ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন থেকেই মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় প্রথম স্থান অর্জন করেছেন সুশোভন বাছাড়। শিক্ষক বাবা সুভাস চন্দ্র বাছাড়ের একমাত্র সন্তান সুশোভন বাছাড় খুলনা মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্র ছিলেন।
Advertisement
রোববার (১৯ জানুয়ারি) বিকেলে প্রকাশিত ফলাফলে সুশোভন বাছাড় সর্বোচ্চ ৯০ দশমিক ৭৬ পেয়ে প্রথম হয়েছেন।
সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার আনুলিয়া ইউনিয়নে সুশোভনদের গ্রামের বাড়ি। খুলনা নগরীর বয়রাতে মা-বাবার সঙ্গে থাকেন। তার বাবা সুভাস চন্দ্র বাছাড় খুলনার টিঅ্যান্ডটি আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক। মা বন্দনা সেনও শিক্ষক ছিলেন। তবে এখন গৃহিণী। সুশোভন বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। সুশোভন টিঅ্যান্ডটি আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং খুলনা মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন।
সুশোভন বাছাড় বলেন, আমি অনেক খুশি। আত্মবিশ্বাস ছিল মেডিকেলে চান্স পাবো। তবে মেধা তালিকায় প্রথম স্থান পাবো ভাবতে পারিনি। আমি কখনো টাইম হিসেব করে পড়াশোনা করিনি। রাত জেগে কখনো পড়িনি। পড়াশোনার বাইরে খেলাধুলাও করতাম। তবে আমি বই পড়া খুব পছন্দ করি। গল্প, উপন্যাস থেকে শুরু করে সায়েন্স ফিকশন, থ্রিলার জাতীয় বই আমার খুব প্রিয়।
Advertisement
প্রশ্নের উত্তরে সুশোভন বাছাড় বলেন, ছোটবেলা থেকেই আমার ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছা ছিল। এই পেশাটাকে আমার অন্যরকম ভালো লাগে। ডাক্তারদের সাদা অ্যাপ্রোন খুব ভালো লাগে আমার। মনে হতো আমি যদি তাদের মতো হতে পারতাম। সেভাবেই পড়াশোনা করি।
সুশোভন বাছাড় প্রশ্নের উত্তরে বলেন, একজন ভালো ডাক্তার হওয়ার পাশাপাশি একজন ভালো মানুষ হতে চাই। ভালো মানুষ হয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা আমার পরিকল্পনা। দেশ গড়তে ছোট কিছু হলেও যেন আমি অবদান রাখতে পারি। আমার আশা আছে গরিবদের জন্য একটি আলাদা হাসপাতাল করার। আপনারা দোয়া করবেন।
সুশোভনের মা বন্দনা সেন বলেন, আমি শুনে প্রথমে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। তারপর কেঁদে ফেলেছিলাম। ছেলের স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হবে। দোয়া করি তার স্বপ্ন পূরণ হোক।
সুশোভনের বাবা সুভাস চন্দ্র বাছাড় বলেন, মেরিট লিস্টে প্রথম দেখে আমি বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। সুশোভনের স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হবে। সুশোভন আমাদের কথা শুনতো। সুশোভন সব পরীক্ষা দিয়ে আত্মবিশ্বাস নিয়ে নম্বর পাওয়ার ব্যাপারে ধারণা করে বলতো। রেজাল্টে দেখতাম সেরকমই নম্বর পেয়েছে। মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে বলেছিল ৯০ শতাংশের বেশি নম্বর পাবে। সেটাই হয়েছে। প্রথম হবে এটা ভাবিনি। তবে চান্স পাবে জানতাম।
Advertisement
তিনি আরও বলেন, সুশোভন কোনো অ্যাকাডেমিক কোচিংয়ে পড়েনি। ছোট থেকে সুশোভন বিভিন্ন ধরনের বই পড়ে। চেষ্টা করলে সফলতা আসবেই। চেষ্টা কখনো বিফলে যায় না।
খুলনা মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যাপক এ টি এম বদরুজ্জামান বলেন, সুশোভনের এমন সাফল্যে আমার খুব আনন্দ লাগছে। সে একজন মেধাবী শিক্ষার্থী। সে আমাদের গর্ব। সে ডাক্তার হয়ে দেশ ও জাতির জন্য কাজ করবে সেই প্রত্যাশা করি।
আরিফুর রহমান/এফএ/জিকেএস