তথ্যপ্রযুক্তি

শেষ মুহূর্তে নগদ টাকায় বায়োমেট্রিক নিবন্ধন

বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধনে অঘোষিত চাঁদাবাজি চলছে। নিবন্ধনের শেষ সময় যত ঘনিয়ে আসছে বিভিন্ন মোবাইল ফোন অপারেটর ও এজেন্টদের বিরুদ্ধে সিম নিবন্ধন করতে কথিত ‘বখশিশ’ এর নামে গ্রাহকদের কাছ থেকে নগদ টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকার কর্তৃক ঘোষিত বিনামূল্যের বায়োমেট্রিক নিবন্ধনের জন্য বখশিশের শুরুটা ১০ টাকাতে হলেও শেষ সময় যত এগিয়ে আসছে টাকার অংক এলাকাভেদে ২০, ৩০, ৪০ ও ৫০ টাকা পর্যন্ত পৌঁছে যাচ্ছে। বিভিন্ন মোবাইল অপারেটর কোম্পানি থেকে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে নির্দিষ্ট সেন্টারে যাওয়ার তথ্য দেয়া হলেও অনেক পয়েন্টে গিয়ে গ্রাহকরা এজেন্টদের অনুপস্থিত পেয়ে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।রাজধানীর মিরপুরের গৃহবধূ সালমা খাতুন জানান, তিনি বাসার কাছের একটি মোবাইল ফোন অপারেটরের দোকানে সিম রেজিস্ট্রেশন করতে গেলে নাম, মোবাইল নম্বর, ফটোগ্রাফ ও জাতীয় পরিচয়পত্র হাতে নিয়ে ফরম পূরণ করে ২০ টাকা দাবি করেন। সরকার বিনামূল্যে সিম রেজিস্ট্রেশন করাচ্ছে, এ টাকা কিসের জানতে চাইলে ফরমপূরণকারী হেসে বলেন, ‘কষ্ট কইরা ফরম ফিলাপ করলাম, বখশিশ দেবেন না।’ বখশিশ নেয়ার পর তিনি বলেন, ‘আপা সিম রেজিস্ট্রেশন কইরা ভাল করতাছেন, নাইলে এই সিম ৪ হাজার টাকা খরচ কইরা কিনতে হইতো।’রাজধানীর লালবাগের বাসিন্দা সাধারণ চাকবিজীবী সাদেক মিয়া মঙ্গলবার ভরদুপুরে নীলক্ষেত মার্কেটে বাংলা লিংক এর এজেন্ট এর দোকানে যান। সেখানে গিয়ে তিনি একটি বোর্ডে মঙ্গলবার সিম রেজিস্ট্রেশন বন্ধ লেখা দেখতে পান। তিনি অভিযোগ করেন ইতিপূর্বেও তিনি দুদিন সেখান থেকে ফেরত গেছেন।একই অপারেটরের সিম নিবন্ধনের জন্য সকাল ১০টার পর হাতিরপুলের নাহার প্লাজা ও শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটে গেলে জানানো হয় দুপুর ৩টার আগে সিম রেজিস্ট্রেশন সম্ভব না।রাজধানীর বাড্ডা এলাকার হল্যান্ড সেন্টারের নিচে বায়োমেন্ট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন করতে গিয়ে ২০ টাকা দেন ব্যবসায়ী সোহাগ। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘টাকা যাক সময়তো বাঁচলো। আর সিম বন্ধ হলে বিপদে পড়তে হবে।’এদিকে একই হোসেন মার্কেটের একজন এজেন্ট নাম প্রকাশ না করার শর্তে এদিন সন্ধ্যায় জানান, আমরাও বিপাকে পড়েছি। এই মুহূর্তে ফ্লেক্সিলোড করলে টাকা পেতাম। তবে বিনা পয়সায় নিবন্ধন করে বরং আমাদের লোকসানই হচ্ছে।এ প্রসঙ্গে রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএর শিক্ষার্থী ফারিন ক্ষোভ প্রকাশ করে জাগো নিউজকে বলেন, টাকা দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হচ্ছে। তাই ভাবছি বায়োমেট্রিক রেজিস্ট্রেশনই করবো না। সিম বন্ধ হলে হোক।বিটিআরসির চেয়ারম্যান ড. শাজাহান মাহমুদ এ প্রসঙ্গে জাগো নিউজকে বলেন, টাকা নিয়ে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন অযৌক্তিক। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে আমাদের জানান আমরা সংশ্লিষ্ট অপারেটর ও তাদের এজেন্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।এমইউ/আরএম/এসএইচএস/আরআইপি

Advertisement