লেখাপড়ার খুব নিজস্ব এক ভুবনমায়ায় ডুবে যেতে যেতে একসময় রূপকথার গল্পের মতো শুনে ফেললাম বাংলাদেশের ঢাকায় মাসব্যাপী একুশে বইমেলার কথা। তারপর ১৯৮৮ সনে আমার সঙ্গে বন্ধুত্ব হলো বাংলাদেশের মুজিব মেহদী, হেনরী স্বপন, পাবলো শাহীদের সঙ্গে।এরপর নিয়মিত পত্রিকা ও চিঠি বিনিময়। তখন থেকেই ভেতরে এক তীব্র ছটফটানি টের পেতাম। কবে যে যাবো আমার স্বপ্নের একুশের বইমেলায়। ভাষাকর্মীর সামান্য এই কবিজন্ম স্বার্থক হবে!অবশেষে, ২০১১ সালের ৩০ ডিসেম্বর আমার সুযোগ হলো বাংলাদেশে যাওয়ার। ৩০ ডিসেম্বর ও ৩ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে লোকমেলায় সেমিনারের আমন্ত্রণ ছিল আমার।২ ফেব্রুয়ারি ২০১২ তারিখে আমি ঢুকে পড়ি বাংলা একাডেমি চত্বরে বইমেলার বহুবর্ণ এক পরিসরের ভেতরে। সঙ্গী ছিলেন আমার বাংলাদেশের তরুণ বন্ধুরা। বিধান সাহা, মিঠুন রকসাম, বচন নকরেক, পাবলো শাহী প্রমুখ। বইমেলায় আড্ডা হলো আব্বাস উদ্দিনের ছেলে লোকসঙ্গীত গবেষক মুস্তাফা জামান আব্বাসী, তপন বাগচী, ফকির আলমগীর, আবু বকর সিদ্দিক, রহমান রাজু, ওবায়েদ আকাশসহ আরো কতো ভাষাকর্মীদের সঙ্গে। লিটলম্যাগের তরুণরা প্রাণ ভরিয়ে দিয়েছেন গানে ও কবিতা কথায়।এভাবে তিনদিন আমি তুমুল চষে বেড়িয়েছি বাংলাদেশের অমর একুশে বইমেলা প্রান্তর। পাবলোর সঙ্গে ঘুরে বেড়িয়েছি শাহবাগের বইয়ের দোকানগুলো। অমর একুশে বইমেলা আমার জীবনের অনবদ্য এক অর্জন, সেরা প্রাপ্তি সামান্য জীবনের!আর আজ ভাবতে ভালো লাগছে, শিহরণ বোধ করছি এই ভেবে যে সানাউল্লাহ সাগরের ‘আড্ডা’র টেবিলে একুশে বইমেলায় বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত আমার কবিতার বই ‘জাহাজডুবি’ পাওয়া যাচ্ছে। আমিও আসবো আবার একুশের বহুমাত্রিক বইয়ের মেলায়, অনন্ত হাঁসের মতো।লেখক: পশ্চিমবঙ্গের কবিএসইউ/এমজেড/পিআর
Advertisement