কৃষি ও প্রকৃতি

নড়াইলে সূর্যমুখী চাষে লাখ টাকা ঘরে তোলার আশা

মাঠজুড়ে সবুজের মাঝে হলুদ সূর্যমুখীর সমাহার। এমন দৃশ্য এখন নড়াইলের মাঠগুলোয়। যা দেখতে এখন খামারগুলোয় ভিড়। এ বছরই প্রথম তেল সমৃদ্ধ এ ফুলের চাষ হচ্ছে। ভোজ্যতেলের সংকট মেটাতে কম খরচে ও কম কষ্টে সরকারি প্রণোদনায় দামি এ তেল বীজের চাষ করতে পেরে ভীষণ খুশি কৃষকরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কয়েকদিন পরই একরে ১০ হাজার টাকা খরচ করে লাখ টাকা ঘরে তোলার আশা করছেন তারা।

Advertisement

কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ জানায়, ভোজ্যতেলের সংকট কাটাতে কৃষি বিভাগের প্রণোদনা ও উৎসাহে এবারই প্রথম ৯৮ হেক্টর অর্থাৎ ৭শ বিঘা জমিতে সূর্যমুখীর আবাদ হয়েছে। সরকার এ চাষে কৃষককে উৎসাহ জোগাতে একরে বিনা মূল্যে ৩ কেজি বীজ ও ৬০ কেজি ঢ্যাপ ও পটাশ দিয়েছেন।

আরও পড়ুন: ফরিদপুরে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে সূর্যমুখীর হাসি

সদরের বাঁশগ্রাম ইউনিয়নের বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের শহিদুল শেখ, সুরঞ্জন বিশ্বাস ও মোরাদ মোল্যা একসঙ্গে ১ একর ১০ শতাংশ জমিতে সূর্যমুখী চাষ করেছেন। তারা বলেন, ‘খুব ভালো ফলন হইছে। কীটনাশক ব্যবহার করা লাগেনি। খরচ বা কষ্টও কম। ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা সব সময় খোঁজ নিচ্ছেন। তবে প্রায় প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে দর্শনার্থীরা বাগান দেখতি আইসে কিছু কিছু ফুল নষ্ট করছে।’

Advertisement

গোপালপুর গ্রামের কৃষক সোহেল মোল্যা জানান, তিনি এবারই প্রথম মিশ্র চাষ হিসেবে ৪টি জমিতে সূর্যমুখী চাষ করেছেন। তিনি ধনিয়া, করলা, সরিষা ও গমের মধ্যে পিলি করে সূর্যমুখী চাষ করেছেন।

ভদ্রবিলা গ্রামের ওবায়দুর মোল্যা জানান, এবারই প্রথম ডিসেম্বর মাসে ২৫ শতাংশ জমিতে সূর্যমুখী চাষ করেছেন। এটি ওঠার পর পাট লাগাবেন। শেষে রোপা আমনের চাষ করবেন। আগামীতে আবার সূর্যমুখীর চাষ করবেন।

আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে সূর্যমুখী চাষে লাভের আশা

বাঁশগ্রাম ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান জাগো নিউজকে বলেন, ‘ফলন ভালো হলে একরে প্রায় ১২-১৩শ কেজি সূর্যমুখীর বীজ সংগ্রহ করা যাবে। এ বীজ থেকে ৩৫-৪০ ভাগ তেল উৎপাদন করা যাবে। তেলের পাশাপাশি এ খৈল পাখি, মাছ ও গবাদিপশুর খাদ্য হিসেবে বিক্রি করে বাড়তি আয় সম্ভব।’

Advertisement

নড়াইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক দীপক কুমার রায় জাগো নিউজকে বলেন, ‘ভোজ্যতেলের সংকট কমাতে সরকারি প্রণোদনায় নড়াইলে এবারই প্রথম সূর্যমুখী চাষ হয়েছে। সবই উন্নত হাইসন-৩৩ জাতের। আশা করি প্রথম বছরেই বাম্পার ফলন হবে। আগামীতে চাষ কয়েক গুণ বাড়বে।’

এসএমএইচকে/এসইউ/এমএস