আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে থাকছে না যখন-তখন দল পাল্টানোর সুযোগ। কোনো দলের প্রার্থী হতে হলে কমপক্ষে তিন বছর সেই দলের সদস্যপদ থাকতে হবে। আবার বর্তমান ক্ষমতার কাঠামোতে প্রধানমন্ত্রী যেমন সব ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু, এই সুযোগও রাখে হবে না ভবিষ্যতে। এই সংস্কার প্রস্তাবগুলোর পাশাপাশি জাতীয় সংসদ দ্বিকক্ষবিশিষ্ট করার সুপারিশও করতে যাচ্ছে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন।
Advertisement
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।
গত ৩ অক্টোবর সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজনের সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারকে প্রধান করে আট সদস্যের নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়।
নির্বাচন কমিশন জানায়, সংস্কার কমিশনের রূপরেখা বা রোডম্যাপ অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন।
Advertisement
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন প্রসঙ্গে গত ২১ নভেম্বর জাগো নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেন, সংস্কার কমিশন আমাদের কাজ অনেক সহজ করে দেবে। তাছাড়া সংস্কার কমিশন কাজ করছে। বদিউল আলম মজুমদার সাহেব ভালো কাজ করছেন। তারা আমাদের অনেক কাজ সহজ করে দিচ্ছেন বা এগিয়ে দিচ্ছেন। ফলে জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন সংস্কার কমিশন এক ধাপ এগিয়ে দেবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ৩০০ আসনের পরিবর্তে সংসদের নিম্নকক্ষে আসন থাকবে ৪০০টি। এর মধ্যে ১০০ আসন নারীদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। তবে নারীরা সরাসরি ভোটে বিজয়ী হয়ে আসবেন। আর উচ্চকক্ষে আসন থাকবে ১০৫টি। নির্বাচন হবে আনুপাতিক পদ্ধতিতে। সংসদের দুই কক্ষ মিলিয়ে মোট আসন হবে ৫০৫টি। সাংবিধানিক একনায়কতন্ত্র ঠেকাতে বা এক ব্যক্তির হাতে যাতে ক্ষমতা কুক্ষিগত হয়ে না যায়, সে জন্য ক্ষমতার ভারসাম্য আনতে বেশ কিছু সুপারিশ করবে এই কমিশন। পাশাপাশি বিদ্যমান সংবিধানের মূলনীতিতেও পরিবর্তন আনার সুপারিশ করা হবে।
নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কারে সংবিধান, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও), অন্যান্য নির্বাচনী আইনের পাশাপাশি নির্বাচনী আচরণবিধিতেও সুস্পষ্ট পরিবর্তন আনার সুপারিশ করছে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন।
ভোটার উপস্থিতির ন্যূনতম সীমারেখা রাখার পাশাপাশি ভোটের হার নির্ধারিত না হলে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনি এলাকার ভোট বাতিল করার ক্ষমতা ইসির হাতে রাখার সুপারিশ করা হচ্ছে। অন্যদিকে সিইসি ও ইসি নিয়োগে স্বচ্ছতা বিধান, ‘না’ ভোটের প্রচলন, প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকার, দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট সংসদ, গণভোট, তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা, বিদ্যমান নির্বাচন পদ্ধতির পাশাপাশি সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি, সংসদের আসনসংখ্যা বাড়ানো, নারী আসনে সরাসরি নির্বাচন, পাঁচ বছর পরপর দলের নিবন্ধন রিভিউ, তিন বছর দলে না থাকলে দলীয় মনোনয়ন নয়, নির্বাচনি প্রশাসন শক্তিশালী করাসহ ভোটের অনিয়ম রোধে একগুচ্ছ সুপারিশ থাকতে পারে সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে। সংস্কার বাস্তবায়নে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি সুপারিশ করবে কমিশন। প্রতিবেদনে ১০-১২টি অধ্যায়ের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় আইন, বিধি-বিধান যুক্ত থাকবে।
Advertisement
এমওএস/এএমএ