আন্তর্জাতিক

আদানিকে নাড়িয়ে দেওয়া হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে

বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তোলা বিনিয়োগ গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন এর প্রতিষ্ঠাতা নাথান অ্যান্ডারসন। তার প্রতিবেদনের কারণে ভারতের আদানি গ্রুপ ও যুক্তরাষ্ট্রের নিকোলার মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়েছিল এবং কর্তৃপক্ষকে তদন্ত করতে উদ্বুদ্ধ করেছিল।

Advertisement

২০১৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ। সংস্থাটি বন্ধের কারণ হিসেবে অ্যান্ডারসন ‘তীব্র ও সর্বগ্রাসী’ কাজের চাপের কথা উল্লেখ করেছেন। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) প্রকাশিত এক পোস্টে তিনি বলেছেন, আমাদের ধারণাগুলো নিয়ে কাজ শেষ করার পর সংস্থা বন্ধ করার পরিকল্পনা ছিল। আজ সেই দিন।

শর্ট সেলিংয়ের মাধ্যমে উদ্ভাবনী প্রতিবেদন

হিন্ডেনবার্গের নামকরণ করা হয়েছিল ১৯৩৭ সালের হিন্ডেনবার্গ এয়ারশিপের দুর্যোগের স্মরণে। সংস্থাটি মানবসৃষ্ট বিপর্যয়, যেমন- হিসাবের অনিয়ম এবং দুর্নীতির ক্ষেত্রে নজরদারি করে আসছিল।

আরও পড়ুন>>

Advertisement

হিন্ডেনবার্গের দাবি, ভারতের পতাকায় শরীর ঢেকে দেশ লুট করছেন আদানি টালমাটাল আদানি গ্রুপ, তিন দিনে উধাও ৭০০০ কোটি ডলার ভারতে দুর্নীতি নিয়ে হিন্ডেনবার্গের নতুন রিপোর্ট, চাপে মোদী সরকার

হিন্ডেনবার্গ শর্ট সেলিং পদ্ধতির মাধ্যমে বিভিন্ন কোম্পানির আর্থিক অনিয়ম, দুর্নীতি এবং ব্যবস্থাপনার ত্রুটি প্রকাশ করতো। এরপর সংস্থাটি তাদের নিশানা করা কোম্পানির শেয়ারের দাম কমে যাওয়ার পূর্বাভাসে বিনিয়োগ করতো। হিন্ডেনবার্গের প্রতিবেদন দেখে অনেক বিনিয়োগকারীও শেয়ার বিক্রি করে দিতেন।

শর্ট সেলিং পদ্ধতিতে একজন বিনিয়োগকারী শেয়ার ধার নিয়ে বিক্রি করে এবং ভবিষ্যতে দাম কমে গেলে তা ফের কিনে নিয়ে লাভ করে। তবে দাম বেড়ে গেলে তাদের বিপুল ক্ষতির মুখে পড়তে হয়।

হিন্ডেনবার্গের ২০২৩ সালের একটি প্রতিবেদন আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলে যে, তারা অফশোর ট্যাক্স হ্যাভেন ব্যবহার করেছে। এই প্রতিবেদনের ফলে ভারতীয় সংস্থাটির বাজারমূল্যে ১০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি ক্ষতি হয়। আদানি গ্রুপ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

নিকোলার বিষয়ে হিন্ডেনবার্গ ২০২০ সালে অভিযোগ করেছিল যে, কোম্পানিটি তার প্রযুক্তিগত উন্নয়ন সম্পর্কে বিনিয়োগকারীদের বিভ্রান্ত করেছে। কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা ট্রেভর মিল্টনকে ২০২২ সালে প্রতারণার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।

Advertisement

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

অ্যান্ডারসন তার সিদ্ধান্তের পেছনে কোনো বিশেষ কারণ নেই বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, কোনো হুমকি, স্বাস্থ্য সমস্যা বা বড় কোনো ব্যক্তিগত সমস্যা নেই। কাজের তীব্রতার কারণে আমি জীবনের অনেক কিছু থেকে বঞ্চিত হচ্ছিলাম।

তিনি আরও জানান, পরবর্তী ছয় মাস আমি আমাদের মডেল এবং কীভাবে আমরা তদন্ত করি, সে সম্পর্কে বিভিন্ন উপকরণ ও ভিডিও তৈরি করতে চাই।

সূত্র: রয়টার্স, নিক্কেই এশিয়াকেএএ/