অর্থনীতি

মানুষের ওপর চাপ না বাড়িয়েও রাজস্ব বাড়ানো যেত: গোলাম রহমান

সম্প্রতি নতুন করে শতাধিক পণ্যে বেড়েছে শুল্ক-কর। এতে চাপ বাড়বে দৈনন্দিন জীবনে খরচের। এ নিয়ে জাগো নিউজের সঙ্গে কথা বলেছেন সাবেক বাণিজ্য সচিব ও ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সদ্য সাবেক সভাপতি গোলাম রহমান।

Advertisement

তিনি বলেন, জনগণের ওপর ভ্যাটের চাপ না বাড়িয়ে রাজস্ব সংগ্রহ বাড়ানো যেত। এতে সরকারের যে বেশি রাজস্ব ও ভর্তুকির প্রয়োজন, সেটা মেটানো যেত। এভাবে ভ্যাট বাড়ালে মানুষের জীবনযাত্রা আরও কষ্টকর হবে।

‘মানুষ যে পরিমাণ ভ্যাট সরকারকে দিচ্ছে সেটা সংগ্রহ ঠিক মতো হয় না। সেটাতে জোর দেওয়া উচিত ছিল। ধরুন, আমরা সবাই মিষ্টি কিনি, ভ্যাট দেয়। কিন্তু সব মিষ্টির দোকান থেকে সরকার সেই ভ্যাট ঠিক মতো পায় কি না, সেটি কেউ দেখে না। আমার ধারণা, দেশের এমন ছোট ছোট ভ্যাট আদায়যোগ্য অধিকাংশ ব্যবসায়ী ভ্যাট ফাঁকি দিচ্ছে। এখন নতুন দেশে নতুন সরকার এ বিষয়টি সমাধান করতে পারতো। তাতে যেমন রাজস্ব ও ভর্তুকির সমস্যা সমাধান হতো, মানুষও স্বস্তি পেত।’

গোলাম রহমান বলেন, গত দেড় দশক ধরে ভ্যাট মেশিন বাধ্যতামূলক করা হলেও এখন পর্যন্ত মেশিন বসেনি। এনবিআর (জাতীয় রাজস্ব বোর্ড) একেক সময় একেক ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়। আর যারা ভ্যাট ফাঁকি দেয় তাদের অনাগ্রহের কারণে ইলেকট্রনিক ক্যাশ রেজিস্ট্রার (ইসিআর) কিংবা ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস (ইএফডি) বসানোর কর্মসূচি এখনো সাফল্যের মুখ দেখেনি। এসবে জোর দেওয়া যেত।’

Advertisement

আরও পড়ুন জ্বালানি খাত সংস্কারে ক্যাবের ১১ দাবি যেসব পণ্য কেনায় গুনতে হবে বাড়তি টাকা রাজস্ব ও ভর্তুকির জন্য ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে: খাদ্য উপদেষ্টা

সাবেক এ সচিব বলেন, তাহলে যেমন সংগ্রহ বাড়তো একদিকে, অন্যদিকে ‘নয়ছয়’ বন্ধ হতো মন্দ প্রতিষ্ঠানের। সুষ্ঠু ব্যবসার ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা বাড়তো। সরকার কী পরিপ্রেক্ষিতে ভ্যাট বাড়ালো? সরকার চালাতে অর্থের দরকার, এটা ঠিক। এজন্য দুটি উপায়। একটি মানুষের কাছে এভাবে শুল্ক-কর নেওয়া । অরেকটি ঋণ নেওয়া। সে ঋণ বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নিলে তারা টাকা ছাপিয়ে দেয়। তাতে আবার মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে যায়। যেটা গত সরকারের আমলে হয়েছিল।

‘এখন ট্যাক্স কিছুটা বাড়িয়ে টাকা ছাপিয়েও একটি সহনীয় পর্যায়ে রাখা যায়। এত ভ্যাট বাড়লে এ মূল্যস্ফীতির মধ্যে মানুষের কষ্ট অনেক বেশি হবে। আরেকদিকে এ সিদ্ধান্ত ‘মন্দের ভালো’। অর্থাৎ টাকা ছাপানো আর ভ্যাট বাড়ানো, দুটিই মন্দ।

তবে এরমধ্যে কিছু কিছু পণ্যে ভ্যাট বাড়ানো হচ্ছে, যেটা খুব কষ্টকর। যেমন ওষুধ। এটি জীবনরক্ষাকারী পণ্য। এটা বিবেচনা করা দরকার। আবার অনেক নিত্যপণ্য রয়েছে। দেশে এ উচ্চ মূল্যস্ফীতির মধ্যে আবার ভ্যাট বাড়ানো কতটা যুক্তিযুক্ত, সেটাও বারবার ভাবতে হবে, বলেন গোলাম রহমান।

এনএইচ/এমএইচআর/জেআইএম

Advertisement