামীতে এ পদ্ধতিতে সরিষা চাষ আরও বাড়বে বলে মনে করছে কৃষি অফিস।

Advertisement

কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, বাঙ্গালহাওলা গ্রামের কৃষকেরা ২ হেক্টর রোপা আমন ধান জমিতে থাকা অবস্থায় বিনা চাষে রিলে পদ্ধতিতে বীজ বোনার মাধ্যমে সরিষা চাষ শুরু করেন। এ পদ্ধতিতে একটি ফসল জমিতে থাকাকালীন বিনা চাষে অন্য একটি ফসল রোপণ করা হয়। এতে অর্থ ব্যয় ও পরিশ্রম অনেক কম হয়। এ পদ্ধতিতে যে ফসল সবচেয়ে বেশি চাষ হয়, তার মধ্যে অন্যতম ধানের সঙ্গে সরিষা। সাধারণত বছরে দুই ফসলের জমি তিন ফসল চাষ করার অন্যতম উপায় এ পদ্ধতি।

রিলে পদ্ধতি নিয়ে কথা হয় ওই গ্রামের কৃষক মো. ফারুক, পুষ্পরাণী, আব্দুল মান্নান, পূর্ণিমা রাণী দাসের সঙ্গে। তারা জানান, আগে জমি খালি পড়ে থাকতো। এখন কৃষি অফিসের পরামর্শে ও সহযোগিতায় চাষ ছাড়াই রিলে পদ্ধতিতে সরিষা বুনেছেন। এতে বাড়তি সারেরও প্রয়োজন হয় না।

কালীগঞ্জ পৌরসভা ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. ছরোয়ার জাহান হিরো বলেন, ‘রিলে ফসল সম্পর্কে কৃষকদের অবগত করা হয়। তারা খুব সহজে এ প্রস্তাব গ্রহণ করেন। দ্রুতই আমন মৌসুমে ধান চাষের পরে যখন জমি পতিত থাকে; তখন এ সময়টা কৃষকদের রিলে পদ্ধতিতে সরিষা চাষে উদ্বুদ্ধ করেছি।’

Advertisement

আরও পড়ুন লবণাক্ত জমিতে সবজি চাষে অর্থনৈতিক বিপ্লব পুঁইশাক চাষে সফল সুফিয়া, আগ্রহী অন্যরাও

তিনি বলেন, ‘তারা সঠিক সময়ে রিলে পদ্ধতি গ্রহণ করার ফলে খরচ অনেক কম হয়েছে। তাছাড়া আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভালো আবাদও নিশ্চিত হয়েছে। সঠিক সময়ে ফসল ঘরে তোলার পাশাপাশি বোরো চাষে সময়ের কোনো অপচয় হবে না। কৃষকেরা সঠিক সময়ে বোরো চাষও করতে পারবেন।’

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ ফারজানা তাসলিম বলেন, ‘রোপা আমন ধান কাটার ১০-১৫ দিন আগে সাধারণত যেসব জমিতে জো আসে না বা পানি থাকে না কিন্তু জমি কাদা কাদা ভাব থাকে; সেসব জমিতে সরিষা ছিটিয়ে রোপণ করা হয়। একেই মূলত রিলে পদ্ধতি বলে।’

তিনি বলেন, ‘এ পদ্ধতিতে এক বিঘা জমির জন্য এক কেজি সরিষা বীজের প্রয়োজন হয়। এভাবে সঠিক সময়ে সরিষা চাষ করলে বোরো ধানও যথাসময়ে আবাদ করা যায়। রিলে পদ্ধতিতে চাষের মাধ্যমে কৃষকেরা অতিরিক্ত খরচ ছাড়াই বছরে দুটি ফসলের পরিবর্তে তিনটি ফসল পাচ্ছেন।’

আব্দুর রহমান আরমান/এসইউ/এএসএম

Advertisement