সাহিত্য

মুক্তিযুদ্ধের দুটি কবিতা

আবু আফজাল সালেহ

Advertisement

একাত্তর পাতা

একাত্তর পাতা খোলো।

অধ্যায় তিন, অনুচ্ছেদ সাতহ্যামিলিয়নের তর্জনী ও শব্দজাদু,অনুচ্ছেদ পঁচিশে পৈচাশিক হামলা হায়েনাদের,ছাব্বিশে তীব্র প্রতিরোধের গল্প।অধ্যায় চার, পাঁচ, ছয়, সাত, আট...যুবতির চিৎকার, বিধবার কান্নাঘরপালানোদের বাবা-মায়ের উৎকণ্ঠাবাড়িথাকাদের কান্না, বারুদের গন্ধঅসংখ্য খুলি, সেমিজের রক্ত, আগুন।

Advertisement

যশোর খুলনা চট্টগ্রাম সিলেট চুয়াডাঙ্গায় প্রতিরোধঅনুচ্ছেদ নয় দশ এগারোতে।

তীব্র প্রতিরোধ বাঙালির বীরত্বগাথাঅধ্যায় বারো।অনুচ্ছেদ ষোলোয় লাল-সবুজের পতাকাপতপত করে ওড়ে সমগ্র বাংলাদেশে,বন্দুকের নলের মাথায় বারুদের গন্ধ নেইপ্রজাপতি উড়ে এসে বসে।

কাহিনি এবার শুধু আমাদেরই।

২.মাথাভাঙ্গা যেন ফোরাত

Advertisement

দশ এপ্রিল অস্থায়ী সরকারের শপথতাজউদ্দীনের ইঙ্গিত,বর্বর-পাকিদের নারকীয় উৎসবগোলাবর্ষণ, বোমাবর্ষণ, বিমান আক্রমণ চুয়াডাঙ্গায়।

কোকিল, ঘুঘুর চোখে-মুখে বিষণ্নতা,টগবগে রক্তে ঝাঁজ বেড়ে যায় তরুণেরমুমুক্ষের লক্ষ্য রূপ নেয় প্রতিরোধেরনিরস্ত্রদের অস্ত্র হয় জয়ের তীব্র আকাঙ্ক্ষা,দেওয়ালে পিঠ-ঠেকাদের অস্ত্র হয় একতা, দেশপ্রেম।

আলমডাঙ্গার লালব্রিজনাটুদার আটকবর, ধোপাখালীর গণকবরঅক্সি-অ্যাসিটিলিনের মতো জ্বলে মদনা—বাংলাদেশঘর পোড়ায়—আশ্রয় পোড়ায় মানুষ ও প্রাণীরযেমন পোড়ানো হয় জেরুজালেম কাশ্মির সিরিয়ায়।

দ্রুম-দ্রুম দ্রুম...দিগ্বিদিক ছোটে নিরীহ-মানুষ—মেয়েমানুষ, শিশু, যুবা, অন্তঃসত্ত্বাচুয়াডাঙ্গায়, বাংলাদেশে।অত্যাচারের চিহ্ন, যুবতীর রক্তমাখা শরীরমাথার খুলি, ছেঁড়া শার্ট, বিধবার কান্না...বাতাসে আগুন, ধোঁয়া, বারুদের গন্ধশিমুল ও কৃষ্ণচূড়ায় নীলআগুনতাজা রক্ত, সেমিজের রক্ত, বারুদের রক্ত—রক্তগঙ্গামাথাভাঙ্গা যেন কারবালার ফোরাত।

নাটুদহ ধোপাখালী চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গা ডিঙ্গেদহ শরৎগঞ্জ...না-না, সমগ্র চুয়াডাঙ্গানা-না, সমগ্র বাংলাদেশই বিরাট বধ্যভূমি।

এসইউ/এএসএম