কৃষি ও প্রকৃতি

সরিষা থেকে ৬০ মেট্রিক টন মধু সংগ্রহ

সরিষা ক্ষেতে মৌমাছির বাক্স বসালে সরিষার ফলন কম হয়-এমন ধারণা থেকে সরিষা চাষিরা তাদের ক্ষেতের ধারে-কাছে যেতে দিতেন না ভ্রাম্যমাণ মৌচাষিদের। এক দশকের এ ধারণা পাল্টে দিয়ে চলনবিলসহ পাবনা অঞ্চলের সরিষা ক্ষেত এখন মধু উৎপাদনের অন্যতম উৎসে পরিণত হয়েছে। এই উৎস কাজে লাগিয়ে এবার প্রায় ৬০ মেট্রিক টন মধু সংগ্রহ করা যাবে।

Advertisement

পাবনার চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া, ফরিদপুর, নাটোরের সিংড়া, গুরুদাসপুর, সিরাজগঞ্জের তাড়াশসহ ৩ জেলার ৮টি উপজেলা নিয়ে চলনবিলের বিস্তীর্ণ এলাকা। শীত মৌসুমে মাঠজুড়ে সরিষা ফুলের সমারোহ। এসব সরিষা খেতের পাশেই মৌচাষের বাক্স বসিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ মৌচাষিরা। বিভিন্ন জেলা থেকে আসা মৌচাষিরা এভাবে মধু সংগ্রহ করছেন। মধু চাষের মাধ্যমে সরিষার ফলনও ভালো হবে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা।

জানা যায়, সরিষার ফুল থেকে প্রতি বছর মধু সংগ্রহ করে লাভবান হন ভ্রাম্যমাণ মৌচাষিরা। এবারও তারা এসেছেন চলনবিলে। এখন মধু সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন। দেড় হাজার মেট্টিক টন মধু সংগ্রহের লক্ষ্যে ৭ শতাধিক মৌচাষি এখন বাক্স নিয়ে চলনবিলের মাঠে অবস্থান করছেন। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এসে অস্থায়ী মধুর খামার গড়ে তুলেছেন। গোটা চলনবিলে ৫০ হাজারের বেশি মৌমাছির বাক্স স্থাপন করা হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক কৃষিবিদ আজাহার আলী জানান, পাবনা অঞ্চলের সরিষা থেকে অন্তত ৬০ মেট্রিক টন মধু উৎপাদন করা যাবে। পাশাপাশি মৌমাছি ফুলে ফুলে বেশি বসার কারণে পরাগায়ণ বেশি হয়। এতে ফলনও বেশি হয়। মৌচাষের কারণে ২০-৩০ ভাগ ফলন বেশি পাওয়া সম্ভব।

Advertisement

মৌচাষি বকুল হোসেন জানান, বিপুল পরিমাণ মধু উৎপাদন হলেও বাজারজাতকরণে সমস্যা রয়েছে। তাই তারা সুষ্ঠু বাজারজাতকরণের অভাবে আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।

উত্তরবঙ্গ মৌচাষি সমিতির সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, আধুনিক প্রশিক্ষণের অভাবে মৌচাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাছাড়া বিজ্ঞানসম্মত মৌ বাক্সেরও অভাব রয়েছে। মৌচাষিরা এবারও চলনবিল থেকে কয়েক কোটি টাকার মধু সংগ্রহ করবেন। মধু বাজারজাতকরণে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

একে জামান/এসইউ/এমকেএইচ

Advertisement