তার ক্যারিয়ারের সাফল্যের অন্যতম ক্ষেত্র হলো বাংলাদেশ। ঢাকা ও চট্টগ্রামকে তিনি কখনোই ভুলতে পারবেন না। পারার কথাও না। কারণ, বাংলাদেশের এই দুই বড় শহর যে ইজাজ আহমেদের ক্যারিয়ারের সাথেই অঙ্গাঅঙ্গিভাবে লেপ্টে আছে!
Advertisement
তার টেস্ট ক্যারিয়ারের একমাত্র ডাবল সেঞ্চুরিটি ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে। সময়টা ১৯৯৯ সালের মার্চ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৯৯৯ সালের মার্চে এশিয়ান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে দারুণ (৫১৯ মিনিটে ৩৭২ মিনিটে ২৩ বাউন্ডারি ও এক ছক্কায় ২১১ রান) এই কৃতিত্বের দেখা পেয়েছিলেন তিনি।
ইজাজ আহমেদের ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম শতরানটিও বাংলাদেশের মাটিতে। ১৯৮৮ সালের ২৯ অক্টোবর চট্টগ্রামে এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে (১২৪ নট আউট)। খেলোয়াড়ী জীবন ছাড়া কোচ হিসেবেও বাংলাদেশের মাটি ইজাজের পয়োমন্ত ভেন্যু। ২০১৯ সালে বাংলাদেশের মাটিতে পাকিস্তানের যে দলটি এশিয়ান ইমার্জিং ক্রিকেট চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল, সেই দলের প্রশিক্ষক ছিলেন ইজাজ।
তবে তার ঢাকা লিগের অভিজ্ঞতা ততটা সুখের নয়। ৯০ দশকের শেষ দিকে ঢাকা মোহামেডানের হয়ে একবার ঢাকার ক্লাব ক্রিকেট খেলতে এসেছিলেন পাকিস্তান ক্রিকেটের সোনালী সময়ের দূরন্ত-দূর্বার উইলোবাজ ইজাজ।
Advertisement
তবে বাংলাদেশের মাটিতে বিপিএলের আগের ১০ আসরে আগে কখনোই কোন দলের কোচের দায়িত্ব পালন করেননি ইজাজ। এবারই প্রথম তাকে কোচ করে এনেছে দূর্বার রাজশাহী।
ঢাকায় এসে দলের সাথে গত দু’দিন কাজ করেছেন। আজ রোববার দুপুরে প্রথম মিডিয়ার সামনে কথা বলতে এসে বাংলাদেশে তার সেই সোনালী দিনগুলোর কথা স্মরণ করলেন ৯২’র বিশ্বকাপজয়ী পাকিস্তান স্কোয়াডের এই সদস্য।
‘দূর্বার রাজশাহীর কোচ হিসেবে নিজেকে সম্মানিত মনে করছি। এটা আমার পঞ্চম বা ষষ্ঠবার বাংলাদেশ সফর। টেস্টে আমার সর্বোচ্চ রানের ইনিংস ঢাকা স্টেডিয়ামে, ২০৯ (আসলে ২১১)। এখানে আমি বেশ পরিচিত ছিলাম। এরপর এখানে এশিয়া ইমার্জিং কাপে আসি, সেটাও আমরা জিতি।’
সেই ইমার্জিং কাপে বাংলাদেশ দলের হয়ে যারা খেলেছিলেন, সেই দলের নাজমুল হোসেন শান্ত, নাঈম শেখ, ইয়াসির আলী রাব্বি, জাকির হাসান, শেখ মাহদি, সৌম্য সরকার, আবু হায়দার রনি প্রমূখ ক্রিকেটার ছিলেন বাংলাদেশ দলে। ইজাজ জানিয়ে দিলেন, সেসব ক্রিকেটারের সাথে তার সখ্য আছে।
Advertisement
‘সেই ইমার্জিং কাপের সময়ে যেসব ক্রিকেটার বাংলাদেশ দলে খেলেছেন, তাদের সঙ্গে আমার সু-সম্পর্ক আছে। এবার আমি তাদের মিস করব। রাজশাহীর কর্ণধারকে বিশেষ ধন্যবাদ জানাই, তিনি আমাকে বেশ সাহায্য করেছেন। আমাকে বেশ কয়েকটি জায়গায় সুবিধা দিয়েছেন। তাই অন ফিল্ড এবং অফ দ্য ফিল্ডে সময়টা ভালো যাবে আশা করছি। এটাও আশা করছি যে আমরা ভালো খেলব এবং আমার কোচিং ও ক্রিকেটীয় অভিজ্ঞতা সবার সাথে শেয়ার করব।’
বিপিএলে আগে কখনো কোচিং না করালেও পাকিস্তান সুপার লিগ পিএসএলে কোচিং করানোর রেকর্ড আছে ইজাজের। ‘এর আগে আমি পিএসএলে কাজ করেছি। প্রথমবার বিপিএলে কাজ করছি এটা আমার জন্যে সম্মানের। আশা করব এটা খুবই রোমাঞ্চকর হবে। আশা করি পরের বছরও আসতে পারব। মালিকরা সম্ভবত পাঁচ বছরের জন্য ফ্র্যাঞ্চাইজি সাজিয়েছে। আশা করি বিপিএলে তারাও আরামদায়ক হবে।’
খেলোয়াড়ী আর কোচিং জীবনের অনেক সাফল্য তার বাংলাদেশে। দেখা যাক এবার বিপিএলে প্রথমবার কোচিং করাতে এসে কি করেন ইজাজ?
কাগজে কলমে তার দল দূর্বার রাজশাহী ততটা সমৃদ্ধ নয়। তারুণ্য নির্ভর দলের ক্যাপ্টেন এনামুল হক বিজয়। তবে কোচ ইজাজের ধারনা, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে খুব নামী-দামি আর তারকা ক্রিকেটারে সাজানো দল দরকার হয় না। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ২-৩ জন কার্যকর ও খুব ভাল পারফরমার থাকলেই চলে।
ইজাজের কথা, ‘এটা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট। এখানে কিছু ভালো ইনিংস বা ভালো বোলিংই আপনাকে জেতাবে। যে কোনো সিঙ্গেল প্লেয়ারই আপনাকে জেতাতে পারে। আমাদের দলটা বেশ তরুণ এবং ভালো। কিছু অভিজ্ঞ ক্রিকেটারও আমাদের দলে আছে যারা বাংলাদেশের হয়ে খেলেছে।’
যেমন ইয়াসির, তাসকিন, এনামুল হক। এছাড়া আকবর আলী, নতুন সেনসেশন জিসান আলম প্রমূখ তরুণরা এবার ইজাজের দল রাজশাহীতে। ইজাজ জানালেন, পাকিস্তানের মোহাম্মদ হারিসও রাজশাহীতে যোগ দিচ্ছেন। সে চলেও এসেছে। জিম্বাবুয়ে থেকে রায়ান বার্লও চলে এসেছে। আমাদের দলে অভিজ্ঞ এবং তারুণ্যের এক কম্বিনেশন আছে।’
এআরবি/আইএইচএস/