খেলাধুলা

প্লে-অফে কারা খেলবে, কোন দলের সম্ভাবনা কতটুকু?

খুলনা টাইগার্স ও ঢাকা ক্যাপিটালসের ম্যাচ দিয়ে ইতি ঘটেছিল বিপিএলের চলতি আসরের ঢাকা পর্ব। এরপর সিলেট ও চট্টগ্রাম ঘুরে আবার রাজধানী ঢাকায় ফিরছে বিপিএল। ২২ দিন পর আগামী ২৬ জানুয়ারি শেরে বাংলায় শুরু বিপিএলের শেষ পর্ব।

Advertisement

ডাবল রাউন্ড রবিন পদ্ধতিতে লিগ পর্বের মোট ৪২ ম্যাচের ৩২টি শেষ। এখন বাকি মাত্র ১০ ম্যাচ। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি শেষ হবে রবিন লিগের দ্বিতীয় পর্ব। তারপর পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ ৪ দল খেলবে নকআউট পর্বে। শীর্ষে থাকা দুই দল (প্রথম ও দ্বিতীয়) মুখোমুখি হবে কোয়ালিফায়ার-১ এ। ৩ ও ৪ নম্বর দলের দেখা হবে এলিমিনেটর পর্বে। এখন সবার কৌতুহলী প্রশ্ন, কোন ৪ দল খেলবে শেষ চারে? চট্টগ্রাম পর্ব শেষে টেবিলের যা অবস্থা, তাতে অতি বড় ক্রিকেট পণ্ডিতের পক্ষেও নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়; নকআউট পর্বে খেলবে কারা? তবে রংপুর রাইডার্সের নকআউট পর্বে পা রাখা একরকম নিশ্চিত।

গতকাল দুর্বার রাজশাহীর কাছে নবম ম্যাচে প্রথম হারের স্বাদ নিলেও টানা ৮ জয়ে আগেই প্রথম দল হিসেবে সেরা চারে খেলা নিশ্চিত রংপুরের। নুরুল হাসান সোহানের দলের আর ৩ ম্যাচ বাকি। এ পর্বে রাজশাহী, চিটাগং কিংস ও খুলনার বিপক্ষে খেলবে তারা। সবগুলো ম্যাচ হারলেও সোহানের দলের সুপার ফোরে খেলার সম্ভাবনা শেষ হবে না।

কারণ, সুপার ফোরের লড়াইয়ে থাকা বাকি দলগুলোর প্রায় প্রত্যেকের নিজেদের মধ্যে খেলা বাকি। সেখানে প্রচুর কাটাকাটি হবে। কাজেই রংপুরের নকআউট পর্বে খেলা নিয়ে কোনোই সংশয় নেই।

Advertisement

এখন দেখার বিষয় হলো, শেষ চারের অন্য ৩ দল কারা হয়? চট্টগ্রাম পর্ব শেষে সুপার ফোরের লড়াইয়ে দৌড়ে শরিক আছে ফরচুন বরিশাল, চিটাগং, খুলনা ও রাজশাহী। তবে সেই ৪ দলও সমান্তরালে নেই। তামিম ইকবালের বরিশাল আছে তুলনামূলক সুবিধাজনক অবস্থানে।

কারণ, পয়েন্ট পার্থক্যে বরিশালই আছে দ্বিতীয় অবস্থানে। ৮ ম্যাচে ৬ জয় ও ২ হারে বরিশালের পয়েন্ট ১২। শেষ পর্বে সবচেয়ে বেশি ৪ ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবে তামিমের দল। এ পর্বে বরিশালের খেলা সিলেট (২৬ জানুয়ারি), খুলনা (২৭ জানুয়ারি), ঢাকা (২৯ জানুয়ারি) ও চিটাগংয়ের বিপক্ষে (১ ফেব্রুয়ারি)। এই ৪ ম্যাচের একটিতে জিতলেও বরিশালের শেষ চারে থাকার সম্ভাবনা থাকবে প্রচুর। দুই বা ৩ ম্যাচ জিতলে তো কথাই নেই। হয়তো দ্বিতীয় স্থান পেয়েই নকআউট পর্বে পা রাখবে তামিম-বাহিনী। বাকি ২ পজিশন নিয়ে চিটাগং, খুলনা ও রাজশাহীর তুমুল লড়াই হচ্ছে। তবে এখানে চিটাগং ও খুলনার সম্ভাবনা একটু হলেও বেশি।

চিটাগং ৯ ম্যাচে ৫ জয়ে ১০ পয়েন্ট পেয়ে আপাতত তিনে। দলটির ঢাকার শেষ পর্বে খেলা বাকি ৩টি; রংপুর, সিলেট ও বরিশালের বিপক্ষে। এর মধ্যে পয়েন্ট টেবিলে সবার নিচে থাকা সিলেটের সঙ্গে জিতলেও চিটাগংয়ের শেষ চারে খেলার সম্ভাবনা বেশ উজ্জ্বল হবে। এছাড়া শীর্ষে থাকা রংপুর ও দ্বিতীয় স্থানে থাকা বরিশালের যে কাউকে হারাতে পারলেও চিটাগং চলে যাবে সুপার ফোরে। খুলনা ও রাজশাহীর সম্ভাবনাও শেষ হয়ে যায়নি। মেহেদী হাসান মিরাজের খুলনা আর তাসকিন আহমেদের রাজশাহীর পয়েন্ট সমান ৮ করে। তবে খুলনা এক ম্যাচ কম খেলেছে। অর্থাৎ, ঢাকায় আগামী এক সপ্তাহে মিরাজের দল আরও ৩ ম্যাচ খেলবে যথাক্রমে বরিশাল, রংপুর ও ঢাকার বিপক্ষে।

টেবিলের ওপরের দিকের রংপুর ও বরিশালের সঙ্গে লড়াইয়ে টিকে থাকা কঠিন হলেও ছয়ে থাকা ঢাকার চেয়ে শক্তিতে এগিয়ে খুলনা। কাজেই মিরাজের দলের চতুর্থ স্থান পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই পজিশন হতে পারে রাজশাহীরও। তাসকিনের রাজশাহীর পয়েন্ট ১০ ম্যাচে ৮। দলটির দুই ম্যাচ এখনো বাকি। একটি কঠিনতম প্রতিপক্ষ রংপুর, অন্যটি সিলেটের বিপক্ষে।

Advertisement

সবার নিচে থাকা সিলেটের সঙ্গে খালি চোখে ও কাগজে-কলমে তাসকিনের রাজশাহীই ফেবারিট। তাই রাজশাহীরও ১০ পয়েন্ট নিয়ে আসর শেষ করার সম্ভাবনা যথেষ্ঠ।

১০ পয়েন্ট হতে পারে ঢাকারও। লিটন দাস ও তানজিদ তামিমের দলের সংগ্রহ ১০ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট। শেষ দুই ম্যাচে ঢাকার প্রতিপক্ষ তুলনামূলক শক্তিশালী বরিশাল ও খুলনার বিপক্ষে। তাদের সঙ্গে পেরে ওঠা খালি চোখে কঠিন। তবে শেষ দিকে এসে ফর্মে ফেরা লিটন ও তানজিদ ব্যাট হাতে জ্বলে উঠতে পারলে ঢাকাও চমক দেখিয়ে চারে থাকার সম্ভাবনা জাগাতে পারে।

এর বাইরে সবার নিচে থাকা সিলেটেরও কাগজ-কলমের সমীকরণে ১০ পয়েন্ট পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। তলানিতে থাকা সিলেটের বর্তমান পয়েন্ট ৯ ম্যাচে ৪। বাকি ৩ ম্যাচ শক্তিশালী বরিশাল, রাজশাহী ও চিটাগংয়ের বিপক্ষে। বলার অপেক্ষা রাখে না, এই ৩ দলের সাথে পেরে ওঠা সিলেটের জন্য বেশ কঠিন। তারপরও খেলাটা ক্রিকেট; যার পরতে পরতে অনিশ্চয়তা। বিশেষ করে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ওঠা নামা আর অনিশ্চয়তার পালা আরও বেশি।

এআরবি/এমএইচ/এমএস