বিয়ের আর মাত্র চারদিন বাকি। কিন্তু তার আগে পরিবারের পছন্দমতো বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায় মেয়েকে পুলিশের সামনেই গুলি করে হত্যা করলেন বাবা। সিনেমার মতো মনে হলেও মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) রাত ৯টার দিকে ভারতের মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের গোয়ালিয়রে এই মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।
Advertisement
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহত তরুণীর নাম তনু। তিনি প্রকাশ্যে তার পরিবারের পছন্দ করা পাত্রকে বিয়ে করতে দ্বিমত করেন। আর এর জেরেই তার বাবা মেয়েকে পুলিশের সামনে গুলি করে হত্যা করেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, তনুর বাবা মহেশ গুর্জার, সোশ্যাল মিডিয়ায় তার মেয়ের পোস্ট করা একটি ভিডিও দেখে ক্ষুব্ধ হন। তনু সেই ভিডিওটি আগের দিন সামাজিকমাধ্যমে পোস্ট করেছিলেন। এটি দেখে রেগে গিয়ে দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে তাকে খুব কাছ থেকে গুলি করেন তার বাবা। এরপর তনুর চাচাতো ভাই রাহুল, যিনি মহেশের সহযোগী হিসেবে কাজ করে, সেও পরপর কয়েকটি গুলি চালিয়ে তরুণীর মৃত্যু নিশ্চিত করেন।
গুলি করার মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে তনু সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও রেকর্ডটি শেয়ার করেন। যেখানে তিনি বলেন, ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিয়ে করার জন্য পরিবার তাকে চাপ দিচ্ছে। ৫২ সেকেন্ডের ভিডিওটিতে, তিনি তার বাবা মহেশ ও পরিবারের অন্য সদস্যদের এজন্য দায়ী করেন।
ভিডিওতে তনু বলেন, আমি ভিকিকে বিয়ে করতে চাই। আমার পরিবার প্রথমে রাজি হলেও, পরে ভিকিকে প্রত্যাখ্যান করে। তারা আমাকে প্রতিদিন মারধর করে ও হত্যার হুমকি দেয়। যদি আমার কিছু হয়, তাহলে আমার পরিবার দায়ী থাকবে। বিক্রম ভিকি মাওয়াই উত্তর প্রদেশের আগ্রার বাসিন্দা ও ছয় বছর ধরে তনুর সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল।
Advertisement
ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর, সুপারিনটেনডেন্ট ধর্মবীর সিংয়ের নেতৃত্বে পুলিশ কর্মকর্তারা বিষয়টি সুরাহা করতে তনুর বাড়িতে ছুটে যান। একপর্যায়ে তনু বাড়িতে থাকতে অস্বীকৃতি জানান। নিরাপত্তার জন্য তাকে ওয়ান-স্টপ সেন্টারে নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করেন। কিন্তু তার বাবা মহেশ তার সঙ্গে একান্তে কথা বলার জন্য জোর করেন। তিনি তাকে রাজি করাতে পারবেন বলে জানান মহেশ। এরপর পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে ওঠে।
তনু বাবার কথায় রাজি না হলে মহেশ তার মেয়ের বুকে গুলি চালান। একই সঙ্গে তনুর কপাল, ঘাড়সহ চোখ ও নাকের মাঝখানে গুলি চালান তার চাচাতো ভাই রাহুল। তনু তাৎক্ষণিক লুটিয়ে পড়েন ও প্রাণ হারান। এ ঘটনার পর মহেশকে আটক করা হয়েছে। কিন্তু রাহুল পালিয়ে যান।
সূত্র: এনডিটিভি
এসএএইচ
Advertisement