বিশেষ প্রতিবেদন

হকার-মুদি-পানের দোকানে বিক্রি হচ্ছে মানুষ-মুরগী-গরুর ওষুধ

ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের অনুমোদিত বৈধ ফার্মেসি ছাড়া যেকোনো ধরনের ওষুধ বিক্রি সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ হলেও দেশের বাজারে পানের দোকান, মুদি দোকান, হকার, ফুটপাত ও গাড়িতে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ অবাধে বিক্রি হচ্ছে। বিভিন্ন  ধরনের ওষুধের তালিকায় মানুষের চিকিৎসায় ব্যবহৃত প্যারাসিটামল, সেকলো, রেনিটিডিন, টেস্টি স্যালাইন, জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি, যৌন উত্তেজক ও শক্তিবর্ধক বড়ি ও সিরাপের পাশাপাশি মুরগী ও গরুর ওষুধও রয়েছে। রাজধানীসহ সারাদেশে বিশেষত মাঠ পর্যায়ে এ ধরনের ওষুধ বিক্রির পরিমাণ ক্রমেই বাড়ছে। বিগত দিনগুলোতে এসব শুধুমাত্র অভিযোগ আকারে শোনা গেলেও সম্প্রতি ওষুধের অপব্যবহার রোধে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের দৃঢ় অবস্থান ও অভিযানের ফলে হাতেনাতে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের একটি দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, গত সপ্তাহে দেশের গোপালগঞ্জ, চট্টগ্রাম, সিরাজগঞ্জ, নাটোর টাঙ্গাইল, পিরোজপুর ও যশোর জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৬৬টি মুদি, পান, হকার, ফুটপাতে অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন ধরনের- এলোপ্যাথিক, ইউনানি ও হারবাল ওষুধ জব্দের পাশাপাশি আর্থিক জরিমানা আদায় করেন তারা।সূত্র জানায়, ২০ ডিসেম্বর গোপালগঞ্জ জেলায় ৬টি হকার ও ২৭টি মুদি/পানের দোকান পরিদর্শন করে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের কর্মকর্তারা জামবাক, দন্তশেফা, টেস্টি স্যালাইন, হারবাল/কবিরাজি ওষুধ জব্দ করেন।২১ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম জেলায় মোবাইল কোর্টের অভিযানে ফুটপাতের ৯টি দোকান,৬টি পানের দোকান ও গাড়িতে করে ওষুধ বিক্রির সময় ১০ কার্টন অনুমোদনহীন ওষুধ জব্দ করা হয় একই দিন সিরাজগঞ্জে ১২টি মুদিও দোকান পরিদর্শন করে মুরগীর ওষুধ, টেস্টি স্যালাইন ও মলম জব্দ করা হয়।  ২২ ডিসেম্বর নাটোর, সিরাজগঞ্জ, গোপালগঞ্জ, টাংগাইল ও পিরোজপুরে পৃথক অভিযানে ৩১টি মুদি দোকান ও হকারের দোকানে পৃথক অভিযান চালিয়ে গরুর ওষুধ, সেকলো, রেনিটিডিন, সেনেগ্রা (ভারতীয় অনুমোদনহীন ওষুধ), জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি, প্যারাসিটামল, গ্যাষ্ট্রিকের ওষুধ, জামবাক, ভেষজ দাঁতের মাজন, জিনসিন সিরাপ ও মুরগির ওষুধ জব্দ  করা হয়। ২৩ ডিসেম্বর মোবাইল কোর্ট যশোরে অভিযান চালিয়ে তিনজন হকারের কাছ থেকে অনুমোদনহীন ওষুধ জব্দ করে। জানা গেছে, ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর নিয়মিতভাবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে বিভিন্ন অভিযানের ব্যাপারে অবহিত করতে চিঠি পাঠাচ্ছেন। ২৭ ডিসেম্বর অধিদফতরের পরিচালক মেজর জেনারেল মোস্তাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে মুদি দোকান পানের দোকান ও হকারদের বিরুদ্ধে গৃহীত ব্যবস্থা সম্পর্কে যুগ্মসচিব (জনস্বাস্থ্য) কে অবহিত করেন।এ সম্পর্কে জানতে চাইলে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের ওষুধ তত্ত্বাবধায়ক এসইএম সাবরিনা ইয়াসমিন জানান, ওষুধের অপব্যবহাররোধে শুধুমাত্র এ জেলাগুলোতেই নয় সারাদেশের তৃণমূল পর্যায়ে মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হচ্ছে। অভিযানের ফলে মুদি দোকান, পানের দোকান, ফুটপাতের হকারদের মাধ্যমে ওষুুধ বিক্রির পরিমাণ আগের তুলনায় কমেছে বলেও জানান তিনি।এমইউ/এসএইচএস/পিআর

Advertisement