জাগ্রত অবস্থায় হেলান দিয়ে শুয়ে থাকলে অজু ভাঙে না। হেলান দিয়ে ঘুমালেও সব অবস্থায় অজু ভাঙে না। কেউ যদি আসন গেড়ে বা জমিনের সাথে ভালোভাবে লেগে বসে হেলান দিয়ে ঘুমায়, তাহলে তার অজু ভাঙে না। শোয়া বা ঘুমানো মূলত অজু ভঙ্গের কারণ নয়। অজু ভঙ্গের কারণ হলো বাতকর্ম বা পেছনের রাস্তা দিয়ে বায়ু বের হওয়া যা ঘুমের মধ্যে হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কেউ যদি হেলান দিয়ে বসে বা এমন যে কোনো অবস্থায় ঘুমায় যে ঘুমে অচেতন অবস্থায় তার বায়ু বের হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তাহলে অজু ভেঙ্গে যাবে।
Advertisement
আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, নামাজের সিজদায় ঘুমিয়ে গেলে অজু ভাঙে না, তবে চিৎ হয়ে শুয়ে পড়লে ভেঙে যাবে, কারণ চিৎ বা কাত হয়ে শুয়ে পড়লে শরীর ঢিলে হয়ে যায়। (যেহেতু এ অবস্থায় পেছনের রাস্তা দিয়ে বায়ু বের হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে) (সুনানে আবু দাউদ: ২০২)
যেসব কারণে অজু ভেঙে যায়
১. পেশাব ও পায়খানার রাস্তা দিয়ে পেশাব, পায়খানা, বাতাস, ক্রিমি ইত্যাদিসহ যে কোনো কিছু বের হলে অজু ভেঙে যায়।
Advertisement
২. শরীরে যে কোনো জায়গা থেকে রক্ত বা পুঁজ বের হয়ে গড়িয়ে পড়লে অজু ভেঙে যায়।
৩. খাবার, পানি, রক্ত বা পিতের পানি মুখ ভরে বমি হলে অজু ভেঙে যাবে। অল্প অল্প করে কয়েক বার যদি বমি হয় এবং সবগুলোর মিলিত পরিমাণ যদি মুখ ভরে কৃত বমির সমান হয়, তাহলেও অজু ভেঙে যায়।
৪. দাঁত বা মাড়ি থেকে অল্প রক্ত বের হলে অজু ভাঙবে না। কিন্তু যদি বেশি রক্ত বের হয়, থুথু ফেললে যদি দেখা যায় থুথুর চেয়ে রক্তের পরিমাণ বেশি, তাহলে অজু ভেঙে যায়।
৫. যৌনাঙ্গ থেকে মযী (অর্থাৎ যৌন উত্তেজনার সময় বীর্য বের হওয়ার আগে সাধারণত যা নির্গত হয়) বের হলে অজু ভেঙে যায়।
Advertisement
৬. নারীদের যৌনাঙ্গ থেকে ইস্তেহাযার রক্ত বের হলে অজু ভেঙে যায়। (হায়েয নেফাস ছাড়া কোনো অসুস্থতার কারণে নারীদের যৌনাঙ্গ থেকে রক্ত বের হলে তাকে ইস্তেহাযা বলা হয়।)
৭. নারীদের স্তন থেকে দুধ ছাড়া অন্য কিছু যেমন রক্ত, পূজ বা শরীরের রস বের হলে অজু ভেঙে যায়।
৮. নারীরা নিজেদের যৌনাঙ্গে আঙুল প্রবেশ করালে অজু ভেঙে যায়।
৯. পেছনের রাস্তা দিয়ে বাতাস বের হতে পারে এমনভাবে ঘুমালে, কিছুক্ষণ বেহুশ থাকলে বা উন্মাদ থাকলে অজু ভেঙে যায়।
১০. নামাজের মধ্যে অট্টহাসি হাসলে অজু ভেঙে যায়।
ওএফএফ/এমএস