স্বাস্থ্য

চিকিৎসকদের একফোঁটা রক্ত ঝরলেই স্বাস্থ্যসেবা বন্ধের হুমকি

 

শাহবাগ মোড়ে চিকিৎসকদের দাবি আদায়ের আন্দোলনে একফোঁটা রক্ত ঝরলেই সারাদেশে চিকিৎসাসেবা বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ।

Advertisement

তিনি বলেন, একদিকে চিকিৎসকরা নিজেদের অধিকার আদায়ের আন্দোলন করছে, অন্যদিকে পুলিশ-প্রশাসন জলকামান আর এপিসি কার সাজিয়ে রেখেছে। আপনাদের মনে রাখা উচিত, ছাত্র-জনতা রক্ত দিয়ে ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে দেশছাড়া করেছে। এই ছাত্রজনতাকে ভয় দেখিয়ে কোনো লাভ নেই। একফোঁটা রক্ত ঝরলে সারাদেশে চিকিৎসাসেবা বন্ধ করে দিবে চিকিৎসকরা।

রোববার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুর ১টার দিকে চিকিৎসকদের আন্দোলনে একাত্মতা পোষণ করতে এসে তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন।

ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, আজকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কোথায়? নাগরিক কমিটি কোথায়? কেন তারা চিকিৎসকদের আন্দোলনে আসছে না? এই চিকিৎসকরাও তো দিনের পর দিন বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছে। তাহলে আপনারা কেন সরকারকে ৫০ হাজার টাকা ভাতা দিতে বাধ্য করছেন না? যদি আপনারা না আসেন, তাহলে আমরাই দাবি আদায় করে ছাড়ব।

Advertisement

ছাত্র-জনতা রক্ত দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ক্ষমতায় বসিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। তিনি বলেন, আজকের দিনে এই চিকিৎসকদের প্রাপ্য ভাতার দাবিতে আন্দোলন করতে হয়। এরচেয়ে লজ্জাজনক আর কি আছে? 

আরও পড়ুন

যন্ত্রাংশ খুলে নিয়ে গেছে দালাল চক্র, ৩ দিন ধরে বন্ধ ইসিজি সেবাখোলা ভোজ্যতেল বাজারজাত বন্ধ না হলে জনস্বাস্থ্য হুমকিতে পড়বে

এবি পার্টির এই নেতা আরও বলেন, প্রশাসনের প্রতিটি সেক্টরেই ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসররা রয়ে গেছে। তারাই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিভিন্ন আন্দোলন উস্কে দিচ্ছে। অবিলম্বে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। অন্যথায় ছাত্র-জনতাকে নিয়ে আমরা আবারও রাজপথে নামতে বাধ্য হব। আমরা জানি কীভাবে দাবি আদায় করতে হয়।

এর আগে এবি পার্টির আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওয়াহাব মিনার বলেন, ৫০ হাজার টাকা ভাতা এই চিকিৎসকদের দাবি নয়, অধিকার। এই অধিকার আদায়ে আমিও চিকিৎসকদের সঙ্গে রাজপথে আছি। এমনকি দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকব। 

Advertisement

তিনি বলেন, আগের আমলে আমরা ছিলাম রাজাকার, এখন হয়ে গেছি আওয়ামী লীগ। এগুলো তো আমরা বুঝি। চেয়ার পার্মানেন্ট না, পার্মানেন্ট হচ্ছে নৈতিকতা।

এবি পার্টির পক্ষ থেকে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট প্রশিক্ষণার্থী চিকিৎসকদের আন্দোলনে সমর্থন জানান অধ্যাপক ডা. আব্দুল ওয়াহাব মিনার।

এই সময় ডক্টরস মুভমেন্ট ফর জাস্টিসের (ডিএমজে) সাধারণ সম্পাদক ডা. নুরুন্নবী বলেন, দাবি পূরণে যত বিলম্ব হবে, আমরা ততো ঐক্যবদ্ধ হবো, শক্তি সঞ্চয় করব। আমাদেরকে চাপ দিয়ে লাভ নেই। তা না করে কীভাবে তাড়াতাড়ি প্রজ্ঞাপন দিবেন, সেটা নিয়ে ভাবেন। আমরা কারো দালাল নই।

প্রসঙ্গত, একই দাবিতে গত ২২ ডিসেম্বরও তারা শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছিলেন। ভাতা বাড়াতে ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিলেন ট্রেইনি চিকিৎসকরা। দাবি না মানলে দেশের প্রায় ১৩ হাজার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি চিকিৎসক একযোগে কর্মবিরতিতে যাবেন বলে ঘোষণা দেওয়া হয়। কিন্তু বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে প্রজ্ঞাপন না হওয়ায় ২২ ডিসেম্বর ট্রেইনি চিকিৎসকরা আন্দোলন শুরু করেন। তাদেরই একটি অংশ শাহবাগ অবরোধ করে। পরে সরকার ট্রেইনি চিকিৎসকদের ভাতা ২৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০ হাজার করার ঘোষণা দেয়। ট্রেইনি চিকিৎসকরা এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

এএএম/এএমএ