আন্তর্জাতিক

২০ কোটি মানুষকে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাবে ইন্দোনেশিয়া

আগামী মাস থেকে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা কর্মসূচি শুরু করতে যাচ্ছে ইন্দোনেশিয়া। তাদের লক্ষ্য, আগামী পাঁচ বছরে অন্তত ২০ কোটি মানুষকে এই সুবিধা প্রদান করা। প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তোর নেতৃত্বে দেশটির মানবসম্পদ উন্নয়নের অংশ হিসেবে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী বুদি গুনাদি সাদিকিন।

Advertisement

তিনি জানান, এই কর্মসূচি ছাড়াও ইন্দোনেশিয়ায় স্কুলের শিশুদের জন্য বিনামূল্যে খাবার সরবরাহের মতো প্রকল্প শুরু করা হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট প্রাবোওর ঘোষিত আট শতাংশ বার্ষিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্য পূরণে সহায়তা করা হবে।

আরও পড়ুন>>

ব্রিকসের পূর্ণ সদস্যপদ পেলো ইন্দোনেশিয়া ইন্দোনেশিয়ায় বেড়েছে ধনীদের সম্পত্তি ইন্দোনেশিয়ায় আকস্মিক বন্যায় ১০ জনের মৃত্যু

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, মানুষ যদি অসুস্থ থাকে এবং কাজ করতে অক্ষম হয়, তবে দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। সঠিক স্বাস্থ্যসেবা ছাড়া এমনকি মেধাবী ব্যক্তিও তার সর্বোচ্চ অবদান রাখতে পারবেন না।

Advertisement

লক্ষ্যমাত্রা ও বাজেট

দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম জনগোষ্ঠী এবং বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ ইন্দোনেশিয়া। নতুন কর্মসূচির আওতায় দেশটির ৭০ শতাংশ মানুষের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, যারা আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে এই সেবা নিতে পারেন না।

স্বাস্থ্যমন্ত্রীর মতে, এই ২০ কোটি মানুষ হয়তো তাদের জীবনে কখনো রক্তচাপ পরীক্ষা করাননি।

প্রথম বছরে ছয় কোটি মানুষের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে। এর জন্য ২০২৫ সালে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৪ দশমিক ৭ ট্রিলিয়ন রুপিয়া।

প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে ক্যানসার, ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপের মতো দীর্ঘমেয়াদি রোগ শনাক্ত করা হবে। শিশুদের ক্ষেত্রে অপুষ্টি এবং জেনেটিক রোগের মতো সমস্যা চিহ্নিত করা হবে।

Advertisement

মিশ্র প্রতিক্রিয়া

সরকারের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন অনেকে। বেকাসির ৭৫ বছর বয়সী ওনিহ এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, আমার পা দুর্বল হওয়ায় দূরে যাতায়াত করতে পারি না। আশা করি, নতুন কর্মসূচির আওতায় ঘরে ঘরে গিয়ে সেবা প্রদান করা হবে, যেমন কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছিল।

তবে বিশেষজ্ঞরা এই কর্মসূচির বাস্তবায়ন নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। দেশটির অনেক অঞ্চলে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র এবং ল্যাবের অভাব রয়েছে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ত্রুবুস রাহাদিয়ানসাহর মতে, স্থানীয় সরকারের বাজেট এরই মধ্যে অন্যান্য উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয় হচ্ছে। তাই নতুন কর্মসূচি চালু করার আগে বিদ্যমান সমস্যাগুলো সমাধান করা প্রয়োজন।

স্বাস্থ্য অর্থনীতিবিদ হাসবুল্লাহ থাব্রানি মনে করেন, বিনামূল্যের স্বাস্থ্য পরীক্ষা কর্মসূচি চালু করার পরিবর্তে বিপিজেএস কেশেহাতান প্রোগ্রামের কাঠামোগত উন্নয়ন করা উচিত। এতে জনগণ আরও উপকৃত হবে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, প্রত্যেক মানুষ যেন ৩০ মিনিট থেকে এক ঘণ্টার মধ্যে একটি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে পৌঁছাতে পারে, সেজন্য স্বাস্থ্য অবকাঠামো উন্নয়নে কাজ করা হবে। এছাড়া, জনগণকে ‘সাতু সেহাত’ নামে একটি অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন করতে হবে, যাতে তাদের জন্মদিনে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো যায়।

সূত্র: নিক্কেই এশিয়াকেএএ/