দেশজুড়ে

দখল-দূষণে অস্তিত্ব হারাচ্ছে নন্দকুজা

দখল-দূষণে অস্তিত্ব হারাচ্ছে নাটোরের গুরুদাসপুরের নন্দকুজা নদী। অপরিকল্পিতভাবে নদীর দুই তীরে গড়ে ওঠা বিভিন্ন স্থাপনা, ময়লা আবর্জনার স্তূপ ও পলি জমে নদী ভরাট হয়ে গেছে। ফলে বর্ষায় নেই নদীতে চিরচেনা স্রোত।

Advertisement

স্থানীয়রা জানায়, রাজশাহীর চারঘাটে বড়াল নদীকে সংকুচিত করে স্লুইসগেট নির্মাণ করার ফলে নন্দকুজা নদীতে পানিপ্রবাহ কমে গেছে। পলি জমে নন্দকুজাসহ উপজেলার আত্রাই-গুমানি নদীর দুই পাড় সংকুচিত হয়ে খালে পরিণত হওয়ার উপক্রম হয়েছে। ভরাট হয়ে গেছে নদীর পাড় ও তলদেশ। তাছাড়া ভূমিদস্যুরা নানা স্থাপনা নির্মাণ করে নদী হাইজ্যাক করে নিয়েছে। দুই পাড়ে গড়ে ওঠা শহর, হাট-বাজার, মিল, কলকারখানা, গবাদি খামারের অপচনীয় পলিথিন, প্লাস্টিক, ককসিটসহ বিষাক্ত সব বর্জ্য নদীতে ফেলে ভরাট করার প্রতিযোগিতা চলছে। নানা প্রতিবন্ধকতায় নন্দকুজা এখন অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে।

এদিকে নানামুখী দখলবাজ ও দূষণের আঘাতে ইতিহাস-ঐতিহ্য হারিয়ে মৃতপ্রায় এ নন্দকুজা নদী বাঁচাতে বাঁধা নিষেধ মানছে না কেউ। নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটি বাঁধা নিষেধ করলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কোনোরকম তদারকি নেই। হাট-বাজারের ইজারাদার ও আশপাশের মানুষ নদীকে মেরে ফেলার প্রতিযোগিতায় নেমেছেন।

নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটির সভাপতি মজিবুর রহমান মজনু ও সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক এ প্রতিবেদককে বলেন, নন্দকুজা নদী বাঁচলে বৃহৎ চলনবিল বাঁচবে, পরিবেশ বাঁচবে, জলবায়ু রক্ষা পাবে, জীবন-জীবিকা বাড়বে, জাতীয় আয় বাড়বে, প্রবৃদ্ধি বাড়বে, গড় আয়ু বাড়বে। নদীপাড়ে নির্মিত সব স্থাপনা উচ্ছেদ, বর্জ্য ফেলা বন্ধ, দখল-দূষণমুক্ত করে নদীর স্বাভাবিক পানিপ্রবাহের দাবিতে জাতীয় পর্যায়ের বেলা, বাপা, স্থানীয় চলনবিল রক্ষা, নদী রক্ষা, বড়াল রক্ষাসহ বিভিন্ন সংগঠন দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে।

Advertisement

গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সালমা আক্তার বলেন, পৌরসভার ময়লা নদীতে না ফেলে নির্দিষ্ট স্থানে ফেলার জন্য ডাম্পিং স্টেশন তৈরি করা হবে। এছাড়া নদীকে দখল-দূষণমুক্ত রাখতে শিগগির মাইকিং করে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা হবে।

নাটোর জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল আলম চৌধুরী বলেন, নন্দকুজাসহ জেলার সব নদী রক্ষার জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। নন্দকুজা রক্ষা করতে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নেবো।

রেজাউল করিম রেজা/আরএইচ/জেআইএম

Advertisement