আন্তর্জাতিক

বিদায়ী ভাষণে রাজনৈতিক জীবনের ইতি টানলেন বাইডেন

যুক্তরাষ্ট্রে একটি ‘বিপজ্জনক’ ধনিকতন্ত্রের উদ্ভব হচ্ছে বলে সতর্ক করেছেন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) নিজের বিদায়ী ভাষণে এই সতর্কবার্তা দিয়েছেন তিনি। এই ভাষণের মাধ্যমে নিজের দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনেরও ইতি টানলেন এই ডেমোক্র্যাট নেতা।

Advertisement

পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে ওভাল অফিস থেকে দেওয়া শেষ ভাষণে বাইডেন বলেন, আজ, যুক্তরাষ্ট্রে এমন একটি ধনিকতন্ত্র গড়ে উঠছে, যা বিপুল ধন-সম্পদ, ক্ষমতা ও প্রভাবের মাধ্যমে আমাদের গণতন্ত্র, মৌলিক অধিকার এবং স্বাধীনতার জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে।

বিশেষ করে, প্রযুক্তি শিল্পের শীর্ষ ধনীদের নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন ৮২ বছর বয়সী বাইডেন। তিনি বলেন, একটি টেক-ইন্ডাস্ট্রিয়াল কমপ্লেক্স এমন অপ্রতিরোধ্য ক্ষমতা ধরে রাখছে, যা আমেরিকানদের জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।

আরও পড়ুন>>

Advertisement

যুক্তরাষ্ট্রে বাইডেনের বিরুদ্ধে মামলা ছেলেকে ক্ষমা করতে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ব্যবহার করলেন জো বাইডেন পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে শেষ ভাষণে নিজেকে ‘সফল’ দাবি বাইডেনের

বিদায়ী ভাষণে বাইডেন জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে তার নেওয়া পদক্ষেপগুলো উল্লেখ করে বলেন, শক্তিশালী স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীগুলো জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় নেওয়া পদক্ষেপগুলো নষ্ট করতে চায়, তাদের নিজস্ব মুনাফা ও ক্ষমতার জন্য।

তথ্য বিভ্রান্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমেরিকানরা এখন মিথ্যা ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্যের সুনামির নিচে চাপা পড়ছে। এটি ক্ষমতার অপব্যবহারকে আরও সহজ করে তুলছে।

এসময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কোম্পানিগুলোরও কড়া সমালোচনা করেন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট। মেটা কর্তৃপক্ষ স্বাধীন ফ্যাক্ট-চেকারদের বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে ইঙ্গিত দিয়ে বাইডেন বলেন, সত্যকে দমন করা হচ্ছে, আর মিথ্যা ছড়ানো হচ্ছে শুধু ক্ষমতা এবং মুনাফার জন্য।

বাইডেন তার ভাষণে ডোনাল্ড ট্রাম্পের আসন্ন প্রশাসনকে শুভেচ্ছা জানালেও বেশ কিছু বিষয়ে সতর্ক করেন। তিনি বলেন, এখন অনেক কিছুই ঝুঁকির মুখে রয়েছে।

Advertisement

তিনি আরও বলেন, আমাদের একসঙ্গে করা কাজের পূর্ণ ফল পেতে সময় লাগবে। তবে বীজ বপন করা হয়েছে এবং সেগুলো আগামী কয়েক দশক ধরে ফল দেবে।

বিদায়ী ভাষণের দিন ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিরও ঘোষণা দেন জো বাইডেন। তিনি জানান, এই আলোচনা ছিল তার কূটনৈতিক জীবনের অন্যতম কঠিন কাজ। চুক্তি অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে আগামী ১৯ জানুয়ারি, ডোনাল্ড ট্রাম্পের দায়িত্ব গ্রহণের ঠিক একদিন আগে।

নতুন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও এই চুক্তির জন্য কৃতিত্ব দাবি করেছেন। তিনি বলেছেন, তার নির্বাচনী জয় ছাড়া এই চুক্তি সম্ভব হতো না।

বিদায়ী ভাষণ শেষে আমেরিকান নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বাইডেন বলেন, আপনারা যেন দেশের মশালরক্ষক হন এবং গণতন্ত্রকে আগলে রাখেন।

সূত্র: বিবিসিকেএএ/