দেশজুড়ে

গাজীপুরের তিন কারাগার থেকে মুক্তি পাচ্ছেন ১২৬ বিডিআর সদস্য

গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পাচ্ছেন বিডিআরের ১২৬ জওয়ান। এরই মধ্যে (দুপুর দেড়টা পর্যন্ত) ১৬ জন মুক্তি পেয়ে কারাগার ছেড়েছেন। মুক্তির খবরে কারা ফটকে ভিড় জমিয়েছেন স্বজনরা।

Advertisement

কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে ২২ জানুয়ারি (বুধবার) কেরাণীগঞ্জ ও কাশিমপুর কারাগারে বিডিআর বিদ্রোহ মামলার ১৭৮ আসামির জামিননামা পাঠানো হয়। সেসব জামিননামা যাচাই-বাছাই শেষে অন্য কোনো মামলায় আটকাদেশ না থাকা শর্তে বন্দিদেরকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে।

জামিনে কারামুক্ত বিডিআর সদস্যদের মধ্যে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-১ থেকে ২৬ জন, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ থেকে ৮৯ জন ও হাই সিকিউরিটি কারাগার থেকে ১২ জনের মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে।

Advertisement

এর আগে গত ১৯ জানুয়ারি হত্যা মামলায় খালাসপ্রাপ্ত ও যাদের বিরুদ্ধে কোনো আপিল হয়নি এমন ২ শতাধিক আসামিকে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক জামিন দেন।

এদিকে বিস্ফোরক আইনের মামলায় ৮৩৪ জন আসামির বিরুদ্ধে বিচারকাজ শুরু হয় ২০১০ সালে। কিন্তু মাঝপথে বিস্ফোরক মামলার কার্যক্রম একপ্রকার স্থগিত রেখে শুধু হত্যা মামলায় সাক্ষ্য উপস্থাপন করে রাষ্ট্রপক্ষ। যে কারণে এ মামলার বিচার ঝুলে যায়।

ক্ষমতার পালাবদলে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনার তদন্ত পুনরায় শুরুর দাবি ওঠে। গত ১৯ ডিসেম্বর অভিযোগ নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যান শহীদ পরিবারের সদস্যরা। এই হত্যাকাণ্ড পুনঃতদন্তের জন্য গত ২৪ ডিসেম্বর আ ল ম ফজলুর রহমানকে প্রধান করে কমিশন গঠন করে ৯০ দিনের সময় বেঁধে দিয়েছে সরকার।

উল্লেখ্য ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদর দপ্তরে বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। ওই ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়। হত্যা মামলায় খালাস বা সাজাভোগ শেষে বিস্ফোরক মামলার কারণে ৪৬৮ জনের মুক্তি আটকে আছে।

Advertisement

হত্যা মামলায় ৮৫০ জনের বিচার শেষ হয় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর। যেখানে ১৫২ জনের ফাঁসি ছাড়াও ১৬০ জনের যাবজ্জীবন ও ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া খালাস পান ২৭৮ জন।

২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর সেই মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায় দেন হাইকোর্টে। রায়ে ১৩৯ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়। সেইসঙ্গে যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয় ১৮৫ জনকে। পাশাপাশি আরও ২২৮ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়। আর খালাস পান ২৮৩ জন।

তবে হাইকোর্টের রায়ের আগে ১৫ জনসহ সব মিলিয়ে ৫৪ জন আসামি মারা গেছেন। ফলে হত্যা মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে ২২৬ জন আসামি আপিল ও লিভ টু আপিল করেছেন। অন্যদিকে হাইকোর্টে ৮৩ জন আসামির খালাস এবং সাজা কমানোর রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। এসব আপিল ও লিভ টু আপিল এখন শুনানির অপেক্ষায়।

আমিনুল ইসলাম/এফএ/জিকেএস