বিদায় নেওয়া ২০২৪ সাল মোটেও ভালো যায়নি শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের। বছরজুড়ে শেয়ারবাজারে দরপতন হয়েছে। ফলে বড় ধরনের লোকসানের মধ্যে পড়েছেন বিনিয়োগকারী। এ পরিস্থিতিতে নতুন স্বপ্ন নিয়ে নতুন বছর ২০২৫ সাল শুরু হয়েছে।
Advertisement
নতুন বছরের প্রথম দিন বুধবার (১ জানুয়ারি) শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরুর চিত্র দেখে কিছুটা আশাবাদী হতেই পারেন বিনিয়োগকারীরা। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। ফলে মূল্য সূচকেও ঊর্ধ্বমুখীতার দেখা মিলেছে।
প্রথম আধাঘণ্টার লেনদেনে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৭০ শতাংশের বেশি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। প্রধান মূল্য সূচক বেড়েছে প্রায় ২০ পয়েন্ট। তবে লেনদেনে কিছুটা ধীরগতি দেখা যাচ্ছে।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান। ফলে মূল্য সূচকও ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। এ বাজারটিতেও লেনদেনে ধীরগতি দেখা যাচ্ছে।
Advertisement
নানা ঘটনা প্রবাহের মধ্য দিয়ে বিদায় নিয়েছে ২০২৪ সাল। বছরটির বেশিরভাগ সময় শেয়ারবাজারে দরপতন হয়েছে। এতে এক বছরে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের বাজার মূলধন ১ লাখ ১৮ হাজার ২৩০ কোটি টাকা কমে গেছে। আর প্রধান মূল্য সূচক কমেছে ১ হাজার ৩০ পয়েন্ট।
এ পরিস্থিতিতে বুধবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখীর দেখা মিলে। লেনদেনের প্রথম আধাঘণ্টাজুড়ে এই ধারা অব্যাহত থাকে।
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ১০টা ৫২ মিনিটে ডিএসইতে ২২৪ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৬০টির। আর ৬২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
ফলে ডিএসইর প্রধান সূচক বেড়েছে ১৯ পয়েন্ট। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক ২ পয়েন্ট বেড়েছে। এ সময় পর্যন্ত ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৮৭ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।
Advertisement
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ২৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হয়েছে ২৮ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৩ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ১৯টির, কমেছে ৯টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৫টির।
এদিকে, ২০২৪ সালের বেশিরভাগ সময় শেয়ারবাজারে দরপতন হওয়ায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই) ৯ দশমিক ৫০ পয়েন্টে নেমে গেছে। এ পরিস্থিতিকে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগ আকর্ষণীয় অবস্থা হিসেবে দেখছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে ডিএসইর পরিচালক মো. শাকিল রিজভী জাগো নিউজকে বলেন, শেয়ারবাজারের বিনিয়োগ ঝুঁকি নির্ণয়ের ক্ষেত্রে পিই একটি গুরুত্বপূর্ণ ইন্ডিকেটর। তবে পিই একমাত্র ইন্ডিকেটর নই। অনেক সময় পিই বেশি থাকলেও কোম্পানির গ্রোথ ভালো হলে তা বিনিয়োগের জন্য আকর্ষণীয় হতে পারে।
তিনি বলেন, সার্বিক শেয়ারবাজারের পিই ১০ এর নিচে নেমে গেলে, সেটাকে বিনিয়োগের জন্য নিরাপদ বিবেচনা করা যেতে পারে। অতিত ইতিসাহ দেখা গেছে বাজারের সার্বিক পিই ১০ এর নিচে বেশিদিন থাকেনি। পিই ১০ এর নিচে নামলে, তা আবার ১০ উপরে উঠে আসে। তবে বাজারের সার্বিক পিই দিয়ে সব কোম্পানিকে মূল্যায়ন করা যায় না। সুতরাং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীদের ভালো প্রতিষ্ঠান বাছাই করে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে কোম্পানির গ্রোথ, লভ্যাংশসহ সার্বিক অর্থিক অবস্থা ক্ষতিয়ে দেখে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।
ডিএসইর আর এক পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন জাগো নিউজকে বলেন, নিম্ন পিই নিঃসন্দেহে বাজারে বিনিয়োগের উপযুক্ত সময়। তবে পিই একমাত্রই ইন্ডিকেটর না। গত ১৫ বছরের দুঃশাসনের কারণে বাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থার সংকট সৃষ্টি হয়েছে। সেই আস্থা বর্তমান কমিশন এখনো ফিরিয়ে আনতে পারেনি। নিম্ন পিই বাজারে আস্থা সংকটের ইঙ্গিতও বহন করে।
এমএএস/এসএনআর